ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীমা দাবির প্রায় ৬ কোটি টাকা নিয়ে চিন্তায় ১৭ শ গ্রাহক

চুয়াডাঙ্গার ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে গ্রাহক হয়রানি চরমে

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৩:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৬১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বীমা দাবি পাচ্ছেন না প্রায় ১৭ শ গ্রাহক। নির্ধারিত নিয়মে সঞ্চয় জমা দিয়ে মেয়াদপূর্তি হওয়ার পরও গ্রাহকদের প্রায় ৪ থেকে ৬ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় ভোগান্তিতে আছেন তারা। প্রতিদিন চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়কের ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অফিসে ছুটে আসছেন গ্রাহকরা। তাদের দাবি, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে দেওয়া হবে, পরিশোধ করা হবে বলে টালবাহনা করা হচ্ছে তিন বছর ধরে। তবে চুয়াডাঙ্গা অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ের দুর্নীতির কারণে গ্রাহকরা পাচ্ছেন না বীমার টাকা।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় প্রায় এক হাজার ৭ শ গ্রাহক ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন মেয়াদে বীমা সঞ্চয় পূর্ণ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রত্যেকেই নিয়ম করে চুয়াডাঙ্গা সার্ভিস সেন্টারে এসে খোঁজ নেন মাঝে মাঝেই। অফিসের কর্মকর্তারা কারো কথায় শোনেন না, জানেন না পুরো হিসেব। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও প্রতিকার পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। হয়রানি হলেও অর্থ না পাওয়ার ভয়ে আছেন মেয়াদ পূর্ণ করা গ্রাহকরা। গ্রাহক তৈরি করার সময় বিভিন্ন প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হলেও, মূল টাকাই ফেরত পাচ্ছেন না তারা।

সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতালের সামনে জমিদার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চুয়াডাঙ্গা সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, মাঝে মাঝে টাকা ফেরত পাবার আকুতি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা আসছেন অফিসটিতে। কর্মকর্তাদের সেদিকে নজর নেই। আশ্বস্তের একটি বাণী ‘ঢাকা অফিস জানে’ বলেই যেন তাদের সব দায়মুক্তি। গ্রাহকদের হয়রানি নিয়ে মোটেও চিন্তা করেন না কেউ।

অফিসে ছুটে এসেছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার যুগিরহুদা গ্রামের আব্বাস আলী। অনেক আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে জানিয়ে আব্বাস আলী বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। বারবার আলমডাঙ্গা থেকে ছুটে চুয়াডাঙ্গায় অফিসে আসলে গাড়ি ভাড়া লাগে। পরের জমিতে কাজ করি, দিন হাজিরিটা হয় না। অনেক কষ্টে কিছু টাকা জমানোর আসা নিয়ে সঞ্চয় খুলেছিলাম। কিন্তু সেই টাকাই তো পাচ্ছি না। অফিসের কেউ কথা কানে নেয় না, তিন বছর ধরে ঘুরাচ্ছে। ২০২০ সালে আমি মেয়াদ পূর্ণ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি দিনমজুর, টাকা ফেরত না পেলে মামলা করব। আমার কষ্টের টাকা।’

আলমডাঙ্গার ঘোলদাঁড়ি জোড়গাছা গ্রামের রুবিনা খাতুন বলেন, ‘আমার তিন বছর আগে বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। আমি মাঝে মাঝেই আসি। অফিসের ওরা বলে ঢাকা অফিস জানে। আমরা কিছু জানি না। ওরা টাকা দেবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কতদিনে টাকা ফেরত দেওয়ার নিয়ম, আর কতদিন আমাকে অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে?’

একই উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের পারকুলা গ্রামের বাসিন্দা ও বীমা গ্রাহক আব্দুল মালেক বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে ১০ বছর মেয়াদে ১২০ কিস্তিতে ২৪ হাজার টাকা জমা দিই। ২০২১ সালে মেয়াদ শেষ হয়েছে। মোট ৫৪ হাজার ৫২২ টাকা পাবো। কিন্তু এখনো আমাকে ঘোরানো হচ্ছে। কোনো খোঁজখবরই নেই। আর কতদিন জন কামাই করে অফিসে আসতে হবে। এরা ভালো ব্যবহারটা পর্যন্ত করে না।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষক রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমি কোনো রকমে পড়িয়ে সংসার চালাই। একটা বাড়ি করবো ভেবে দীর্ঘদিন থেকে অনেক কষ্টে সীমিত আয়ের মধ্যে থেকে বীমা জমা করছি। তিন বছর আগে আমার বীমার মেয়দ শেষ হয়েছে। আমি কোম্পানির দ্বারে দ্বারে অসহায়ের মতো ঘুরছি। আমার কষ্টের শেষ নেই। কোম্পানির লোকজন কোনো কিছু তোয়াক্কা করে না। আসলে ঠিকমতো কথায় বলে না। শুধু এক কথা, ঢাকা অফিস জানে। কিন্তু আমি কবে টাকা পাবো!’

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চুয়াডাঙ্গা অফিসে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা ডিভিশনের ইনচার্জ আমিনুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। গ্রাহকদেরও অভিযোগ তিনি অফিসে থাকেন না। তবে চুয়াডাঙ্গা সার্ভিস সেন্টারের নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমানকে পাওয়া যায়। তিনি চুয়াডাঙ্গায় নতুন যোগদান করেছেন জানিয়ে প্রথমে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেও মুঠোফোনে অফিসের সিনিয়রের সাথে আলাপ করে শেষ পর্যন্ত কথা বলতে রাজি হন। তবে তিনি চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে পারেননি। ১৭শ জন গ্রাহকের টাকা আটকে আছে জানালেও তাদের সঠিক পরিমাণ বলতে পারেননি। ৯০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নিয়ম থাকলেও চুয়াডাঙ্গা অফিস থেকে দুই থেকে চার মাস পরে কাগজ ঢাকাতে পাঠানো হয় বলেও জানান তিনি। তাঁর দাবি, ঢাকায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে দুর্নীতির কারণেই বীমার মেয়াদ পূর্ণ করা অসংখ্য গ্রাহকের টাকা আটকে আছে।

নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এখানে ১৭শ জনের টাকা আটকে আছে। ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ের কয়েকজনের দুর্নীতির কারণে এমন হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় বর্তমানে আমাদের ৮ হাজার ৮১১ জন বাৎসরিক ও ৮ হাজার ১১৫ জন মাসিক গ্রাহক আছেন। তাদের থেকে মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ওপরে সঞ্চয় আদায় হয়। তবে আমরা হেড অফিসের নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা নিয়ে পাঠিয়ে দিই। বীমার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর হেড অফিস বাকিটা দেখে। গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ হেড অফিস জানে। আমরা কিছু জানি না।’

টাকা দেওয়ার আইনি নিয়ম মানা হয় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, ‘তিন মাসের মধ্যে পরিশোধের নিয়ম। আমরা চেষ্টা করি। তবে গত তিন বছর ধরে সারাদেশেই অনেক গ্রাহকের টাকা আটকে আছে।’

এদিকে, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অনেক গ্রাহকই আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছেন। তারা বলছেন, দ্রুতই আমরা আইনের আশ্রয় নিবো। প্রয়োজনে কঠো আন্দোলনের ঘোষণা দেবো। তবে আমাদের কষ্টের টাকা ফেরত চাই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বীমা দাবির প্রায় ৬ কোটি টাকা নিয়ে চিন্তায় ১৭ শ গ্রাহক

চুয়াডাঙ্গার ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে গ্রাহক হয়রানি চরমে

আপলোড টাইম : ০৯:১৩:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির বীমা দাবি পাচ্ছেন না প্রায় ১৭ শ গ্রাহক। নির্ধারিত নিয়মে সঞ্চয় জমা দিয়ে মেয়াদপূর্তি হওয়ার পরও গ্রাহকদের প্রায় ৪ থেকে ৬ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় ভোগান্তিতে আছেন তারা। প্রতিদিন চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতাল সড়কের ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অফিসে ছুটে আসছেন গ্রাহকরা। তাদের দাবি, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে দেওয়া হবে, পরিশোধ করা হবে বলে টালবাহনা করা হচ্ছে তিন বছর ধরে। তবে চুয়াডাঙ্গা অফিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ের দুর্নীতির কারণে গ্রাহকরা পাচ্ছেন না বীমার টাকা।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গায় প্রায় এক হাজার ৭ শ গ্রাহক ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন মেয়াদে বীমা সঞ্চয় পূর্ণ করেছেন। তাদের মধ্যে প্রত্যেকেই নিয়ম করে চুয়াডাঙ্গা সার্ভিস সেন্টারে এসে খোঁজ নেন মাঝে মাঝেই। অফিসের কর্মকর্তারা কারো কথায় শোনেন না, জানেন না পুরো হিসেব। দ্বারে দ্বারে ঘুরেও প্রতিকার পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। হয়রানি হলেও অর্থ না পাওয়ার ভয়ে আছেন মেয়াদ পূর্ণ করা গ্রাহকরা। গ্রাহক তৈরি করার সময় বিভিন্ন প্রকার সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হলেও, মূল টাকাই ফেরত পাচ্ছেন না তারা।

সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতালের সামনে জমিদার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চুয়াডাঙ্গা সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, মাঝে মাঝে টাকা ফেরত পাবার আকুতি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষেরা আসছেন অফিসটিতে। কর্মকর্তাদের সেদিকে নজর নেই। আশ্বস্তের একটি বাণী ‘ঢাকা অফিস জানে’ বলেই যেন তাদের সব দায়মুক্তি। গ্রাহকদের হয়রানি নিয়ে মোটেও চিন্তা করেন না কেউ।

অফিসে ছুটে এসেছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার যুগিরহুদা গ্রামের আব্বাস আলী। অনেক আগেই মেয়াদ শেষ হয়েছে জানিয়ে আব্বাস আলী বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। বারবার আলমডাঙ্গা থেকে ছুটে চুয়াডাঙ্গায় অফিসে আসলে গাড়ি ভাড়া লাগে। পরের জমিতে কাজ করি, দিন হাজিরিটা হয় না। অনেক কষ্টে কিছু টাকা জমানোর আসা নিয়ে সঞ্চয় খুলেছিলাম। কিন্তু সেই টাকাই তো পাচ্ছি না। অফিসের কেউ কথা কানে নেয় না, তিন বছর ধরে ঘুরাচ্ছে। ২০২০ সালে আমি মেয়াদ পূর্ণ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমি দিনমজুর, টাকা ফেরত না পেলে মামলা করব। আমার কষ্টের টাকা।’

