ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপদাহ অব্যাহত, ৪১.৭ ডিগ্রি তামমাত্রা রেকর্ড

কড়া রোদ ও ভ্যাপসা গরমে নাকাল মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪
  • / ৫৬ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার বেলা তিনটায় এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৪২ শতাংশ। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকার কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এদিকে, কড়া রোদ ও ঘাম ঝরানো গরমে বিপাকে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে বেরিয়ে নাকাল হয়ে পড়ছেন তারা। তাছাড়া সাধারণ পথের যাত্রী ও মানুষদেরও নাভিশ্বাস উঠছে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। পুরো এপ্রিল মাসজুড়ে ছিল গরমের দাপট। ওই সময় টানা ৩৭ দিন তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিমের এ জেলা। ৩০ এপ্রিল এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটিই ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
চলতি মে মাসের প্রথম তিন দিন তাপমাত্রার পারদ ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। ৬ মে বৃষ্টির পর ১৩ মে পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির নিচে ছিল। তবে ১৪ মে তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ১৫ মে একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। গত ১৬ মে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৭ মে জেলা আবহাওয়া অফিস সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এরপর টানা ছয়দিন তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করলেও গত শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি ছুয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে আবারও শুরু হয় তাপদাহ। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা তিনটায় তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৪৪ শতাংশ।
গতকাল দুপুরে কথা হয় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার চৌরাস্তার মোড়ে রাজীব হোসের নামের এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহ যাবেন তিনি। ভোরে কয়েকটি কাজে চুয়াডাঙ্গা এসেছিলেন। এখানে পৌঁছানোর পর থেকে তীব্র রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন তিনি। দুই গ্লাস শরবত ও আখের রস খেয়েও শান্তি পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, এত গরম শরীর নিতে পারছে না। যেখানে একটু ছায়া পাচ্ছি বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের লিচু ব্যবসায়ী সাগর হোসেন বলেন, গরমে রাস্তায় মানুষজনই কমে গেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশকিছু লিচু বিক্রি হলেও এরপর থেকে আর তেমন বিক্রি হয়নি তার। সকালে গাছ থেকে লিচু ভেঙে আনা হলেও পাতাগুলো প্রায় শুকিয়ে গেছে। তিনি বলেন, গরমে মানুষ কম বের হলেও আমাদের মতো মানুষের কিছুই করার নেই। গরমে ঘরে বসে থাকলে পেট বসে থাকবে না।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য রয়েছে, ফলে ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ বিকেল নাগাদ চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টি শুরু হবে। এরপর থেকে তাপমাত্রা ও গরম কমে আসবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপদাহ অব্যাহত, ৪১.৭ ডিগ্রি তামমাত্রা রেকর্ড

কড়া রোদ ও ভ্যাপসা গরমে নাকাল মানুষ

আপলোড টাইম : ০৮:২৪:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল শনিবার বেলা তিনটায় এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৪২ শতাংশ। স্থানীয় আবহাওয়া অফিস বলছে, বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকার কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। এদিকে, কড়া রোদ ও ঘাম ঝরানো গরমে বিপাকে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। কাজের সন্ধানে ঘরের বাইরে বেরিয়ে নাকাল হয়ে পড়ছেন তারা। তাছাড়া সাধারণ পথের যাত্রী ও মানুষদেরও নাভিশ্বাস উঠছে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। পুরো এপ্রিল মাসজুড়ে ছিল গরমের দাপট। ওই সময় টানা ৩৭ দিন তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিমের এ জেলা। ৩০ এপ্রিল এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটিই ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
চলতি মে মাসের প্রথম তিন দিন তাপমাত্রার পারদ ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। ৬ মে বৃষ্টির পর ১৩ মে পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির নিচে ছিল। তবে ১৪ মে তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ১৫ মে একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। গত ১৬ মে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৭ মে জেলা আবহাওয়া অফিস সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এরপর টানা ছয়দিন তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করলেও গত শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি ছুয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার থেকে আবারও শুরু হয় তাপদাহ। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় এ জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বেলা তিনটায় তা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৪৪ শতাংশ।
গতকাল দুপুরে কথা হয় চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার চৌরাস্তার মোড়ে রাজীব হোসের নামের এক পথচারীর সঙ্গে। তিনি বলেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে ঝিনাইদহ যাবেন তিনি। ভোরে কয়েকটি কাজে চুয়াডাঙ্গা এসেছিলেন। এখানে পৌঁছানোর পর থেকে তীব্র রোদ আর গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন তিনি। দুই গ্লাস শরবত ও আখের রস খেয়েও শান্তি পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, এত গরম শরীর নিতে পারছে না। যেখানে একটু ছায়া পাচ্ছি বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সড়কের লিচু ব্যবসায়ী সাগর হোসেন বলেন, গরমে রাস্তায় মানুষজনই কমে গেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত বেশকিছু লিচু বিক্রি হলেও এরপর থেকে আর তেমন বিক্রি হয়নি তার। সকালে গাছ থেকে লিচু ভেঙে আনা হলেও পাতাগুলো প্রায় শুকিয়ে গেছে। তিনি বলেন, গরমে মানুষ কম বের হলেও আমাদের মতো মানুষের কিছুই করার নেই। গরমে ঘরে বসে থাকলে পেট বসে থাকবে না।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য রয়েছে, ফলে ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি অনুভূত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আজ বিকেল নাগাদ চুয়াডাঙ্গায় বৃষ্টি শুরু হবে। এরপর থেকে তাপমাত্রা ও গরম কমে আসবে।