ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কার্পাসডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় নানা আয়োজনে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

কবির বলিষ্ঠ লেখনী মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় পৃথকভাবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে কার্পাসডাঙ্গায় দুই দিনব্যাপী নজরুল উৎসবের আয়োজন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। আর কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আলমডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ ও গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা করা হয়। এ বছর জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল’।

দামুড়হুদা:
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় দুই দিনব্যাপী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন এর আয়োজন করে। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও র‌্যালি করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি আলী আজগার টগর বলেন, মানুষের পক্ষে মানবতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়া বিরল মানুষ, ধর্মের নামে অধর্ম, বজ্জাতির প্রতিবাদ করে গেছেন নির্ভয়ে। তিনি বিপ্লবী বীর, মানবতায়, প্রেমে, সাম্যে, বাঙালির সব আবেগ, অনুভূতিতে জড়িয়ে থাকা বিদ্রোহী কবি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। আজকের এই দিনে ১৮৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি কবি। তিনি অসংখ্য উপন্যাস, গল্প, নাটক লিখলেও তিনি বেশি পরিচিতি ছিলেন কবি হিসেবে। তার প্রত্যায়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছে। নজরুল সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক।

তিনি আরও বলেন, কবি নজরুলের লেখনীতে ফুটে ওঠে আর্ত পীড়িত, ব্যথিত ও উপেক্ষিত মানব মনের কথা তার আজীবন সাধনা ছিল সমাজের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবির সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন।

আলোচনা সভার সভাপতি ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম মাত্র ৯ বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে অভাবের সংসারে হাল ধরতে স্থানীয় মক্তবে মুয়াজ্জিনের কাজ থেকে শুরু করে রুটির দোকানে কাজ পর্যন্ত করেছেন। তিনি এত কিছু করার পরও তার যে সাধনা ছিল, আর্ত পীড়িত মানুষের কথা, অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষন ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার কবিতা ও গান ছিল প্রেরণার উৎস। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম একাধারে সঙ্গীতঙ্গ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, বাদ্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার ও অভিনেতা। তার কবিতা ও সাহিত্যে বাংলায় নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা। বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুন্সি আবু সাইফ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান ও সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বিশ্বাস, সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্টো, আটচালা ঘর মালিক মি. প্রকৃতি বিশ্বাস বকুল ও কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে সন্ধ্যা ৭টায় নাটক ‘নীলকুঠি’ অনুষ্ঠিত হয়।

আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ ও গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় কবি আলাউদ্দিন আহমেদ পাঠাগারের পরিচালক কবি গোলাম রহমানের পরিচালনায় মুক্তমনা ফাউন্ডেশনের অফিসে এর আয়োজন করা হয়। সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি ওমর আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি সাহিত্যিক হামিদুল ইসলাম আজম, গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি জামিরুল ইসলাম, সম্পাদক হাবিবুর রহমান মজুমদার ও সাহিত্য পরিষদের সাংগাঠনিক সম্পাদক কবি গোলাম রহমান চৌধুরী।

সভার শুরুতে কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। কবি ওমর আলী মাস্টার বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির চিরায়ত মনন ও চেতনার কবি। বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল প্রেম-দ্রোহ ও সাম্যের কবি হিসেবে পরিচিত। তাঁর কালজয়ী লেখনিতে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে মন্ত্র শাণিত ছিল। কুসংষ্কার, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কবি মানবতার জয়গান গেয়েছেন। ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কলম ধরে তিনি বাঙালির জাতীয়তা বোধের জাগরণ ঘটিয়েছিলেন।

কবি হামিদুল ইসলাম আজম বলেন, বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কার্পাসডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় নানা আয়োজনে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন

কবির বলিষ্ঠ লেখনী মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছে

আপলোড টাইম : ০৮:৪০:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গায় পৃথকভাবে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে কার্পাসডাঙ্গায় দুই দিনব্যাপী নজরুল উৎসবের আয়োজন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। আর কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আলমডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ ও গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা করা হয়। এ বছর জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল’।

