ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুজনকে আটক করেও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৩৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৪৩ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস:
মেহেরপুরের গাংনীতে গৃহবধূর ব্যক্তিগত একান্ত মুহূর্তের ছবি দিয়ে ব্লাকমেইল ও কুপ্রস্তাব দেয়ার ঘটনায় দুজনকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার পরিবারসহ সচেতন মহলের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইন বহির্ভূত কিছু না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই গৃহবধূ স্বামী জানান, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নানাভাবে হুমকি দেয়া হতো। ভয়েস কলে রাতে গোপনালাপ করার প্রস্তাব দেয়া হতো এবং কথা না বললে তার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হতো। এসব ভয়েস রেকর্ড ভুয়া ফেসবুক আইডি পুলিশকে দেয়া হয়। সেই সাথে গত শুক্রবার রাতেই মামলা করার জন্য একটি অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে না নিয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া হয়। এখন গোটা পরিবারই হুমকির মুখে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, মাস দু’য়েক আগে গাংনী বাজারের কাথুলী মোড়ে চপল মোবাইল সেন্টারে একটি মোবাইল মেরামত করতে দেন ওই গৃহবধূ। সে সময় তাকে ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে বলে জানান দোকান কর্মচারী সাইফ উদ্দীন। পরে ফোনটি গৃহবধূকে দিয়ে দেয় সে। পাঁচ দিন আগে গৃহবধূর ছবি দিয়ে নাবিল নামের একটি ফেসবুক আইডি খুলে ওই গৃহবধূর কাছেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো হয়। ভুক্তভোগী গৃহবধূ কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেন। পরে নাবিল নামের আইডি থেকে ওই গৃহবধূর ম্যাসেঞ্জারে তার স্বামীর সাথে থাকা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি প্রেরণ করে ও কুপ্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাব না মানলে সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

বিষয়টি ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার পরিবারকে জানালে তারা মেহেরপুর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে যান এবং গাংনী থানায় একটি জিডি করেন। শুরু হয় তদন্ত। অন্যদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে গৃহবধূ পক্ষের লোকজন ফুঁসে ওঠে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে ও ঘটনা পর্যালোচনা করে ওই গৃহবধূর পরিবার শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে সু-কৌশলে চপল মোবাইল সেন্টারের মালিক চপল হোসেন ও কর্মচারী সাইফ উদ্দীনকে প্রমাণসহ হাতে-নাতে ধরতে সক্ষম হয়। উভয় পক্ষ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে গাংনী বাজার কমিটির লোকজন চপল ও তার কর্মচারী সাইফ উদ্দীনকে বাজার কমিটির অফিসে নিয়ে যায়, সেই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দুজনকে আটক করে থানায় নেয়। গভীর রাতে দুজনকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) মনোজিৎ কুমার নন্দী জানান, অভিযোগকারী যে আবেদন ও ধারা উল্লেখ করেছেন, সেটি পর্নোগ্রাফি আইন। কিন্তু আটককৃতদের অপরাধ ওই আইনে নয়। এদের কাছ থেকে তেমন কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণও মেলেনি। তাই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে গৃহবধূর পক্ষ থেকে যে জিডি করা হয়েছে, তা তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, আটককৃতদেরকে ছেড়ে দেয়া হলেও ওই গৃহবধুর জিডি তদন্ত করা হচ্ছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা ওেনয়া হবে।

তবে পুলিশের এ বক্তব্যের সাথে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন দ্বিমত পোষণ করেছে। তাদের দাবি, ম্যাসেঞ্জরে যে ভয়েসে কুপ্রস্তাব ও ব্লাকমেইলিং করার হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেই ভয়েস সাইফের বলে পুলিশের সামনেই প্রমাণ হয়েছে। এরপরেও কীভাবে পুলিশ প্রমাণ পেল না, তার ধোঁয়াশা কাটছে না পরিবারের।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দুজনকে আটক করেও ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

