ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভিযুক্ত রাঙা ভাবিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুন ২০২৩
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গায় সাবেক মহিলা কাউন্সিলর সামসাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবি কর্তৃক আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষক সমাজের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত ঞয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। শিক্ষক নুরুল ইসলাম দিপুর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলার হাটবোয়ালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার।

তিনি বলেন, ‘সাবেক মহিলা কাউন্সিলার যে কাজ করেছে, তা সভ্য সমাজের কাজ নয়। একজন অসভ্য মহিলা ছাড়া এমন বিবেক বর্জিত কাজ কেউ করতে পারে না। প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান কখন আসবে সে কৈফিয়ত তো তার কাছে দেবার কথা নয়, একজন অভিভাবকের দায়িত্ব কি শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা? অভিভাবক স্কুলে আসবে লেখাপড়ার বিষয়ে খোঁজখবর নেবে। কিন্তু সামসাদ রানু স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের ওপর চাড়াও হয়। চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মেরে আহত করে। এবং স্যান্ডেল খুলে মারতে চেষ্টা করে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহামান, মশিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম, নাশির উদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমার, আব্দুল হামিদ, নুরুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, সুপার আক্তারুজ্জামান, শংকর পাত্র, তাইজাল হোসেন, রহমান মুকুল, আব্দুল হান্নান, আনন্দ কুমার শীলসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশ প্রশাসনের ওপর খুশি, যে তারা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে রানু ওরফে রাঙা ভাবিকে গ্রেপ্তার করেছে। সরকারি কাজে বাঁধা ও প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মামলা নিয়ে অভিযুক্তকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। তবে তিনি জামিন পেয়ে আবার যদি শিক্ষক সমাজকে গালিগালাজ করে আমরা তা মেনে নেব না। এসময় বক্তরা সামসাদ রানুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে শিক্ষকবৃন্দ আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রনি আলম নূরের নিকট স্বারকলিপি পেশ করেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার দিনও ছিল। ফলে ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে ও আশেপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এরই মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অর্কর মা সামশাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবি বিদ্যালয়ে এসে তার ছেলেকে মাঠে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রেগে যান। এসময় তিনি প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানের শার্টের কলার ধরে টানতে-টানতে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে দিয়ে যান। শিক্ষক রবিউল ইসলাম শার্টের কলার ছেড়ে দিতে বললে রাঙা ভাবি তাকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন এবং পায়ের থেকে স্যান্ডেল খুলেও মারতে চেষ্টা করেন। এসময় বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা ছুটে এসে প্রধান শিক্ষককে সামশাদ রানুর হাত থেকে উদ্ধার করেন। রাত আটটার দিকে মারধরের প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান আলমডাঙ্গা থানায় রাঙা ভাবির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ রাত সাড়ে আটটার দিকে আসামি সামসাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবিকে গ্রেপ্তার করে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

অভিযুক্ত রাঙা ভাবিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

আপলোড টাইম : ০৮:২২:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুন ২০২৩

আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গায় সাবেক মহিলা কাউন্সিলর সামসাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবি কর্তৃক আলমডাঙ্গা সরকারি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনায় শিক্ষক সমাজের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যায়ের প্রধান শিক্ষকের অফিসকক্ষে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত ঞয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান। শিক্ষক নুরুল ইসলাম দিপুর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলার হাটবোয়ালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাস্টার।

তিনি বলেন, ‘সাবেক মহিলা কাউন্সিলার যে কাজ করেছে, তা সভ্য সমাজের কাজ নয়। একজন অসভ্য মহিলা ছাড়া এমন বিবেক বর্জিত কাজ কেউ করতে পারে না। প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান কখন আসবে সে কৈফিয়ত তো তার কাছে দেবার কথা নয়, একজন অভিভাবকের দায়িত্ব কি শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা? অভিভাবক স্কুলে আসবে লেখাপড়ার বিষয়ে খোঁজখবর নেবে। কিন্তু সামসাদ রানু স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষকের ওপর চাড়াও হয়। চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মেরে আহত করে। এবং স্যান্ডেল খুলে মারতে চেষ্টা করে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক আতিয়ার রহামান, মশিউর রহমান, রফিকুল ইসলাম, নাশির উদ্দিন, সিদ্দিকুর রহমার, আব্দুল হামিদ, নুরুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, সুপার আক্তারুজ্জামান, শংকর পাত্র, তাইজাল হোসেন, রহমান মুকুল, আব্দুল হান্নান, আনন্দ কুমার শীলসহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ। বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা পুলিশ প্রশাসনের ওপর খুশি, যে তারা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিয়ে রানু ওরফে রাঙা ভাবিকে গ্রেপ্তার করেছে। সরকারি কাজে বাঁধা ও প্রধান শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনায় মামলা নিয়ে অভিযুক্তকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। তবে তিনি জামিন পেয়ে আবার যদি শিক্ষক সমাজকে গালিগালাজ করে আমরা তা মেনে নেব না। এসময় বক্তরা সামসাদ রানুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে শিক্ষকবৃন্দ আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রনি আলম নূরের নিকট স্বারকলিপি পেশ করেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষা চলছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষার দিনও ছিল। ফলে ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে ও আশেপাশে দাঁড়িয়ে ছিল। এরই মধ্যে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র অর্কর মা সামশাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবি বিদ্যালয়ে এসে তার ছেলেকে মাঠে রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রেগে যান। এসময় তিনি প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানের শার্টের কলার ধরে টানতে-টানতে বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে দিয়ে যান। শিক্ষক রবিউল ইসলাম শার্টের কলার ছেড়ে দিতে বললে রাঙা ভাবি তাকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করেন এবং পায়ের থেকে স্যান্ডেল খুলেও মারতে চেষ্টা করেন। এসময় বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা ছুটে এসে প্রধান শিক্ষককে সামশাদ রানুর হাত থেকে উদ্ধার করেন। রাত আটটার দিকে মারধরের প্রতিকার চেয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান আলমডাঙ্গা থানায় রাঙা ভাবির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে থানা পুলিশ রাত সাড়ে আটটার দিকে আসামি সামসাদ রানু ওরফে রাঙা ভাবিকে গ্রেপ্তার করে।