ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দর্শনায় পৌঁছেছে ভারতের উপহারের ২০টি রেল ইঞ্জিন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৪৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩
  • / ৩৮ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা অফিস:
বাংলাদেশে পৌঁছেছে ভারত সরকারের উপহার দেওয়া পুরাতন ২০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া উপহার রেলের ব্রডগেজ লাইনের ডাব্লু ডি এমথ্রিডি মডেলের ইঞ্জিনগুলো গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক স্টেশনে পৌঁছায়। বাংলাদেশের পক্ষে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিনিয়র প্রকৌশলী শাহেদ জামান। আর ভারতের পক্ষে হস্তান্তর করেন রেলওয়ের ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর অশোক কুমার বিশ্বাস। এর আগে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছলে ডিজেল চালিত ইঞ্জিনগুলো ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

গতকাল ভাচ্যুয়ালি রেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভারতের পক্ষে বক্তব্য দেন রেলওয়ে কমিউনিকেশন, ইলেকট্রনিক্স ও ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আর বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, ‘এ সরকারের উন্নয়ন দেখে বিরোধী দল ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশে রেলওয়েতে কোনো ভোগান্তি থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ভারতের এ উপহার ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে এবং বাংলাদেশ মনে রাখবে। ২০টি রেলের ইঞ্জিন উপহার দেওয়ায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক আরও গাঢ় হলো। বাংলাদেশ আরেকধাপ উন্নয়নের দিকে পা বাড়ালো।’

এ সময় দিল্লীতে উপস্থিত ছিলেন ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নুরুল ইসলাম, ঢাকা রেলভবনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে রেলওয়ে সচিব ড. হুমায়ুন কবির। বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের অংশীদারের স্বাক্ষর হিসেবে ভারত সরকার বাংলাদেশ রেলওয়ে উন্নয়নের জন্য ২০ টি রেল ইঞ্জিন উপহার দেয়।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সম্পাদনের পর ব্রডগেজ ইঞ্জিনগুলোর সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত (স্পেসিফিকেশন) যাচাই, আমদানি ছাড়পত্র গ্রহণ, কাস্টমস ডিউটি, ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশে আনা হয়েছে। এই ২০টি ইঞ্জিন দর্শনা স্টেশন হয়ে আজ সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় যেয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর চালু করা হবে। এই ইঞ্জিন গুলো মালবাহী ট্রেন, বিভিন্ন নতুন ট্রেনে চালু করা হবে। একই সাথে আমাদের যেসব ট্রেনে ইঞ্জিন ঘাটতি রয়েছে সেই ঘাটতি গুলো পুরণ করা যাবে।

দর্শনায় রেল ইঞ্জিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মন্জু, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল হামিদ রেজা, দামুড়দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তারেক, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (পাকশী) চিপ কমান্ডেন্ট আশরাফুল ইসলাম, কমান্ডের মোর্শেদ আলম, রেলওয়ে পশ্চিম জোনের চিপ অফ প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী কুদরত ই- খুদা, চিপ অপরেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, চিপ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস, প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক, চিপ সিগন্যাল টেলিকমিউনিকেসন মিজানুর রহমান, চিপ কমান্ডেন্ট আসাবুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী রফিকুল ইসলাম, পরিচালক লোকো তসলিম আহমেদ, বিভাগীয় রেলের ব্যবস্থাপক খান শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ভারত থেকে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে আসে। বর্তমানে সেগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। গত বছরের ১ জুন নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের রেলমন্ত্রীর এক বৈঠকে ২০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন বাংলাদেশকে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে ২০টি ইঞ্জিনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনায় পৌঁছেছে ভারতের উপহারের ২০টি রেল ইঞ্জিন