দামুড়হুদা:
দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় দুই দিনব্যাপী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রাণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন এর আয়োজন করে। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে নয়টায় কার্পাসডাঙ্গায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও র‌্যালি করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি আলী আজগার টগর বলেন, মানুষের পক্ষে মানবতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়া বিরল মানুষ, ধর্মের নামে অধর্ম, বজ্জাতির প্রতিবাদ করে গেছেন নির্ভয়ে। তিনি বিপ্লবী বীর, মানবতায়, প্রেমে, সাম্যে, বাঙালির সব আবেগ, অনুভূতিতে জড়িয়ে থাকা বিদ্রোহী কবি আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। আজকের এই দিনে ১৮৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বাঙালি কবি। তিনি অসংখ্য উপন্যাস, গল্প, নাটক লিখলেও তিনি বেশি পরিচিতি ছিলেন কবি হিসেবে। তার প্রত্যায়ী ও বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত ও উদ্দীপ্ত করেছে। নজরুল সাহিত্যের বিচিত্রমুখী সৃষ্টিশীলতা আমাদের জাতীয় জীবনে এখনো প্রাসঙ্গিক।

তিনি আরও বলেন, কবি নজরুলের লেখনীতে ফুটে ওঠে আর্ত পীড়িত, ব্যথিত ও উপেক্ষিত মানব মনের কথা তার আজীবন সাধনা ছিল সমাজের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কবির সপরিবারে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেন।

আলোচনা সভার সভাপতি ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম মাত্র ৯ বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে অভাবের সংসারে হাল ধরতে স্থানীয় মক্তবে মুয়াজ্জিনের কাজ থেকে শুরু করে রুটির দোকানে কাজ পর্যন্ত করেছেন। তিনি এত কিছু করার পরও তার যে সাধনা ছিল, আর্ত পীড়িত মানুষের কথা, অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তার লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তার কবিতা ও গান মানুষকে যুগে যুগে শোষন ও বঞ্চনা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়ে চলছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার কবিতা ও গান ছিল প্রেরণার উৎস। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম একাধারে সঙ্গীতঙ্গ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, বাদ্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার ও অভিনেতা। তার কবিতা ও সাহিত্যে বাংলায় নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আর এম ফয়জুর রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতা। বিশেষ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুন্সি আবু সাইফ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান ও সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কার্পাসডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বিশ্বাস, সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্টো, আটচালা ঘর মালিক মি. প্রকৃতি বিশ্বাস বকুল ও কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে কার্পাসডাঙ্গা নজরুল স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে সন্ধ্যা ৭টায় নাটক ‘নীলকুঠি’ অনুষ্ঠিত হয়।

আলমডাঙ্গা:
আলমডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ ও গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতি পরিষদের উদ্যোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে চারটায় কবি আলাউদ্দিন আহমেদ পাঠাগারের পরিচালক কবি গোলাম রহমানের পরিচালনায় মুক্তমনা ফাউন্ডেশনের অফিসে এর আয়োজন করা হয়। সাহিত্য পরিষদের সভাপতি কবি ওমর আলী মাস্টারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কবি সাহিত্যিক হামিদুল ইসলাম আজম, গাঙচিল সাহিত্য সাংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি জামিরুল ইসলাম, সম্পাদক হাবিবুর রহমান মজুমদার ও সাহিত্য পরিষদের সাংগাঠনিক সম্পাদক কবি গোলাম রহমান চৌধুরী।

সভার শুরুতে কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। কবি ওমর আলী মাস্টার বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম বাঙালির চিরায়ত মনন ও চেতনার কবি। বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল প্রেম-দ্রোহ ও সাম্যের কবি হিসেবে পরিচিত। তাঁর কালজয়ী লেখনিতে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে মন্ত্র শাণিত ছিল। কুসংষ্কার, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে কবি মানবতার জয়গান গেয়েছেন। ব্রিটিশ শাসকদের শোষণ, নির্যাতন ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কলম ধরে তিনি বাঙালির জাতীয়তা বোধের জাগরণ ঘটিয়েছিলেন।

কবি হামিদুল ইসলাম আজম বলেন, বাংলা সাহিত্যে বিদ্রোহী কবি হিসেবে পরিচিত হলেও কাজী নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার, গায়ক ও অভিনেতা। তিনি বৈচিত্র্যময় অসংখ্য রাগ-রাগিনী সৃষ্টি করে বাংলা সঙ্গীত জগতকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন। তার কবিতা, গান ও সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে নবজাগরণ সৃষ্টি করেছিল। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার পথিকৃৎ লেখক। তাঁর লেখনি জাতীয় জীবনে অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।