ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুল প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পূর্বে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
স্কুলের অস্তিত্ব নেই, অথচ নিয়োগ হয়েছে শিক্ষকের। এমন এক অবিশ্বাস্য ভৌতিক ও জালিয়াতিপূর্ণ নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলায়। এ নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। স্কুলই প্রতিষ্ঠা হয়নি অথচ অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী নামের একজন শিক্ষক। তিনি হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর পশ্চিমপাড়ার আসমত বিশ্বাসের মেয়ে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। তিন বছর পর ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। অথচ স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছর আগে ২০০৭ সালে একটি জালিয়াতিপূর্ণ নিয়োগ নিয়ে চাকরি করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী। নিয়মিত তিনি স্কুলের ক্লাস নিচ্ছেন, কোনো বাধা ছাড়াই তুলছেন সরকারি বেতন-ভাতা।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় শাহনাজ পারভীন শেফালীর বয়স ছিল ৩২ বছর। ফলে এ সময়ে তার চাকরি হওয়ার কথা নয়। তার জন্ম তারিখ ২৪ জুলাই ১৯৭৮। অভিযোগে বলা হয়েছে, বয়স জালিয়াতি করার জন্যই শাহনাজ পারভীন শেফালী স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছরের আগের ভুয়া নিয়োগ ও রেজুলেশন দেখাচ্ছেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, স্কুল রেজিস্ট্রি হয় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর। ওই তারিখেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা দেখানো হয়। স্কুলের শিক্ষকদের যোগদানের তারিখ যথাক্রমে ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর ও ২০১১ সালের ৪ সেপ্টম্বর। ফলে ২০০৭ সালের নিয়োগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। স্কুলটির তৎকালীন সভাপতি দেখানো হয়েছে নুরো। কিন্তু ওই গ্রামে নুরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার নামে এক ব্যক্তি আছেন। তিনি জানান, ‘২০০৭ সালে চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় সরকারি বা বেসরকারি স্কুলের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। তাছাড়া শিক্ষক নিয়োগ তো দূরের কথা, আমি কোনোদিন স্কুলের সভাপতি ছিলাম না।’ তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করার পর ফজলুর রহমান মালিতাকে সভাপতি করা হয় এবং তিনিই শিক্ষক নিয়োগ দেন।

এ ব্যাপারে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের খবর নিশ্চত করে জানান, চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীন শেফালীর বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত করে কাগজপত্র বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও তিনি জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

স্কুল প্রতিষ্ঠার ৩ বছর পূর্বে প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ!

আপলোড টাইম : ০৮:৪৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
স্কুলের অস্তিত্ব নেই, অথচ নিয়োগ হয়েছে শিক্ষকের। এমন এক অবিশ্বাস্য ভৌতিক ও জালিয়াতিপূর্ণ নিয়োগ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলায়। এ নিয়ে সর্বত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। স্কুলই প্রতিষ্ঠা হয়নি অথচ অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ নিয়ে দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী নামের একজন শিক্ষক। তিনি হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর পশ্চিমপাড়ার আসমত বিশ্বাসের মেয়ে।

দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক বরাবর পাঠানো এক লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর একটি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়। তিন বছর পর ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। অথচ স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছর আগে ২০০৭ সালে একটি জালিয়াতিপূর্ণ নিয়োগ নিয়ে চাকরি করে যাচ্ছেন শাহনাজ পারভীন শেফালী। নিয়মিত তিনি স্কুলের ক্লাস নিচ্ছেন, কোনো বাধা ছাড়াই তুলছেন সরকারি বেতন-ভাতা।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১০ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় শাহনাজ পারভীন শেফালীর বয়স ছিল ৩২ বছর। ফলে এ সময়ে তার চাকরি হওয়ার কথা নয়। তার জন্ম তারিখ ২৪ জুলাই ১৯৭৮। অভিযোগে বলা হয়েছে, বয়স জালিয়াতি করার জন্যই শাহনাজ পারভীন শেফালী স্কুল প্রতিষ্ঠার তিন বছরের আগের ভুয়া নিয়োগ ও রেজুলেশন দেখাচ্ছেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, স্কুল রেজিস্ট্রি হয় ২০১০ সালের ২২ ডিসেম্বর। ওই তারিখেই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা দেখানো হয়। স্কুলের শিক্ষকদের যোগদানের তারিখ যথাক্রমে ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর ও ২০১১ সালের ৪ সেপ্টম্বর। ফলে ২০০৭ সালের নিয়োগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। স্কুলটির তৎকালীন সভাপতি দেখানো হয়েছে নুরো। কিন্তু ওই গ্রামে নুরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার নামে এক ব্যক্তি আছেন। তিনি জানান, ‘২০০৭ সালে চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়ায় সরকারি বা বেসরকারি স্কুলের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। তাছাড়া শিক্ষক নিয়োগ তো দূরের কথা, আমি কোনোদিন স্কুলের সভাপতি ছিলাম না।’ তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করার পর ফজলুর রহমান মালিতাকে সভাপতি করা হয় এবং তিনিই শিক্ষক নিয়োগ দেন।

এ ব্যাপারে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগের খবর নিশ্চত করে জানান, চাঁদপুর জোয়ারদার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ পারভীন শেফালীর বিরুদ্ধে জেলা শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে তদন্ত করে কাগজপত্র বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও তিনি জানান।