ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধারের টাকা আদায়ে ছাগল ব্যবসায়ীর হালখাতা!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৮:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩
  • / ৪১ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
হালখাতা শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরা করলেও এবার ঝিনাইদহে ধার দেওয়া টাকা আদায়ে হালখাতা করেছেন এক ছাগল ব্যবসায়ী। টাকা পরিশোধ করার পর দেওয়া হয় খিচুড়ি আর ডিম ভাজি। গত শনিবার বিকেলে ব্যতিক্রমী এমন হালখাতার আয়োজন হয়েছিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া গ্রামে। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম দেড় বছর ধরে দেওয়া ধারের টাকা আদায় করতে এমন হালখাতার আয়োজন করেন।

সাইফুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা জমান তিনি। বিদেশ যেতে না পারায় টাকাগুলো তাঁর কাছেই জমা ছিল। গত দেড় বছর ধরে তাঁর সেই জমানো টাকা ধার দিয়েছেন তিনি। কেউ বিপদে পড়ে টাকা ধার চাইতে এলে ফেরাননি তিনি। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৫ গ্রামের ৭৪ জন ব্যক্তির ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ধার দিয়েছেন তিনি। পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে অনেক সময় পান না দেনাদারকে। আর এতগুলো লোকের কাছে দিনের পর দিন না গিয়ে এমন হালখাতার আয়োজন করেন তিনি। ৩ হাজার ৮ শ টাকা খরচ করে খিচুড়ি আর ডিমভাজি করে দেওয়া হয় হালখাতায় আসা দেনাদারদের।
মিল্টন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার টাকার খুব দরকার ছিল। আমি সাইফুলের কাছে গিয়েছিলাম। উনার কাছ থেকে ৩৫’শ টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেই টাকা আজ পরিশোধ করলাম।’ জসিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, সাইফুল ইসলাম খুব ভালো মনে মানুষ। কেউ তার কাছে গেলে ফিরে আসে না। যদি সাইফুলের কাছে টাকা থাকে, তাহলে দেয়। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে অনেকেই উপকার পেয়েছে। তিনি খুব ভালো মনের মানুষ। রামনগর গ্রামের জহির রায়হান বলেন, ‘আমার জীবনে এমন ব্যতিক্রমী হালখাতার কথা শুনিনি। আজ দেখলাম টাকা ধারের হালখাতা।’

এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার তো কোনো দোকান-পাট নেই। আমি মানুষের টাকা ধার দিয়েছি, যাতে তাদের উপকার হয়। টাকা ধার দিতে দিতে ব্যবসা করব সেই পুঁজিতেও কম পড়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে টাকা চাওয়া সম্ভব না, তাই হালখাতার আয়োজন করেছি। আমার টাকার কোনো সুদ-লাভ নেই। আমার ছাগল ব্যবসার জন্য টাকার দরকার, তাই টাকাগুলো ফেরত নিচ্ছি। পরে আবার যদি কেউ চায়, তাদের আবার দেব। হালখাতায় ৩৮’শ টাকা খরচ করে খিচুড়ি আর ডিম ভাজি করেছি। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৫ গ্রামে ৭৪ জন লোকের কাছে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পেতাম। হালখাতায় ৪৭ জন লোক এসেছিল, আর আমার টাকা আদায় হয়েছে ১ লাখ টাকা।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ধারের টাকা আদায়ে ছাগল ব্যবসায়ীর হালখাতা!

আপলোড টাইম : ০৯:৫৮:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুন ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
হালখাতা শুধুমাত্র ব্যবসায়ীরা করলেও এবার ঝিনাইদহে ধার দেওয়া টাকা আদায়ে হালখাতা করেছেন এক ছাগল ব্যবসায়ী। টাকা পরিশোধ করার পর দেওয়া হয় খিচুড়ি আর ডিম ভাজি। গত শনিবার বিকেলে ব্যতিক্রমী এমন হালখাতার আয়োজন হয়েছিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়ীয়া গ্রামে। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের ছাগল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম দেড় বছর ধরে দেওয়া ধারের টাকা আদায় করতে এমন হালখাতার আয়োজন করেন।

সাইফুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর আগে বিদেশ যাওয়ার জন্য চার লাখ টাকা জমান তিনি। বিদেশ যেতে না পারায় টাকাগুলো তাঁর কাছেই জমা ছিল। গত দেড় বছর ধরে তাঁর সেই জমানো টাকা ধার দিয়েছেন তিনি। কেউ বিপদে পড়ে টাকা ধার চাইতে এলে ফেরাননি তিনি। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৫ গ্রামের ৭৪ জন ব্যক্তির ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ধার দিয়েছেন তিনি। পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গেলে অনেক সময় পান না দেনাদারকে। আর এতগুলো লোকের কাছে দিনের পর দিন না গিয়ে এমন হালখাতার আয়োজন করেন তিনি। ৩ হাজার ৮ শ টাকা খরচ করে খিচুড়ি আর ডিমভাজি করে দেওয়া হয় হালখাতায় আসা দেনাদারদের।
মিল্টন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার টাকার খুব দরকার ছিল। আমি সাইফুলের কাছে গিয়েছিলাম। উনার কাছ থেকে ৩৫’শ টাকা ধার নিয়েছিলাম। সেই টাকা আজ পরিশোধ করলাম।’ জসিম নামের এক ব্যক্তি বলেন, সাইফুল ইসলাম খুব ভালো মনে মানুষ। কেউ তার কাছে গেলে ফিরে আসে না। যদি সাইফুলের কাছে টাকা থাকে, তাহলে দেয়। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে অনেকেই উপকার পেয়েছে। তিনি খুব ভালো মনের মানুষ। রামনগর গ্রামের জহির রায়হান বলেন, ‘আমার জীবনে এমন ব্যতিক্রমী হালখাতার কথা শুনিনি। আজ দেখলাম টাকা ধারের হালখাতা।’

এ ব্যাপারে সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার তো কোনো দোকান-পাট নেই। আমি মানুষের টাকা ধার দিয়েছি, যাতে তাদের উপকার হয়। টাকা ধার দিতে দিতে ব্যবসা করব সেই পুঁজিতেও কম পড়েছে। প্রত্যেকের বাড়িতে গিয়ে টাকা চাওয়া সম্ভব না, তাই হালখাতার আয়োজন করেছি। আমার টাকার কোনো সুদ-লাভ নেই। আমার ছাগল ব্যবসার জন্য টাকার দরকার, তাই টাকাগুলো ফেরত নিচ্ছি। পরে আবার যদি কেউ চায়, তাদের আবার দেব। হালখাতায় ৩৮’শ টাকা খরচ করে খিচুড়ি আর ডিম ভাজি করেছি। কুমড়াবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৫ গ্রামে ৭৪ জন লোকের কাছে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা পেতাম। হালখাতায় ৪৭ জন লোক এসেছিল, আর আমার টাকা আদায় হয়েছে ১ লাখ টাকা।’