প্রতিবেদক, দামুড়হুদা:

‘চলো যাই যুদ্ধে, মাদকের বিরুদ্ধে’ স্লোগানে দামুড়হুদায় মাদক বিরোধী প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা তিনটার দিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় দামুড়হুদা উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামে মাঠে মাদক বিরোধী এ প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রোকসানা মিতার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ফুটবল একটি জনপ্রিয় খেলা। মাদকের ওপর আসক্তি কমানোর জন্যই মূলত এই মাদক বিরোধী প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার ফুটবলের একটি ঐতিহ্য রয়েছে। সেই হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে হবে। খেলাধুলা করলে মন ও শরীর উভয় ভালো থাকে। খেলাধুলা মাদক থেকে দূরে রাখে। সবারই নিয়মিত খেলাধুলা করা প্রয়োজন। মাদকের থাবা থেকে বাঁচতে ও আগামী প্রজন্মকে মাদক থেকে দূরে রাখতে নিয়মিত খেলাধুলার আয়োজন করতে হবে। আপনারা সন্তানদের নিয়মিত খোঁজখবর নিবেন।’

তিনি আরও বলেন, জেলায় মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামীতে জেলার সবাইকে নিয়ে ডিসি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হবে। মাদকে যারা জড়িয়ে গেছেন, তারা তিলে তিলে নিঃশেষ হয়ে যাবে। মাদকের কারণে কিশোর গ্যাং, চুরি, ছিনতাই বৃদ্ধি পায়।

পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক শরিয়ত উল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস, দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) সফিউল আলম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদা খাতুন, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী, কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ. করিম বিশ্বাস, কুড়ুলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন, নতিপোতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়ামিন আলী, হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, সদর ইউপি সদস্য সামসুল ইসলাম, দামুড়হুদা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফুল ইসলাম মিলন, দামুড়হুদা স্পোর্টিং ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদ আজম সদু প্রমুখ।

খেলায় মোট চারটি দল অংশগ্রহণ করে। তারা হলো- নতিপোতা ইউনিয়ন একাদশ, মদনা একাদশ, দামুড়হুদা সদর ইউনিয়ন একাদশ, কার্পাসডাঙ্গা একাদশ। একই দিনে সব দলের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম সেমিফাইনাল খেলায় নতিপোতা ইউনিয়ন একাদশ ২-০ গোলে মদনা ইউনিয়ন একাদশকে পরাজিত করে ফাইনালে ওঠে। পরে দামুড়হুদা ইউনিয়ন একাদশ ও কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন একাদশের মধ্যে খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় কোনো দল গোল করতে না পারায় ড্র হয়। পরে টাইব্রেকারে দামুড়হুদা একাদশ ১ গোল করে এবং কার্পাসডাঙ্গা একাদশ ৩ গোল দিয়ে ফাইনালে উত্তীর্ণ হয়। পরে কার্পাসডাঙ্গা বনাম নতিপোতা একাদশের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন একাদশ ১-০ গোলে নতিপোতা ইউনিয়ন একাদশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। রানার্স আপ হয় নতিপোতা ইউনিয়ন একাদশ। খেলা শেষে প্রধান অতিথি চ্যাম্পিয়ন দলকে চ্যাম্পিয়ন টফি ও রানার্স আপ দলকে রানার্সআপ টফি প্রদান করেন।

খেলায় প্রধান রেফারির দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ মাসুদুর রহমান খোকন, সহকারী রেফারি ছিলেন ইউসুফ আলী এবং তিতুয়ার রহমান। খেলায় ধারাভাষ্য দেন উদীয়মান ধারাভাষ্যকার মো. শামীম খাঁন।