আপলোড টাইম : ০৮:৩৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

গাংনী অফিস:
মেহেরপুরের গাংনীতে গৃহবধূর ব্যক্তিগত একান্ত মুহূর্তের ছবি দিয়ে ব্লাকমেইল ও কুপ্রস্তাব দেয়ার ঘটনায় দুজনকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার পরিবারসহ সচেতন মহলের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইন বহির্ভূত কিছু না পাওয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ওই গৃহবধূ স্বামী জানান, ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নানাভাবে হুমকি দেয়া হতো। ভয়েস কলে রাতে গোপনালাপ করার প্রস্তাব দেয়া হতো এবং কথা না বললে তার ছবি সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হতো। এসব ভয়েস রেকর্ড ভুয়া ফেসবুক আইডি পুলিশকে দেয়া হয়। সেই সাথে গত শুক্রবার রাতেই মামলা করার জন্য একটি অভিযোগ দেয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ আমলে না নিয়ে আটককৃতদের ছেড়ে দেয়া হয়। এখন গোটা পরিবারই হুমকির মুখে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, মাস দু’য়েক আগে গাংনী বাজারের কাথুলী মোড়ে চপল মোবাইল সেন্টারে একটি মোবাইল মেরামত করতে দেন ওই গৃহবধূ। সে সময় তাকে ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে বলে জানান দোকান কর্মচারী সাইফ উদ্দীন। পরে ফোনটি গৃহবধূকে দিয়ে দেয় সে। পাঁচ দিন আগে গৃহবধূর ছবি দিয়ে নাবিল নামের একটি ফেসবুক আইডি খুলে ওই গৃহবধূর কাছেই ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠানো হয়। ভুক্তভোগী গৃহবধূ কিছু বুঝে উঠতে না পেরে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট একসেপ্ট করেন। পরে নাবিল নামের আইডি থেকে ওই গৃহবধূর ম্যাসেঞ্জারে তার স্বামীর সাথে থাকা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি প্রেরণ করে ও কুপ্রস্তাব দেয়া হয়। প্রস্তাব না মানলে সোস্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।

বিষয়টি ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার পরিবারকে জানালে তারা মেহেরপুর জেলা পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে যান এবং গাংনী থানায় একটি জিডি করেন। শুরু হয় তদন্ত। অন্যদিকে, বিষয়টি জানাজানি হলে গৃহবধূ পক্ষের লোকজন ফুঁসে ওঠে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে ও ঘটনা পর্যালোচনা করে ওই গৃহবধূর পরিবার শুক্রবার সন্ধ্যা রাতে সু-কৌশলে চপল মোবাইল সেন্টারের মালিক চপল হোসেন ও কর্মচারী সাইফ উদ্দীনকে প্রমাণসহ হাতে-নাতে ধরতে সক্ষম হয়। উভয় পক্ষ বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়লে গাংনী বাজার কমিটির লোকজন চপল ও তার কর্মচারী সাইফ উদ্দীনকে বাজার কমিটির অফিসে নিয়ে যায়, সেই পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দুজনকে আটক করে থানায় নেয়। গভীর রাতে দুজনকে ছেড়েও দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে গাংনী থানার ওসি (তদন্ত) মনোজিৎ কুমার নন্দী জানান, অভিযোগকারী যে আবেদন ও ধারা উল্লেখ করেছেন, সেটি পর্নোগ্রাফি আইন। কিন্তু আটককৃতদের অপরাধ ওই আইনে নয়। এদের কাছ থেকে তেমন কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণও মেলেনি। তাই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে গৃহবধূর পক্ষ থেকে যে জিডি করা হয়েছে, তা তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম জানান, আটককৃতদেরকে ছেড়ে দেয়া হলেও ওই গৃহবধুর জিডি তদন্ত করা হচ্ছে। কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা ওেনয়া হবে।

তবে পুলিশের এ বক্তব্যের সাথে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন দ্বিমত পোষণ করেছে। তাদের দাবি, ম্যাসেঞ্জরে যে ভয়েসে কুপ্রস্তাব ও ব্লাকমেইলিং করার হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেই ভয়েস সাইফের বলে পুলিশের সামনেই প্রমাণ হয়েছে। এরপরেও কীভাবে পুলিশ প্রমাণ পেল না, তার ধোঁয়াশা কাটছে না পরিবারের।