ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবারও তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড

গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, কাল বৃষ্টির সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৬:২০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪
  • / ৫৫ বার পড়া হয়েছে

আবারো তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। গতকাল শুক্রবার এ জেলার ওপর তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এদিন দুপুর ১২টায় জেলা আবহাওয়া অফিস ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করলেও বেলা তিনটায় তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে আবারো তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সীরা নদী, পুকুর কিংবা সেচ পাম্পে গোসলে দীর্ঘ সময় পার করছেন। তবে সে সুযোগ না থাকায় পরিশ্রমে ক্লান্ত শ্রমজীবীদের কাজের ফাঁকে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। তীব্র তাপপ্রবাহে সবেচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন ফুটপাতের ব্যবসায়ী, রিকশা-ভ্যান চালক, হকারসহ নিম্ন আয়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। চলতি মে মাসের প্রথম তিন দিন তাপমাত্রার পারদ ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। ৬ মে বৃষ্টির পর ১৩ মে পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির নিচে ছিল। তবে ১৪ মে তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ১৫ মে একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। গত ১৬ মে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৭ মে জেলা আবহাওয়া অফিস সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এরপর টানা ছয়দিন তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করলেও গতকাল তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা সোনা মিয়া। তিনি বলেন, ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। সারাদিন বিভিন্ন ট্রেনে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন তিনি। সকাল থেকে ২০০ টাকার ঝালমুড়ি বিক্রি করেছেন। গরমে বেশি ছুটতে পারছেন না, তাই ঠিকমত বেচাকেনাও হচ্ছে না।
এদিকে, তীব্র গরমেও গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে মাথাভাঙ্গা নদীতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ডুব দিয়ে ও সাঁতার কেটে বন্ধুদের সঙ্গে উল্লাস করছিল বেশ কয়েকজন কিশোর ও শিশু। তাদের মধ্যে কিশোর সাগর বলেন, নদীর কাছের তাদের বাড়ি। তবে প্রতিদিন নদীতে নেমে গোসল করার সুযোগ হয় না তাদের। সাগর জানায়, খুব বেশি গরম পড়লেই তার মা নদীতে গোসল করার অনুমতি দেয় তাকে। নদীতে গোসলের সময় সাঁতার, ছোঁয়াছুয়িসহ বিভিন্ন খেলাও করে তারা।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান জানান, গতকাল শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছালেও তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে আজ শনিবার। আগামীকাল রোববার এ জেলায় বৃষ্টিও হতে পারে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আবারও তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড

গরমে জনজীবনে দুর্ভোগ, কাল বৃষ্টির সম্ভাবনা

আপলোড টাইম : ০৬:২০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

আবারো তীব্র তাপপ্রবাহের কবলে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা। গতকাল শুক্রবার এ জেলার ওপর তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এদিন দুপুর ১২টায় জেলা আবহাওয়া অফিস ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করলেও বেলা তিনটায় তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকাল ছিল সারাদেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪২ শতাংশ। এদিকে, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে আবারো তীব্র তাপপ্রবাহ শুরু হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সীরা নদী, পুকুর কিংবা সেচ পাম্পে গোসলে দীর্ঘ সময় পার করছেন। তবে সে সুযোগ না থাকায় পরিশ্রমে ক্লান্ত শ্রমজীবীদের কাজের ফাঁকে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। তীব্র তাপপ্রবাহে সবেচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন ফুটপাতের ব্যবসায়ী, রিকশা-ভ্যান চালক, হকারসহ নিম্ন আয়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
জেলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত এপ্রিল মাসজুড়ে এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে অতি তীব্র আকারের তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। চলতি মে মাসের প্রথম তিন দিন তাপমাত্রার পারদ ৪২ ডিগ্রি থেকে ৪১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করে। ৬ মে বৃষ্টির পর ১৩ মে পর্যন্ত তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রির নিচে ছিল। তবে ১৪ মে তাপমাত্রা আবার বাড়তে শুরু করে। এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন ১৫ মে একই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। গত ১৬ মে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ১৭ মে জেলা আবহাওয়া অফিস সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে। এরপর টানা ছয়দিন তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করলেও গতকাল তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে।
গতকাল চুয়াডাঙ্গা রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ঝালমুড়ি বিক্রেতা সোনা মিয়া। তিনি বলেন, ভোরে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। সারাদিন বিভিন্ন ট্রেনে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করেন তিনি। সকাল থেকে ২০০ টাকার ঝালমুড়ি বিক্রি করেছেন। গরমে বেশি ছুটতে পারছেন না, তাই ঠিকমত বেচাকেনাও হচ্ছে না।
এদিকে, তীব্র গরমেও গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে মাথাভাঙ্গা নদীতে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। ডুব দিয়ে ও সাঁতার কেটে বন্ধুদের সঙ্গে উল্লাস করছিল বেশ কয়েকজন কিশোর ও শিশু। তাদের মধ্যে কিশোর সাগর বলেন, নদীর কাছের তাদের বাড়ি। তবে প্রতিদিন নদীতে নেমে গোসল করার সুযোগ হয় না তাদের। সাগর জানায়, খুব বেশি গরম পড়লেই তার মা নদীতে গোসল করার অনুমতি দেয় তাকে। নদীতে গোসলের সময় সাঁতার, ছোঁয়াছুয়িসহ বিভিন্ন খেলাও করে তারা।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক জামিনুর রহমান জানান, গতকাল শুক্রবার তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছালেও তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা রয়েছে আজ শনিবার। আগামীকাল রোববার এ জেলায় বৃষ্টিও হতে পারে।