ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিসি-এসপির কাছে অভিযোগ দিয়েও কমেনি সুদখোর রফির অত্যাচার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫৩:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

সুদখোর রফি। ঝিনাইদহের এক অত্যাচারি আলোচিত নাম। এলাকাবাসী বিচারের আশায় অভিযোগ করেছিলেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা সমবায় অফিস তদন্ত করে সত্যতা পান। কিন্তু কিছুই হয়নি। বীরদর্পে মহাজনী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন রফি। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ আর অসন্তোষ ধুমায়িত হচ্ছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের বিষয়খালি বাজারে রান ক্ষুদ্র ঋণদান ও সমবায় সমিতি অবধৈভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের ফাঁকা চেক নিয়ে ঋণের মেয়াদ শেষ হবার আগেই গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করে আসছিলেন রফি। এর আগে প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে জেলা সমবায় অফিস গণশুনানির আয়োজন করে। উক্ত শুনানিতে ভুক্তভোগী পরিবার তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানির কথা তুলে ধরে লিখিত জবানবন্দি দেন। শুনানির দিন রফির ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে উপস্থিত অভিযোগকারীদের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। পরে ডিবির একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে শুনানির আগের রাতে দুজন অভিযোগকারীর বাড়ি গিয়ে নগদ অর্থ দিয়ে এবং সুদ মওকুফের কথা বলে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে সমবায় অফিসারদের জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে আসে রফির লাঠিয়াল বাহিনী।

এর আগে রান ক্ষুদ্রঋণ ও সমবায় সমিতির মালিক রফির বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাতে খবর প্রচার হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত রফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো শঙ্কায় দিন পার করছে। প্রতিদিন বিভিন্নভাবে অভিযোগকারীদের অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রফি ও তার লোকজন। অভিযোগে প্রকাশ, নলডাঙ্গা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের আক্তরুজ্জামান চাষের জন্য রফির কাছ থেকে ঋণ নেয়। ঋণের ৫০ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা সুদসহ ফেরৎ দিলে রফি সুদ না পেয়ে রান সমিতির অফিসে ডেকে মারধর করে। পরে লজ্জায় মুখ দেখোতে না পরে বিষপানে আত্যহত্যা করে আক্তারুজ্জামান।

কালিগঞ্জ চাপালিয়া গ্রামের স্বপন ঘোষ সুদের টাকা দিতে না পারায় পৈতৃক সম্পত্তির পাওয়ার অব অ্যার্টানি করে দখল করে নেয়। যার কারণে হার্ট অ্যাটাকে স্বপ্ন ঘোষ মারা যায়। ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের বাসীন্দা স্বপ্না খাতুন স্বামীর ব্যবসার জন্য রফির কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। পরিশোধের মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু রফি তার আগেই ৫ মাসের মাথায় মামলা করে বসে। সুদখোর রফি যেদিন স্বপ্না খাতুনের নামে মামলা করেন, সেদিনেও তার কাছ থেকে ঋণের কিস্তি গ্রহণ করেন। এভাবে প্রায় দেড় শত নিম্ন আয়ের পরিবারকে ঋণের ফাঁদে ফেলে রফি মামলার জালে আটকে নিত্যদিন অত্যাচার নির্যাতন করে গেলেও বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে। সুদখোর রফির অত্যাচারে এ সকল পরিবার এখন অজানা আতঙ্কে দিন পার করছে।

বিষয়টি নিয়ে কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঋণ নিয়ে তার বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি সমবায় সমিতি চালাচ্ছেন। আইন মেনেই সবকিছু করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ডিসি-এসপির কাছে অভিযোগ দিয়েও কমেনি সুদখোর রফির অত্যাচার

আপলোড টাইম : ০৮:৫৩:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ মে ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:

সুদখোর রফি। ঝিনাইদহের এক অত্যাচারি আলোচিত নাম। এলাকাবাসী বিচারের আশায় অভিযোগ করেছিলেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা সমবায় অফিস তদন্ত করে সত্যতা পান। কিন্তু কিছুই হয়নি। বীরদর্পে মহাজনী ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন রফি। এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ আর অসন্তোষ ধুমায়িত হচ্ছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহের বিষয়খালি বাজারে রান ক্ষুদ্র ঋণদান ও সমবায় সমিতি অবধৈভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও ব্যাংকের ফাঁকা চেক নিয়ে ঋণের মেয়াদ শেষ হবার আগেই গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রাহকদের হয়রানি করে আসছিলেন রফি। এর আগে প্রায় শতাধিক ভুক্তভোগী পরিবার লিখিত অভিযোগ জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করেন। জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে জেলা সমবায় অফিস গণশুনানির আয়োজন করে। উক্ত শুনানিতে ভুক্তভোগী পরিবার তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানির কথা তুলে ধরে লিখিত জবানবন্দি দেন। শুনানির দিন রফির ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী দিয়ে উপস্থিত অভিযোগকারীদের ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে। পরে ডিবির একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগে শুনানির আগের রাতে দুজন অভিযোগকারীর বাড়ি গিয়ে নগদ অর্থ দিয়ে এবং সুদ মওকুফের কথা বলে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে সমবায় অফিসারদের জানানোর জন্য হুমকি দিয়ে আসে রফির লাঠিয়াল বাহিনী।

এর আগে রান ক্ষুদ্রঋণ ও সমবায় সমিতির মালিক রফির বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাতে খবর প্রচার হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত রফির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলো শঙ্কায় দিন পার করছে। প্রতিদিন বিভিন্নভাবে অভিযোগকারীদের অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে রফি ও তার লোকজন। অভিযোগে প্রকাশ, নলডাঙ্গা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামের আক্তরুজ্জামান চাষের জন্য রফির কাছ থেকে ঋণ নেয়। ঋণের ৫০ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা সুদসহ ফেরৎ দিলে রফি সুদ না পেয়ে রান সমিতির অফিসে ডেকে মারধর করে। পরে লজ্জায় মুখ দেখোতে না পরে বিষপানে আত্যহত্যা করে আক্তারুজ্জামান।

কালিগঞ্জ চাপালিয়া গ্রামের স্বপন ঘোষ সুদের টাকা দিতে না পারায় পৈতৃক সম্পত্তির পাওয়ার অব অ্যার্টানি করে দখল করে নেয়। যার কারণে হার্ট অ্যাটাকে স্বপ্ন ঘোষ মারা যায়। ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুরের বাসীন্দা স্বপ্না খাতুন স্বামীর ব্যবসার জন্য রফির কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। পরিশোধের মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু রফি তার আগেই ৫ মাসের মাথায় মামলা করে বসে। সুদখোর রফি যেদিন স্বপ্না খাতুনের নামে মামলা করেন, সেদিনেও তার কাছ থেকে ঋণের কিস্তি গ্রহণ করেন। এভাবে প্রায় দেড় শত নিম্ন আয়ের পরিবারকে ঋণের ফাঁদে ফেলে রফি মামলার জালে আটকে নিত্যদিন অত্যাচার নির্যাতন করে গেলেও বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে। সুদখোর রফির অত্যাচারে এ সকল পরিবার এখন অজানা আতঙ্কে দিন পার করছে।

বিষয়টি নিয়ে কেসমত গড়িয়ালা গ্রামের রফিকুল ইসলাম রফির বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঋণ নিয়ে তার বিরুদ্ধে উল্টো মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তিনি সমবায় সমিতি চালাচ্ছেন। আইন মেনেই সবকিছু করা হচ্ছে।