ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল আরও ১০ পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ও তিতুদহ ইউনিয়নের ১০টি ভূমি-গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের চাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা আনুষ্ঠানিকভাবে ১০টি পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ঘর বিতরণের পাশাপাশি ২৬টি জেলার সব উপজেলাসহ আরও ৭০টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। নতুন এই ঘোষণার ফলে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা ৫৮টিতে পৌঁছাল এবং সারা দেশে উপজেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৪টিতে। এদিন নতুন করে ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের ফ্ল্যাগশিপ আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে এক হাজার ২৮২টি, কক্সবাজারে ২৬১টি এবং ভোলায় এক হাজার ২৩৪টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। এর আগে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী প্রথম পর্যায়ে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৫৯ হাজার ১৩৩টি এবং চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করেন।

প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতক জমিতে একটি করে আধা-পাকা ঘর প্রদান করা হয়, যার মালিকানা যৌথভাবে স্ত্রী-স্বামী উভয়কে দেয়া হয়। প্রতিটি বাড়িতে দুটি শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা রয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রথম চালু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘরবাড়ি ও জমির মালিকানা দিতে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এর ফলে আনুমানিক ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন ব্যক্তি উপকৃত হয়েছে। সব আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ৫৩টি পরিবারের ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জনসহ ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৪টি পরিবারের ৪৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত) রিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিজানুর রহমান, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক শারমিন আক্তার, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার শেখ মো. রাসেলের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাজ্জাদ, জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সাইফুল ইসলাম সাইফ, আলুকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

এদিন চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে ৬টি এবং আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামে ৪ জন উপকারভোগীর জমি ও গৃহের কবুলিয়ত এবং নামজারি কপি তুলে দেওয়া হবে। এরা হলো- আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামের স্বামী মফিজুর মল্লিক ও তার স্ত্রী কবিতা খাতুন, একই গ্রামের স্বামী জাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী লিপি খাতুন, ওই গ্রামের কাওছার আলী ও তার স্ত্রী তামান্না খাতুন মেঘনা, স্বামী কামরুজ্জামান কল্লোল ও তার স্ত্রী সুরভী খাতুন।

তিতুদহ ইউনিয়নের হুলিয়ামারী গ্রামের মোফাজ্জেল মন্ডলের মেয়ে সালেহা বেগম, তিতুদহ গ্রামের স্বামী আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী পারভীনা খাতুন, একই গ্রামের স্বামী ইদবার আলী ও তার স্ত্রী নারগিস বেগম, বাদল উদ্দীনের মেয়ে ছারু খাতুন, স্বামী আনোয়ার শেখ ও তার স্ত্রী রশিনা বেগম এবং স্বামী রুহজেল হোসেন ও তার স্ত্রী আরজিনা খাতুন। উল্লেখ্য, ১ম থেকে ৪র্থ পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২০১টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেল আরও ১০ পরিবার

আপলোড টাইম : ০৮:৩৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ও তিতুদহ ইউনিয়নের ১০টি ভূমি-গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের চাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা আনুষ্ঠানিকভাবে ১০টি পরিবারের সদস্যদের হাতে ঘরের চাবি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হস্তান্তর করেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের কাছে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ঘর বিতরণের পাশাপাশি ২৬টি জেলার সব উপজেলাসহ আরও ৭০টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। নতুন এই ঘোষণার ফলে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা ৫৮টিতে পৌঁছাল এবং সারা দেশে উপজেলার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৪টিতে। এদিন নতুন করে ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের ফ্ল্যাগশিপ আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় এসব ঘর নির্মাণ করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে এক হাজার ২৮২টি, কক্সবাজারে ২৬১টি এবং ভোলায় এক হাজার ২৩৪টি বাড়ি হস্তান্তর করেন। এর আগে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী প্রথম পর্যায়ে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় পর্যায়ে ৫৯ হাজার ১৩৩টি এবং চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি ঘর হস্তান্তর করেন।

প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতক জমিতে একটি করে আধা-পাকা ঘর প্রদান করা হয়, যার মালিকানা যৌথভাবে স্ত্রী-স্বামী উভয়কে দেয়া হয়। প্রতিটি বাড়িতে দুটি শয়নকক্ষ, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট ও একটি বারান্দা রয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের জন্য পুনর্বাসন কর্মসূচি প্রথম চালু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘরবাড়ি ও জমির মালিকানা দিতে ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মোট ৭ লাখ ৭১ হাজার ৩০১টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। এর ফলে আনুমানিক ৩৮ লাখ ৫৬ হাজার ৫০৫ জন ব্যক্তি উপকৃত হয়েছে। সব আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ৫৩টি পরিবারের ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জনসহ ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯০৪টি পরিবারের ৪৩ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত) রিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিজানুর রহমান, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক শারমিন আক্তার, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার শেখ মো. রাসেলের সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাজ্জাদ, জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সাইফুল ইসলাম সাইফ, আলুকদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

এদিন চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে ৬টি এবং আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামে ৪ জন উপকারভোগীর জমি ও গৃহের কবুলিয়ত এবং নামজারি কপি তুলে দেওয়া হবে। এরা হলো- আলুকদিয়া ইউনিয়নের ঝোড়াঘাটা গ্রামের স্বামী মফিজুর মল্লিক ও তার স্ত্রী কবিতা খাতুন, একই গ্রামের স্বামী জাহিদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী লিপি খাতুন, ওই গ্রামের কাওছার আলী ও তার স্ত্রী তামান্না খাতুন মেঘনা, স্বামী কামরুজ্জামান কল্লোল ও তার স্ত্রী সুরভী খাতুন।

তিতুদহ ইউনিয়নের হুলিয়ামারী গ্রামের মোফাজ্জেল মন্ডলের মেয়ে সালেহা বেগম, তিতুদহ গ্রামের স্বামী আলমগীর হোসেন ও তার স্ত্রী পারভীনা খাতুন, একই গ্রামের স্বামী ইদবার আলী ও তার স্ত্রী নারগিস বেগম, বাদল উদ্দীনের মেয়ে ছারু খাতুন, স্বামী আনোয়ার শেখ ও তার স্ত্রী রশিনা বেগম এবং স্বামী রুহজেল হোসেন ও তার স্ত্রী আরজিনা খাতুন। উল্লেখ্য, ১ম থেকে ৪র্থ পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ২০১টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন।