ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চুয়াডাঙ্গায় আ.লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে আজাদুল ইসলাম আজাদ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:০১:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় জমকালোভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এ উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ছয়টায় চুয়াডাঙ্গা শহিদ হাসান চত্বরে জাতীয় ও দলীয় পাতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। এসময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

এরপর বিকেল পাঁচটায় আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ব্যানারে পরপর চারটি বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাসের নেতৃত্বে কলেজ রোড থেকে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। এ শোভাযাত্রায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের দেখা যায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ব্যানারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নেতৃত্বে বাদ্যযন্ত্র সহকারে সদর ডাকবাংলো চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর নেতৃত্বে নতুন বাজারে সংগঠনের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা এবং জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ ও সাবেক সদস্য ইমদাদুল হক সজলের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা চারটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে বড় বাজার শহিদ হাসান চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শহিদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, গৌরব ও ঐতিহ্যের উত্তরসূরী বিশ্বের অন্যতম প্রাজ্ঞ রাজনীতিক ও সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা নানা চড়াই-উৎড়াই পার হয়ে স্রোতের উজানে নৌকা ভাসিয়েছেন। এই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়দীপ্ত সংগ্রামে একের সঙ্গে বেঁধেছেন বহুকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী শেখ হাসিনা আজ বাঙালি জাতির জন্য এক প্রত্যয়ের নাম; জাতির সততার শক্তি। তার নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মানেই সংগ্রামী মানুষের প্রতিচ্ছবি। উপ-মহাদেশের রাজনীতিতে গত সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেদের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে দলটি। এ দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা প্রত্যুজ্জ্বল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের যুগান্তকারী নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জয়ী হওয়ার গৌরব রয়েছে আওয়ামী লীগের। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এ দেশের সাধারণ জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস অবিরাম পরিবর্তন ও বিপ্লবের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস অভিন্ন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরও নানা চক্রান্ত হয়েছে, এখনো হচ্ছে। আমরা আজকের সভার মধ্যদিয়ে প্রমাণ করেছি, বড় নেতা কেউ থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের কর্মীদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমরা বলে দিতে চাই, আজ ভয় পাবার দিন নয়, শপথ নেওয়ার দিন। আগামী নির্বাচনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা সমস্ত বাঁধা অতিক্রম করতে পারব ইনশাল্লাহ।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানেই বাঙালির মুক্তির ইতিহাস, আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ইতিহাস। সংগ্রাম ও অর্জনে আওয়ামী লীগের এই ৭৩ বছর কেটেছে বাংলার মানুষের সাথে মানুষের পাশে থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে রয়েছে জনগণের এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ এবং সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তিনি আরও বলেন, সামনে দুর্দিন। ষড়যন্ত্র আবার হচ্ছে। নির্বাচন আসলেই তারা ষড়যন্ত্র করে। আমরা সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সিআইপি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং বিকশিত হওয়ার ইতিহাস একই। তাই আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক। এর অজস্র কারণের মধ্যে অন্যতম কারণটি হলো- অন্য দলগুলোর অধিকাংশই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বাংলার মানুষেকে শাসন করার উদ্দেশ্য নিয়ে, পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল বাঙালি জাতিকে হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ তা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের সমাবেশ প্রমাণ করছে চুয়াডাঙ্গার আওয়ামী লীগ শক্তিশালী। এই মঞ্চ বলে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যাকে নৌকা দেবেন, আমরা তার হয়ে কাজ করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করবেন। তাই আমরা তার উন্নয়নকে মানুষের মাঝে তুলে ধরি।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু। তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই ঘটে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। বাঙালির স্বপ্নপূরণের সারথী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদাই থেকেছে বাঙালি জাতির পাশে। তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকার কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু হবে। কিন্তু এই নির্বাচন যাতে না হয়, সে জন্য বিএনপি-জামায়াত বাধা দিচ্ছে। ষড়যন্ত্র শুরু করছে। আমরা জাতীয় নির্বাচন ব্যর্থ হতে দিবো না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফির পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল মালেক, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মোমিনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান মতি, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাওছার আহম্মেদ বাবলু, পদ্মবিলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, খাদিমপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মন্ডল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ প্রমুখ। এসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় আ.লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে আজাদুল ইসলাম আজাদ

আপলোড টাইম : ১২:০১:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় জমকালোভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এ উপলক্ষে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ছয়টায় চুয়াডাঙ্গা শহিদ হাসান চত্বরে জাতীয় ও দলীয় পাতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। এসময় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালাসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

