ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গা জেলায় কমেছে পাশের হার, যশোর বোর্ডের মধ্যে অবস্থান অষ্টম

এইচএসসির ফল প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরের পর কম্পিউটারের বোতাম চেপে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাশের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাশের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেই হিসেবে এবার পাশের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। এবার দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাড়ে ১৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯২ হাজার ৫৯৫ জন। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। সেই হিসেবে এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮৩ হাজার ৬৮৭ জন।
এদিকে, ফল প্রকাশের পর দেশজুড়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এদিন দুপুর ১২টার পর থেকে ফল জানতে বিভিন্ন কলেজ প্রাঙ্গণে বাড়তে থাকে ফলপ্রত্যাশী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতি। এরপর প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে কর্তৃপক্ষের টানিয়ে দেওয়া ফল দেখে উচ্ছ্বাস, আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। দল বেঁধে তাদের উল্লাস আর আনন্দ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। দীর্ঘ সাধনা ও পরিশ্রমের পর কাক্সিক্ষত ফল পেয়ে আনন্দ প্রকাশে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে, ছবি আর সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।

চুয়াডাঙ্গা:
এবারে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গায় পাশের হার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। গত বছর পাশের হার ছিল ৭৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। যশোর বোর্ডে পাশের হারের সাথে এবার চুয়াডাঙ্গার অবস্থানও পিছিয়েছে। পাশের হারের দিক দিয়ে যশোর বোর্ডের ১০ জেলার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অবস্থান অষ্টম। জেলার ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট উপস্থিত ৬ হাজার ৬৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছেন। জেলার ১১টি কেন্দ্রে এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেন। পাশকৃত ৪ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৮০২ জন ছাত্র এবং ২ হাজার ৩৩৫ জন ছাত্রী। পরীক্ষায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোট অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখা ২ হাজার ৫৩২ জন।


চুয়াডাঙ্গায় পাশের হার ও জিপিএ-৫ দুদিকেই এগিয়ে আছে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ। কলেজটিতে এ বছর পাশের হার ৮৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২১৭ জন শিক্ষার্থী। মোট ৮৪৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছেন ৯৩ জন। মানবিক থেকে ৩৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯৯ জন। বিজ্ঞান থেকে ২৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এছাড়াও, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন।


চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে পাশের হার ৭৫ শতাংশ। ৫৯৬ জন ছাত্রীর মধ্যে ৪৪৮ জন ছাত্রী কৃতকার্য হয়েছেন। ৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজে পাশের হার ৪০ শতাংশ, বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে ৩৪ শতাংশ, বড় সলুয়া নিউ মডেল কলেজে ৭৬ শতাংশ, তেঁতুল শেখ কলেজে ৭২ শতাংশ। আলিম পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গার ফলাফল ভালো। চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসায় ১০০ শতাংশ ও বদরগঞ্জ বাকী বিল্লাহ কামিল মাদ্রাসায় ৮৭ শতাংশ পাশ করেছে।


যশোর বোর্ডের মধ্যে পাশের হারের দিক থেকে এবার চুয়াডাঙ্গার অবস্থান অষ্টম। প্রথম অবস্থানে আছে খুলনা জেলা। এবার খুলনা জেলায় পাশের হার ৮০ দশমিক ৪ শতাংশ। দ্বিতীয় যশোর, পাশের হার ৭৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। তৃতীয় সাতক্ষীরা, পাশের হার ৬৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। চতুর্থ ঝিনাইদহ, পাশের হার ৬৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। পঞ্চম মেহেরপুর, পাশের হার ৬৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। ষষ্ঠ মাগুরা, পাশের হার ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ। সপ্তম কুষ্টিয়া, পাশের হার ৬৪ দশমিক ৪৪, শতাংশ। অষ্টম অবস্থানে চুয়াডাঙ্গা, পাশের হার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। নবম বাগেরহাট, পাশের হার ৬১ দশমিক ৬১ শতাংশ। সবথেকে কম পাশের হার নড়াইল জেলায়। এবারে ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ পাশের হার নিয়ে যশোর বোর্ডের ১০ জেলার মধ্যে সবার শেষে নড়াইল।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম সাইফুর রশিদ বলেন, ফলাফলে যারা উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদেরকে আমি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তারা উচ্চশিক্ষায় উচ্চ জায়গায় তাদেরকে আসীন করে নেবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। তিনি আরও বলেন, শতভাগ পাাশ করলে আমি বেশি খুশি হতাম। আশা করছি আগাীতে জিপিএ-৫ সহ পাশের হার আরও বৃদ্ধি পাবে।