আপলোড টাইম : ০৭:৪৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ মে ২০২৩

দর্শনা অফিস:
বাংলাদেশে পৌঁছেছে ভারত সরকারের উপহার দেওয়া পুরাতন ২০টি ব্রডগেজ রেল ইঞ্জিন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া উপহার রেলের ব্রডগেজ লাইনের ডাব্লু ডি এমথ্রিডি মডেলের ইঞ্জিনগুলো গতকাল মঙ্গলবার বিকেল চারটায় চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক স্টেশনে পৌঁছায়। বাংলাদেশের পক্ষে ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ করেন পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিনিয়র প্রকৌশলী শাহেদ জামান। আর ভারতের পক্ষে হস্তান্তর করেন রেলওয়ের ট্র্যাফিক ইন্সপেক্টর অশোক কুমার বিশ্বাস। এর আগে দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছলে ডিজেল চালিত ইঞ্জিনগুলো ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

গতকাল ভাচ্যুয়ালি রেল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভারতের পক্ষে বক্তব্য দেন রেলওয়ে কমিউনিকেশন, ইলেকট্রনিক্স ও ইনফরমেশন টেকনোলজি মন্ত্রী শ্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আর বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, ‘এ সরকারের উন্নয়ন দেখে বিরোধী দল ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের মধ্যে বাংলাদেশে রেলওয়েতে কোনো ভোগান্তি থাকবে না।’ তিনি আরও বলেন, ভারতের এ উপহার ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকবে এবং বাংলাদেশ মনে রাখবে। ২০টি রেলের ইঞ্জিন উপহার দেওয়ায় বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক আরও গাঢ় হলো। বাংলাদেশ আরেকধাপ উন্নয়নের দিকে পা বাড়ালো।’

এ সময় দিল্লীতে উপস্থিত ছিলেন ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নুরুল ইসলাম, ঢাকা রেলভবনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে রেলওয়ে সচিব ড. হুমায়ুন কবির। বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বের অংশীদারের স্বাক্ষর হিসেবে ভারত সরকার বাংলাদেশ রেলওয়ে উন্নয়নের জন্য ২০ টি রেল ইঞ্জিন উপহার দেয়।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানান, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সম্পাদনের পর ব্রডগেজ ইঞ্জিনগুলোর সুনির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বিস্তারিত (স্পেসিফিকেশন) যাচাই, আমদানি ছাড়পত্র গ্রহণ, কাস্টমস ডিউটি, ভ্যাট ও ট্যাক্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশে আনা হয়েছে। এই ২০টি ইঞ্জিন দর্শনা স্টেশন হয়ে আজ সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় লোকোমোটিভ কারখানায় যেয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর চালু করা হবে। এই ইঞ্জিন গুলো মালবাহী ট্রেন, বিভিন্ন নতুন ট্রেনে চালু করা হবে। একই সাথে আমাদের যেসব ট্রেনে ইঞ্জিন ঘাটতি রয়েছে সেই ঘাটতি গুলো পুরণ করা যাবে।

দর্শনায় রেল ইঞ্জিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মন্জু, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. নাজমুল হামিদ রেজা, দামুড়দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মুনছুর বাবু, দর্শনা পৌর মেয়র আতিয়ার রহমান হাবু, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু তারেক, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (পাকশী) চিপ কমান্ডেন্ট আশরাফুল ইসলাম, কমান্ডের মোর্শেদ আলম, রেলওয়ে পশ্চিম জোনের চিপ অফ প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী কুদরত ই- খুদা, চিপ অপরেটিং সুপারিনটেনডেন্ট আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, চিপ কমার্শিয়াল ম্যানেজার সুজিত কুমার বিশ্বাস, প্রধান প্রকৌশলী আসাদুল হক, চিপ সিগন্যাল টেলিকমিউনিকেসন মিজানুর রহমান, চিপ কমান্ডেন্ট আসাবুল ইসলাম, প্রধান নির্বাহী রফিকুল ইসলাম, পরিচালক লোকো তসলিম আহমেদ, বিভাগীয় রেলের ব্যবস্থাপক খান শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ, দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ভারত থেকে ১০টি ব্রডগেজ লোকোমোটিভ অনুদান হিসেবে আসে। বর্তমানে সেগুলো বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। গত বছরের ১ জুন নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের রেলমন্ত্রীর এক বৈঠকে ২০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন বাংলাদেশকে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে ২০টি ইঞ্জিনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।