এরপর বিকেল পাঁচটায় আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ব্যানারে পরপর চারটি বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি আসাদুল হক বিশ্বাসের নেতৃত্বে কলেজ রোড থেকে জেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। এ শোভাযাত্রায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের দেখা যায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ব্যানারে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালার নেতৃত্বে বাদ্যযন্ত্র সহকারে সদর ডাকবাংলো চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ব্যানারে জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপুর নেতৃত্বে নতুন বাজারে সংগঠনের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি শোভাযাত্রা এবং জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ ও সাবেক সদস্য ইমদাদুল হক সজলের নেতৃত্বে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রা চারটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদিক্ষণ শেষে বড় বাজার শহিদ হাসান চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। শহিদ হাসান চত্বরের মুক্তমঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এ আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, গৌরব ও ঐতিহ্যের উত্তরসূরী বিশ্বের অন্যতম প্রাজ্ঞ রাজনীতিক ও সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা নানা চড়াই-উৎড়াই পার হয়ে স্রোতের উজানে নৌকা ভাসিয়েছেন। এই এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়দীপ্ত সংগ্রামে একের সঙ্গে বেঁধেছেন বহুকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী শেখ হাসিনা আজ বাঙালি জাতির জন্য এক প্রত্যয়ের নাম; জাতির সততার শক্তি। তার নেতৃত্বেই বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা তথা আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ মানেই সংগ্রামী মানুষের প্রতিচ্ছবি। উপ-মহাদেশের রাজনীতিতে গত সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজেদের অপরিহার্যতা প্রমাণ করেছে দলটি। এ দেশের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগের ভূমিকা প্রত্যুজ্জ্বল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, সত্তরের যুগান্তকারী নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জয়ী হওয়ার গৌরব রয়েছে আওয়ামী লীগের। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এ দেশের সাধারণ জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাস অবিরাম পরিবর্তন ও বিপ্লবের ইতিহাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও বাংলাদেশের ইতিহাস অভিন্ন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পরও নানা চক্রান্ত হয়েছে, এখনো হচ্ছে। আমরা আজকের সভার মধ্যদিয়ে প্রমাণ করেছি, বড় নেতা কেউ থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের কর্মীদের মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। আমরা বলে দিতে চাই, আজ ভয় পাবার দিন নয়, শপথ নেওয়ার দিন। আগামী নির্বাচনের জন্য আপনারা প্রস্তুত হন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা সমস্ত বাঁধা অতিক্রম করতে পারব ইনশাল্লাহ।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাস। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানেই বাঙালির মুক্তির ইতিহাস, আওয়ামী লীগের ইতিহাস মানেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ইতিহাস। সংগ্রাম ও অর্জনে আওয়ামী লীগের এই ৭৩ বছর কেটেছে বাংলার মানুষের সাথে মানুষের পাশে থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে রয়েছে জনগণের এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ এবং সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। তিনি আরও বলেন, সামনে দুর্দিন। ষড়যন্ত্র আবার হচ্ছে। নির্বাচন আসলেই তারা ষড়যন্ত্র করে। আমরা সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করব।
আলোচনা সভায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য বাবু দিলীপ কুমার আগরওয়ালা সিআইপি বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস, বেড়ে ওঠার ইতিহাস এবং বিকশিত হওয়ার ইতিহাস একই। তাই আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক। এর অজস্র কারণের মধ্যে অন্যতম কারণটি হলো- অন্য দলগুলোর অধিকাংশই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বাংলার মানুষেকে শাসন করার উদ্দেশ্য নিয়ে, পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগের জন্মই হয়েছিল বাঙালি জাতিকে হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এবং জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ তা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আজকের সমাবেশ প্রমাণ করছে চুয়াডাঙ্গার আওয়ামী লীগ শক্তিশালী। এই মঞ্চ বলে দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রী যাকে নৌকা দেবেন, আমরা তার হয়ে কাজ করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত করবেন। তাই আমরা তার উন্নয়নকে মানুষের মাঝে তুলে ধরি।’

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু। তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই ঘটে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা বাঙালি জাতির সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। বাঙালির স্বপ্নপূরণের সারথী হয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সর্বদাই থেকেছে বাঙালি জাতির পাশে। তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা পরপর তিনবার ক্ষমতায় থাকার কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু হবে। কিন্তু এই নির্বাচন যাতে না হয়, সে জন্য বিএনপি-জামায়াত বাধা দিচ্ছে। ষড়যন্ত্র শুরু করছে। আমরা জাতীয় নির্বাচন ব্যর্থ হতে দিবো না।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শফিকুল ইসলাম শফির পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল মালেক, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মোমিনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিয়ার রহমান মতি, জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাওছার আহম্মেদ বাবলু, পদ্মবিলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের বিশ্বাস, খাদিমপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মন্ডল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জানিফ প্রমুখ। এসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।