জীবননগর:
জীবননগরে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে ৬৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। এ বছর জীবননগর আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ২৮৫ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ২৩২ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৩ জন। জীবননগর ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩০৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ১৮১ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮ জন। উথলী কলেজ থেকে ১৩৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ৫৯ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫ জন। আন্দুলবাড়ীয়া কলেজ থেকে ৬৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ৪১ জন। তবে কেউ জিপিএ-৫ পায়নি। এ নিয়ে উপজেলায় এবার এইচএসসিতে ৭৯২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ২৭৯ জন। এর মধ্যে সব থেকে বেশি জীবননগর ডিগ্রি কলেজ থেকে পাশ করতে পারেনি ১২৬ জন।
এদিকে জীবননগরে বিএম শাখা থেকে ১৭৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন ১৭২ জন। পাশের হার ৯৮ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৫ জন। আর মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছে ৮৯ শতাংশ। ১০৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ৯৫ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ জন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাশ করতে পারেনি ১১ জন।

আন্দুলবাড়ীয়া:
আন্দুলবাড়ীয়া কলেজ থেকে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৬৬ জনের মধ্যে ৪১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ২ জন। শতকরা পাশের হার ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। আন্দুলবাড়ীয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আলমগীর কবির বলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল ঘোষণা অনুযায়ী ও শতকরা পাশের হার মোতাবেক ৬৪ দশমিক ৬ পার্সেন্ট হারে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া কলেজটি দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। কলেজের অধ্যক্ষ এসএম এনায়েতুল হক বলেন, ভালো ফলাফলের এ সাফল্য আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নবাসীর। আন্দুলবাড়ীয়া কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার বলেন, এইচএসসি পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করায় অত্র কলেজ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সকল প্রভাষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই। ভালো ফলাফল অর্জন করায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।

উথলী:
সারা দেশের ন্যায় জীবননগর উপজেলার উথলী ডিগ্রি কলেজ থেকে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ আকরাম হোসেন জানান, উথলী ডিগ্রি কলেজে থেকে এ বছর ১৩৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৫৯ জন এবং অকৃকতার্য হয়েছেন ৭৫ জন পরীক্ষার্থী। এই কলেজ থেকে এ বছর গড় পাশের ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে মানবিক বিভাগের ৫ জন পরীক্ষার্থী।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা জেলায় কমেছে পাশের হার, যশোর বোর্ডের মধ্যে অবস্থান অষ্টম

এইচএসসির ফল প্রকাশ, শিক্ষার্থীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস

আপলোড টাইম : ০৮:৪৮:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
২০২৩ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তরের পর কম্পিউটারের বোতাম চেপে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল প্রকাশ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষাবোর্ডে গড় পাশের হার ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গড় পাশের হার ছিল ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ। সেই হিসেবে এবার পাশের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ। এবার দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সাড়ে ১৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯২ হাজার ৫৯৫ জন। ২০২২ সালে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন। সেই হিসেবে এ বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮৩ হাজার ৬৮৭ জন।
এদিকে, ফল প্রকাশের পর দেশজুড়ে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এদিন দুপুর ১২টার পর থেকে ফল জানতে বিভিন্ন কলেজ প্রাঙ্গণে বাড়তে থাকে ফলপ্রত্যাশী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতি। এরপর প্রতিষ্ঠানের নোটিশ বোর্ডে কর্তৃপক্ষের টানিয়ে দেওয়া ফল দেখে উচ্ছ্বাস, আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড়ে মেতে ওঠেন চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন শহরের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। দল বেঁধে তাদের উল্লাস আর আনন্দ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। দীর্ঘ সাধনা ও পরিশ্রমের পর কাক্সিক্ষত ফল পেয়ে আনন্দ প্রকাশে বিজয় চিহ্ন দেখিয়ে, ছবি আর সেলফি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।

চুয়াডাঙ্গা:
এবারে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গায় পাশের হার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। গত বছর পাশের হার ছিল ৭৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ। যশোর বোর্ডে পাশের হারের সাথে এবার চুয়াডাঙ্গার অবস্থানও পিছিয়েছে। পাশের হারের দিক দিয়ে যশোর বোর্ডের ১০ জেলার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অবস্থান অষ্টম। জেলার ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মোট উপস্থিত ৬ হাজার ৬৬৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষার্থী পাশ করেছেন। জেলার ১১টি কেন্দ্রে এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেন। পাশকৃত ৪ হাজার ১৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ হাজার ৮০২ জন ছাত্র এবং ২ হাজার ৩৩৫ জন ছাত্রী। পরীক্ষায় উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোট অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর সংখা ২ হাজার ৫৩২ জন।


চুয়াডাঙ্গায় পাশের হার ও জিপিএ-৫ দুদিকেই এগিয়ে আছে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ। কলেজটিতে এ বছর পাশের হার ৮৯ দশমিক ১৭ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২১৭ জন শিক্ষার্থী। মোট ৮৪৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে অকৃতকার্য হয়েছেন ৯৩ জন। মানবিক থেকে ৩৫৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯৯ জন। বিজ্ঞান থেকে ২৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এছাড়াও, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ১৯৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন।


চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজে পাশের হার ৭৫ শতাংশ। ৫৯৬ জন ছাত্রীর মধ্যে ৪৪৮ জন ছাত্রী কৃতকার্য হয়েছেন। ৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজে পাশের হার ৪০ শতাংশ, বদরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে ৩৪ শতাংশ, বড় সলুয়া নিউ মডেল কলেজে ৭৬ শতাংশ, তেঁতুল শেখ কলেজে ৭২ শতাংশ। আলিম পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গার ফলাফল ভালো। চুয়াডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসায় ১০০ শতাংশ ও বদরগঞ্জ বাকী বিল্লাহ কামিল মাদ্রাসায় ৮৭ শতাংশ পাশ করেছে।


যশোর বোর্ডের মধ্যে পাশের হারের দিক থেকে এবার চুয়াডাঙ্গার অবস্থান অষ্টম। প্রথম অবস্থানে আছে খুলনা জেলা। এবার খুলনা জেলায় পাশের হার ৮০ দশমিক ৪ শতাংশ। দ্বিতীয় যশোর, পাশের হার ৭৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। তৃতীয় সাতক্ষীরা, পাশের হার ৬৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। চতুর্থ ঝিনাইদহ, পাশের হার ৬৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। পঞ্চম মেহেরপুর, পাশের হার ৬৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। ষষ্ঠ মাগুরা, পাশের হার ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ। সপ্তম কুষ্টিয়া, পাশের হার ৬৪ দশমিক ৪৪, শতাংশ। অষ্টম অবস্থানে চুয়াডাঙ্গা, পাশের হার ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ। নবম বাগেরহাট, পাশের হার ৬১ দশমিক ৬১ শতাংশ। সবথেকে কম পাশের হার নড়াইল জেলায়। এবারে ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ পাশের হার নিয়ে যশোর বোর্ডের ১০ জেলার মধ্যে সবার শেষে নড়াইল।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. একেএম সাইফুর রশিদ বলেন, ফলাফলে যারা উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদেরকে আমি চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তারা উচ্চশিক্ষায় উচ্চ জায়গায় তাদেরকে আসীন করে নেবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। তিনি আরও বলেন, শতভাগ পাাশ করলে আমি বেশি খুশি হতাম। আশা করছি আগাীতে জিপিএ-৫ সহ পাশের হার আরও বৃদ্ধি পাবে।

জীবননগর:
জীবননগরে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় পাশ করেছে ৬৪ শতাংশ শিক্ষার্থী। এ বছর জীবননগর আদর্শ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ২৮৫ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছে ২৩২ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৩ জন। জীবননগর ডিগ্রি কলেজ থেকে ৩০৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ১৮১ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮ জন। উথলী কলেজ থেকে ১৩৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ৫৯ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫ জন। আন্দুলবাড়ীয়া কলেজ থেকে ৬৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ৪১ জন। তবে কেউ জিপিএ-৫ পায়নি। এ নিয়ে উপজেলায় এবার এইচএসসিতে ৭৯২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ফেল করেছে ২৭৯ জন। এর মধ্যে সব থেকে বেশি জীবননগর ডিগ্রি কলেজ থেকে পাশ করতে পারেনি ১২৬ জন।
এদিকে জীবননগরে বিএম শাখা থেকে ১৭৫ জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছেন ১৭২ জন। পাশের হার ৯৮ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৫ জন। আর মাদ্রাসা থেকে পাশ করেছে ৮৯ শতাংশ। ১০৬ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করেছেন ৯৫ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ জন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পাশ করতে পারেনি ১১ জন।

আন্দুলবাড়ীয়া:
আন্দুলবাড়ীয়া কলেজ থেকে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৬৬ জনের মধ্যে ৪১ জন উত্তীর্ণ হয়েছে। পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ২ জন। শতকরা পাশের হার ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। আন্দুলবাড়ীয়া কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আলমগীর কবির বলেন, যশোর শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল ঘোষণা অনুযায়ী ও শতকরা পাশের হার মোতাবেক ৬৪ দশমিক ৬ পার্সেন্ট হারে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া কলেজটি দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। কলেজের অধ্যক্ষ এসএম এনায়েতুল হক বলেন, ভালো ফলাফলের এ সাফল্য আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নবাসীর। আন্দুলবাড়ীয়া কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার বলেন, এইচএসসি পরীক্ষায় সাফল্য অর্জন করায় অত্র কলেজ পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে সকল প্রভাষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই। ভালো ফলাফল অর্জন করায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা কলেজ ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মিষ্টিমুখ করিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন।

উথলী:
সারা দেশের ন্যায় জীবননগর উপজেলার উথলী ডিগ্রি কলেজ থেকে অংশ নেওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ আকরাম হোসেন জানান, উথলী ডিগ্রি কলেজে থেকে এ বছর ১৩৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে কৃতকার্য হয়েছে ৫৯ জন এবং অকৃকতার্য হয়েছেন ৭৫ জন পরীক্ষার্থী। এই কলেজ থেকে এ বছর গড় পাশের ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে মানবিক বিভাগের ৫ জন পরীক্ষার্থী।