আলমডাঙ্গার ঘোলদাঁড়ি জোড়গাছা গ্রামের রুবিনা খাতুন বলেন, ‘আমার তিন বছর আগে বীমার মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে। আমি মাঝে মাঝেই আসি। অফিসের ওরা বলে ঢাকা অফিস জানে। আমরা কিছু জানি না। ওরা টাকা দেবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার কতদিনে টাকা ফেরত দেওয়ার নিয়ম, আর কতদিন আমাকে অফিসের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে?’

একই উপজেলার কালিদাসপুর ইউনিয়নের পারকুলা গ্রামের বাসিন্দা ও বীমা গ্রাহক আব্দুল মালেক বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে ১০ বছর মেয়াদে ১২০ কিস্তিতে ২৪ হাজার টাকা জমা দিই। ২০২১ সালে মেয়াদ শেষ হয়েছে। মোট ৫৪ হাজার ৫২২ টাকা পাবো। কিন্তু এখনো আমাকে ঘোরানো হচ্ছে। কোনো খোঁজখবরই নেই। আর কতদিন জন কামাই করে অফিসে আসতে হবে। এরা ভালো ব্যবহারটা পর্যন্ত করে না।’

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষক রাজু আহমেদ বলেন, ‘আমি কোনো রকমে পড়িয়ে সংসার চালাই। একটা বাড়ি করবো ভেবে দীর্ঘদিন থেকে অনেক কষ্টে সীমিত আয়ের মধ্যে থেকে বীমা জমা করছি। তিন বছর আগে আমার বীমার মেয়দ শেষ হয়েছে। আমি কোম্পানির দ্বারে দ্বারে অসহায়ের মতো ঘুরছি। আমার কষ্টের শেষ নেই। কোম্পানির লোকজন কোনো কিছু তোয়াক্কা করে না। আসলে ঠিকমতো কথায় বলে না। শুধু এক কথা, ঢাকা অফিস জানে। কিন্তু আমি কবে টাকা পাবো!’

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চুয়াডাঙ্গা অফিসে গিয়ে চুয়াডাঙ্গা ডিভিশনের ইনচার্জ আমিনুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। গ্রাহকদেরও অভিযোগ তিনি অফিসে থাকেন না। তবে চুয়াডাঙ্গা সার্ভিস সেন্টারের নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমানকে পাওয়া যায়। তিনি চুয়াডাঙ্গায় নতুন যোগদান করেছেন জানিয়ে প্রথমে তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করলেও মুঠোফোনে অফিসের সিনিয়রের সাথে আলাপ করে শেষ পর্যন্ত কথা বলতে রাজি হন। তবে তিনি চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে পারেননি। ১৭শ জন গ্রাহকের টাকা আটকে আছে জানালেও তাদের সঠিক পরিমাণ বলতে পারেননি। ৯০ দিনের মধ্যে টাকা পরিশোধের নিয়ম থাকলেও চুয়াডাঙ্গা অফিস থেকে দুই থেকে চার মাস পরে কাগজ ঢাকাতে পাঠানো হয় বলেও জানান তিনি। তাঁর দাবি, ঢাকায় ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয়ে দুর্নীতির কারণেই বীমার মেয়াদ পূর্ণ করা অসংখ্য গ্রাহকের টাকা আটকে আছে।

নির্বাহী অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমাদের এখানে ১৭শ জনের টাকা আটকে আছে। ঢাকায় প্রধান কার্যালয়ের কয়েকজনের দুর্নীতির কারণে এমন হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় বর্তমানে আমাদের ৮ হাজার ৮১১ জন বাৎসরিক ও ৮ হাজার ১১৫ জন মাসিক গ্রাহক আছেন। তাদের থেকে মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকার ওপরে সঞ্চয় আদায় হয়। তবে আমরা হেড অফিসের নিয়ম অনুযায়ী টাকা জমা নিয়ে পাঠিয়ে দিই। বীমার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর হেড অফিস বাকিটা দেখে। গ্রাহকদের টাকা পরিশোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ হেড অফিস জানে। আমরা কিছু জানি না।’

টাকা দেওয়ার আইনি নিয়ম মানা হয় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, ‘তিন মাসের মধ্যে পরিশোধের নিয়ম। আমরা চেষ্টা করি। তবে গত তিন বছর ধরে সারাদেশেই অনেক গ্রাহকের টাকা আটকে আছে।’

এদিকে, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির অনেক গ্রাহকই আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছেন। তারা বলছেন, দ্রুতই আমরা আইনের আশ্রয় নিবো। প্রয়োজনে কঠো আন্দোলনের ঘোষণা দেবো। তবে আমাদের কষ্টের টাকা ফেরত চাই।