ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠে আ.লীগ নেতারা

অনেকে শুরু করেছেন গণসংযোগ, শোভা পাচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫৯ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
দলীয় বিভেদ ও বিশৃঙ্খলাা কারণে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রার্থীর পরাজয়ের পর একে একে ঝিনাইদহ পৌরসভা ও সর্বশেষ ঝিনাইদহ-২ আসনেও নৌকার ভরাডুবি হয়। এতে চাপের মুখে পড়েন নেতারা। ধারাবাহিক নৌকার এই পরাজয়ে কর্মীরা হতাশ হয়েছেন। অনেক নেতা-কর্মী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
এ অবস্থায় সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলের মধ্যে প্রকাশ্যে কোনো কোন্দল দেখা না গেলেও নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিয়ে নেতাদের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত না হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছেন। শহর বা গ্রামের মোড়ে মোড়ে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের ব্যানার ও প্লাকার্ড। উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলে খেলা জমে উঠতে পারে।

ইতিমধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম সরওয়ার খাঁন সউদ, সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুর রহমান খোকা, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জে এম রশিদুল আলম, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আশফাক মাহমুদ জন, যুবলীগ নেতা নুরে আলম বিপ্লব ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) রাশিদুর রহমান রাসেল প্রচারণা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে নবীন ও প্রবীণ নেতা এবারের ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন। এই নামের বাইরেও আরও অনেকে প্রার্থী হতে পারেন।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম সরওয়ার খাঁন সউদ দলের একজন পরীক্ষিত নেতা। তিনি কোনো নির্বাচনে মনোনয়ন চাননি। এই বৃদ্ধ বয়সে তিনি দলীয়ভাবে মূল্যায়ন চান। এ জন্য তিনি প্রার্থী হিসেবে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ঝুলিয়েছেন। তিনি বলেন, সারা জীবন পরিচ্ছন্নভাবে রাজনীতি করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে কত দুর্বিষহ দিন কাটিয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি অবশ্যই জয়ী হতে পারবো।

সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা আনিছুর রহমান খোকার রয়েছে ব্যক্তিগত পরিচিতি। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ডাকসাইটে সাংবাদিক ছিলেন। নিজের সম্পাদনায় একাধিক পত্রিকা বের করেছেন। এখনো বলা যায় লেখালেখির মধ্যেই আছেন। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তার রয়েছে অনেক ভক্ত ও গুণগ্রাহী। তিনি প্রার্থী হলে হিসাব নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের দুর্দিনের কাণ্ডারি জে এম রশিদুল আলম রাজনীতিতে একটি সফল নাম। তিনি দাপদের সঙ্গে দল পরিচালনা করে গ্রামে গ্রামে ব্যক্তিগত ইমেজ গড়ে তুলেছেন। তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। ঝিনাইদহ শহরের মোড়ে মোড়ে তার বড় বড় সাইনবোর্ড শোভা পাচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আশফাক মাহমুদ জন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলোচনায় থাকলেও তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর অবিচল। দল যদি মনোনয়ন দেন তবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তরুণ এই নেতা ইতিমধ্যে সারা জেলায় নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। যুবলীগ নেতা নুরে আলম বিপ্লব ইতঃপূর্বে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করে ৬৮ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। তার ব্যক্তিগত ও দলীয় একটা ইমেজ আছে। রয়েছে তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক। প্রার্থী হলে প্রতিপক্ষের জন্য তিনি ফলাফলের দিক থেকে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন।

নুরে আলম বিপ্লব জনপ্রতিনিধি না হলেও নানা ধরনের সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত আছেন। এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাপক সুপিরিচিত। অতিশয় ভদ্র, বিনয়ী ও শান্ত স্বভাবের মানুষ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) রাশিদুর রহমান রাসেল। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন। উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুর রশিদ ইন্তেকাল করলে তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বেশ ভালোভাবেই। তার পিতা অ্যাড. আজিজুর রহমান ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। সে হিসেবে রাসেলের রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য। নিজের ইমেজ ছাড়াও পিতার প্রভাব প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে রাসেল ইতিমধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন। স্বতন্ত্র বা দলীয় সে ভাবেই হোক প্রার্থী হলে তিনি জয়ী হয়ে আসতে পারবেন বলে জানান।

এছাড়া ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। বয়সে তরুণ এই নেতার জেলা জুড়ে রয়েছে বিশাল বন্ধু মহল। সব মিলিয়ে তার গ্রহণযোগ্যতা দলীয় অন্যান্য প্রার্থীদের চেয়ে কম নয় বলে অনেকে মনে করেন। এদিকে বিএনপি বা জামায়াত আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হলে সেক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগ কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সদর উপজেলার সাধারণ মানুষ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে ভোটের মাঠে আ.লীগ নেতারা

অনেকে শুরু করেছেন গণসংযোগ, শোভা পাচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন

আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ঝিনাইদহ অফিস:
দলীয় বিভেদ ও বিশৃঙ্খলাা কারণে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রার্থীর পরাজয়ের পর একে একে ঝিনাইদহ পৌরসভা ও সর্বশেষ ঝিনাইদহ-২ আসনেও নৌকার ভরাডুবি হয়। এতে চাপের মুখে পড়েন নেতারা। ধারাবাহিক নৌকার এই পরাজয়ে কর্মীরা হতাশ হয়েছেন। অনেক নেতা-কর্মী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
এ অবস্থায় সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে দলের মধ্যে প্রকাশ্যে কোনো কোন্দল দেখা না গেলেও নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব নিয়ে নেতাদের মধ্যে রেষারেষি শুরু হয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত না হলেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছেন। শহর বা গ্রামের মোড়ে মোড়ে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের ব্যানার ও প্লাকার্ড। উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলে খেলা জমে উঠতে পারে।

ইতিমধ্যে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম সরওয়ার খাঁন সউদ, সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আনিছুর রহমান খোকা, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জে এম রশিদুল আলম, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আশফাক মাহমুদ জন, যুবলীগ নেতা নুরে আলম বিপ্লব ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) রাশিদুর রহমান রাসেল প্রচারণা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে নবীন ও প্রবীণ নেতা এবারের ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হচ্ছেন। এই নামের বাইরেও আরও অনেকে প্রার্থী হতে পারেন।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম সরওয়ার খাঁন সউদ দলের একজন পরীক্ষিত নেতা। তিনি কোনো নির্বাচনে মনোনয়ন চাননি। এই বৃদ্ধ বয়সে তিনি দলীয়ভাবে মূল্যায়ন চান। এ জন্য তিনি প্রার্থী হিসেবে শহরের বিভিন্ন স্থানে ব্যানার ঝুলিয়েছেন। তিনি বলেন, সারা জীবন পরিচ্ছন্নভাবে রাজনীতি করেছি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে কত দুর্বিষহ দিন কাটিয়েছি। দল আমাকে মনোনয়ন দিলে আমি অবশ্যই জয়ী হতে পারবো।

সাবেক পৌরসভার চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা আনিছুর রহমান খোকার রয়েছে ব্যক্তিগত পরিচিতি। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি ডাকসাইটে সাংবাদিক ছিলেন। নিজের সম্পাদনায় একাধিক পত্রিকা বের করেছেন। এখনো বলা যায় লেখালেখির মধ্যেই আছেন। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে তার রয়েছে অনেক ভক্ত ও গুণগ্রাহী। তিনি প্রার্থী হলে হিসাব নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও দলের দুর্দিনের কাণ্ডারি জে এম রশিদুল আলম রাজনীতিতে একটি সফল নাম। তিনি দাপদের সঙ্গে দল পরিচালনা করে গ্রামে গ্রামে ব্যক্তিগত ইমেজ গড়ে তুলেছেন। তিনি এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। ঝিনাইদহ শহরের মোড়ে মোড়ে তার বড় বড় সাইনবোর্ড শোভা পাচ্ছে।

ঝিনাইদহ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আশফাক মাহমুদ জন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আলোচনায় থাকলেও তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের ওপর অবিচল। দল যদি মনোনয়ন দেন তবে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তরুণ এই নেতা ইতিমধ্যে সারা জেলায় নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করেছেন। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। যুবলীগ নেতা নুরে আলম বিপ্লব ইতঃপূর্বে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করে ৬৮ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। তার ব্যক্তিগত ও দলীয় একটা ইমেজ আছে। রয়েছে তার নিজস্ব ভোট ব্যাংক। প্রার্থী হলে প্রতিপক্ষের জন্য তিনি ফলাফলের দিক থেকে ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারেন।

নুরে আলম বিপ্লব জনপ্রতিনিধি না হলেও নানা ধরনের সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত আছেন। এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নয়নসহ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ব্যাপক সুপিরিচিত। অতিশয় ভদ্র, বিনয়ী ও শান্ত স্বভাবের মানুষ বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) রাশিদুর রহমান রাসেল। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হন। উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. আব্দুর রশিদ ইন্তেকাল করলে তিনি ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বেশ ভালোভাবেই। তার পিতা অ্যাড. আজিজুর রহমান ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। সে হিসেবে রাসেলের রয়েছে পারিবারিক ঐতিহ্য। নিজের ইমেজ ছাড়াও পিতার প্রভাব প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে রাসেল ইতিমধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছেন। স্বতন্ত্র বা দলীয় সে ভাবেই হোক প্রার্থী হলে তিনি জয়ী হয়ে আসতে পারবেন বলে জানান।

এছাড়া ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। বয়সে তরুণ এই নেতার জেলা জুড়ে রয়েছে বিশাল বন্ধু মহল। সব মিলিয়ে তার গ্রহণযোগ্যতা দলীয় অন্যান্য প্রার্থীদের চেয়ে কম নয় বলে অনেকে মনে করেন। এদিকে বিএনপি বা জামায়াত আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হলে সেক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগ কী সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সদর উপজেলার সাধারণ মানুষ।