ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে বোনদের জমি দখলের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
নামপত্তনসহ বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও মায়ের জমি জবরদখল করে চাষাবাদ করার অভিযোগ করেছেন উম্মে হাবিবা নামের এক নারী। তার মামাতো ভাই স্কুল শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ওরফে জুয়েল রানা পেশী শক্তি খাটিয়ে এই জমি দখল করে চাষাবাদ করছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে তারা চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ন্যায় বিচারের জন্য অভিযোগ করেছেন।

জুয়েল রানা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের মৃত গোলাম সোবহানের ছেলে ও স্থানীয় বকশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ঝিনাইদহ শহরের শেরে বাংলা সড়কে বসবাসরত আবুল হোসেনের স্ত্রী হেলেনা আক্তার ও তার খালাতো বোন উম্মে হাবিবা ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাদের মা ও খালারা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর ও মাজু মৌজায় নানির ওয়ারিশ হিসেবে ৮ বিঘা জমি পাবেন। এই জমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের মামাতো ভাই স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা জবরদখল করে রেখেছেন । ইতিমধ্যে তারা ওই জমি নাম খারিজও করেছেন। এখন জমি দখল বা কারও কাছে বিক্রি করতে গেলে জুয়েল জমির ওপর যেতে দিচ্ছে না। তিনি, তার মা ও খালারা গুরুতর অসুস্থ। জমি বিক্রি ছাড়া তাদের চিকিৎসা করার আর্থিক কোনো সম্বল নেই।

উম্মে হাবিবা ও তার স্বজনরা গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এসে জানান, বিবাদী মাহমুদুল হাসান জুয়েল সরকারি চাকরি করলেও একজন প্রতারক। জমি দখলের জন্য জুয়েল কিছু জমির জাল দলিলও করেছেন। তারা এসিল্যান্ড অফিসে নামপত্তন ও খারিজের জন্য আবেদন করলে জুয়েল আদালতে মামলা চলছে এমন মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে আলমডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে প্রভাবিত করে তাদের নামপত্তন মামলা খারিজ করতে করান।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার মা মৃত নাজমুন নাহার, খালা মোছা. শামছুন নাহার ও আরেক খালা আঞ্জুয়ারা বেগমের আট বিঘা দখল করতে গেলে বা অন্য কোথাও বিক্রি করতে গেলে বাধা সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি স্থানীয় ও প্রশাসনিকভাবে অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করার পরও স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা কারও পাত্তা দিচ্ছেন না। এমনকি আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে শালিসের জন্য ডাকা হলেও তিনি চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন। পরে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহার ধমক খেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি ইউএনওর দপ্তরে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়ে ও বাদীদের সহায়তা করার আশ^াস দিয়ে চলে যান। কিন্তু পরের দিন জুয়েল রানা ওই সব জমি দখল করে ধান লাগিয়ে দেন।

বিবাদী জুয়েল রানা অভিযোগকারীদের শাসিয়ে বলেন, জমি যদি কেউ দখল করতে বা বিক্রি করেত আসে, তাবে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এ বিষয়ে জুয়েল রানা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারও জমি দখল করেনি বরং তাদের সহায়তা করেছি। তারপরও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, কারণ আমি সরকারি চাকরি করি। তিনি বলেন অভিযোগকারীরা মাজু ও মাধবপুর মৌজার ৫১ দাগে ৫৫ শতক জমির নামপত্তন করেছেন। সেই জমি তারা বিক্রি করতে চাইলে বেশি দাম চাচ্ছে। তিনি বলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহা স্যার আমার চাকরির অভিভাবক। তিনি যে বিচার করবেন তাই আমি মাথা পেতে নেব।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহা জানান, বিষয়টি আমার নলেজে আছে। আমি ওই অসহায় নারীদের জমির নামপত্তনে সহায়তাও করেছি। দেখি কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে বোনদের জমি দখলের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৯:৫৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ঝিনাইদহ অফিস:
নামপত্তনসহ বৈধ কাগজপত্র থাকার পরও মায়ের জমি জবরদখল করে চাষাবাদ করার অভিযোগ করেছেন উম্মে হাবিবা নামের এক নারী। তার মামাতো ভাই স্কুল শিক্ষক মাহমুদুল হাসান ওরফে জুয়েল রানা পেশী শক্তি খাটিয়ে এই জমি দখল করে চাষাবাদ করছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এ নিয়ে তারা চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ও আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ন্যায় বিচারের জন্য অভিযোগ করেছেন।

