ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি নির্বাচনে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩
  • / ২৬ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:
দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয়। দলের হাইকমান্ডের কঠোর নির্দেশনার পরও থেমে নেই তারা। এতে তৃণমূলে প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীরা একে অন্যের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এমন অবস্থায় একরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন নেতারা। এদিকে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের মতোই দলের বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করে এখনই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থায় যাচ্ছে না দলটি। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহীরাই।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাবি, স্থানীয় রাজনীতিতে গ্রুপিং এবং কেন্দ্রে নাম পাঠানোর সময় স্বজনপ্রীতি ও মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। এসব নানা কারণে তারা বঞ্চিত হয়েছেন। এ কারণে নিজেদের ‘অধিক জনপ্রিয়’ দাবি করে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন তাঁরা। জীবননগর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিকেল চারটা পর্যন্ত ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। আজ সোমবার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। জানা গেছে, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে মোট ভোটার ২২ হাজার ৯৫০ জন। চেয়ারম্যান পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র কিনলেও জমা দেন ৯ জন। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী মির্জা লিটন বলেন, ‘গতবার আমি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলাম। গতবার দলীয় কোন্দলে আমাকে জোর করে ২৩ ভোটে ফেল করে দেওয়া হয়েছিল। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এবারও আমাকে ফেল করানোর জন্য চেষ্টা করছেন বিদ্রোহী প্রার্থী আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারসহ আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। বিষয়টি আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের একাধিকবার বলেছি, তারা এখন পর্যন্ত দলীয় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’

জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া আছে। সুতরাং কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নিতে হয়। চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া যায় না। কিন্তু কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে বা সংঘর্ষে জড়ায়, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একক প্রার্থী নিশ্চিতে কাজ করছি। এখনও সময় আছে। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কেউ চাইলে সরে দাঁড়াতে পারে।’

আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মির্র্জা লিটনককে ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন গতবার ইউপি নির্বাচনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার, সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফিরোজ আহাম্মদ, সিনিয়র সহসভাপতি মকলেচুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান আলী ও শেখ আসাউল ইসলাম। এছাড়াও রয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতিয়ার রহমান ও জামায়াত নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন।

জীবননগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মেজর আহম্মেদ বলেন, আগামী ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র কিনলেও জমা দিয়েছেন ৯ জন। আজ সোমবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। ২৫ তারিখ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২৬ তারিখে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি নির্বাচনে ৯ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা

আপলোড টাইম : ১০:০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩

জীবননগর অফিস:
দীর্ঘ ৭ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয়। দলের হাইকমান্ডের কঠোর নির্দেশনার পরও থেমে নেই তারা। এতে তৃণমূলে প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীরা একে অন্যের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এমন অবস্থায় একরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন নেতারা। এদিকে, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা নৌকার বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আগের মতোই দলের বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করে এখনই তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থায় যাচ্ছে না দলটি। ফলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন বিদ্রোহীরাই।

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাবি, স্থানীয় রাজনীতিতে গ্রুপিং এবং কেন্দ্রে নাম পাঠানোর সময় স্বজনপ্রীতি ও মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে। এসব নানা কারণে তারা বঞ্চিত হয়েছেন। এ কারণে নিজেদের ‘অধিক জনপ্রিয়’ দাবি করে মাঠে সক্রিয় রয়েছেন তাঁরা। জীবননগর উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিকেল চারটা পর্যন্ত ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। আজ সোমবার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। জানা গেছে, আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে মোট ভোটার ২২ হাজার ৯৫০ জন। চেয়ারম্যান পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র কিনলেও জমা দেন ৯ জন। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে ৪৮ জন এবং সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী মির্জা লিটন বলেন, ‘গতবার আমি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলাম। গতবার দলীয় কোন্দলে আমাকে জোর করে ২৩ ভোটে ফেল করে দেওয়া হয়েছিল। এবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। এবারও আমাকে ফেল করানোর জন্য চেষ্টা করছেন বিদ্রোহী প্রার্থী আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারসহ আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ। বিষয়টি আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের একাধিকবার বলেছি, তারা এখন পর্যন্ত দলীয় কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।’

জীবননগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া আছে। সুতরাং কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এটা একটা প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে নিতে হয়। চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে নেওয়া যায় না। কিন্তু কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে বা সংঘর্ষে জড়ায়, তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একক প্রার্থী নিশ্চিতে কাজ করছি। এখনও সময় আছে। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কেউ চাইলে সরে দাঁড়াতে পারে।’

আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী মির্র্জা লিটনককে ঠেকাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন গতবার ইউপি নির্বাচনের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তার, সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফিরোজ আহাম্মদ, সিনিয়র সহসভাপতি মকলেচুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা হাসান আলী ও শেখ আসাউল ইসলাম। এছাড়াও রয়েছেন বিএনপির স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আতিয়ার রহমান ও জামায়াত নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন।

জীবননগর উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মেজর আহম্মেদ বলেন, আগামী ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে আন্দুলবাড়ীয়া ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র কিনলেও জমা দিয়েছেন ৯ জন। আজ সোমবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। ২৫ তারিখ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২৬ তারিখে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।