জুয়েল রানা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাজু গ্রামের মৃত গোলাম সোবহানের ছেলে ও স্থানীয় বকশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ঝিনাইদহ শহরের শেরে বাংলা সড়কে বসবাসরত আবুল হোসেনের স্ত্রী হেলেনা আক্তার ও তার খালাতো বোন উম্মে হাবিবা ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাদের মা ও খালারা আলমডাঙ্গা উপজেলার মাধবপুর ও মাজু মৌজায় নানির ওয়ারিশ হিসেবে ৮ বিঘা জমি পাবেন। এই জমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের মামাতো ভাই স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা জবরদখল করে রেখেছেন । ইতিমধ্যে তারা ওই জমি নাম খারিজও করেছেন। এখন জমি দখল বা কারও কাছে বিক্রি করতে গেলে জুয়েল জমির ওপর যেতে দিচ্ছে না। তিনি, তার মা ও খালারা গুরুতর অসুস্থ। জমি বিক্রি ছাড়া তাদের চিকিৎসা করার আর্থিক কোনো সম্বল নেই।

উম্মে হাবিবা ও তার স্বজনরা গতকাল বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এসে জানান, বিবাদী মাহমুদুল হাসান জুয়েল সরকারি চাকরি করলেও একজন প্রতারক। জমি দখলের জন্য জুয়েল কিছু জমির জাল দলিলও করেছেন। তারা এসিল্যান্ড অফিসে নামপত্তন ও খারিজের জন্য আবেদন করলে জুয়েল আদালতে মামলা চলছে এমন মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে আলমডাঙ্গা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে প্রভাবিত করে তাদের নামপত্তন মামলা খারিজ করতে করান।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তার মা মৃত নাজমুন নাহার, খালা মোছা. শামছুন নাহার ও আরেক খালা আঞ্জুয়ারা বেগমের আট বিঘা দখল করতে গেলে বা অন্য কোথাও বিক্রি করতে গেলে বাধা সৃষ্টি করছেন। বিষয়টি স্থানীয় ও প্রশাসনিকভাবে অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করার পরও স্কুল শিক্ষক জুয়েল রানা কারও পাত্তা দিচ্ছেন না। এমনকি আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরে শালিসের জন্য ডাকা হলেও তিনি চরম ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন। পরে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহার ধমক খেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি ইউএনওর দপ্তরে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়ে ও বাদীদের সহায়তা করার আশ^াস দিয়ে চলে যান। কিন্তু পরের দিন জুয়েল রানা ওই সব জমি দখল করে ধান লাগিয়ে দেন।

বিবাদী জুয়েল রানা অভিযোগকারীদের শাসিয়ে বলেন, জমি যদি কেউ দখল করতে বা বিক্রি করেত আসে, তাবে তাকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এ বিষয়ে জুয়েল রানা তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারও জমি দখল করেনি বরং তাদের সহায়তা করেছি। তারপরও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে, কারণ আমি সরকারি চাকরি করি। তিনি বলেন অভিযোগকারীরা মাজু ও মাধবপুর মৌজার ৫১ দাগে ৫৫ শতক জমির নামপত্তন করেছেন। সেই জমি তারা বিক্রি করতে চাইলে বেশি দাম চাচ্ছে। তিনি বলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহা স্যার আমার চাকরির অভিভাবক। তিনি যে বিচার করবেন তাই আমি মাথা পেতে নেব।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামছুজ্জোহা জানান, বিষয়টি আমার নলেজে আছে। আমি ওই অসহায় নারীদের জমির নামপত্তনে সহায়তাও করেছি। দেখি কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়।