ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে লাখ লাখ আত্মসাৎ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কাজ না করে ভুয়া বিলের ভাউচার দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সময় মতো হাসপাতালে না আসা, নিজের খেয়াল খুশি মতো হাসপাতাল চালানোসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে রয়েছে, ডা. সৈয়দ রেজাউল করিম যোগদানের পর থেকেই সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়েছে। তিনি ঠিকমতো অফিস করেন না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন অফিসে আসেন না। বেশির ভাগ সময় থাকেন ঢাকাতে।

অভিযোগ রয়েছে, সদর হাসপাতাল চত্বরের ভেষজ বাগানের উন্নয়নের নামে গত অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। সেখানে শুধুমাত্রা পুরাতন সাইনবোর্ড রঙ করে বাকি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের অটোমেশনের ৮ লাখ টাকার বেশিভাগ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। গত অর্থবছরে হাসপাতালের অটোমেশনের জন্য ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও তিনি ভুয়া বিলের ভাউচারের মাধ্যমে টাকা তুলে নেন। একইভাবে লিলেন প্রকল্পের টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা. সৈয়দ রেজাউল করিম এর আগেও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন। তিনি আগে ভোলা জেলার সিভিল সার্জনের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করার অপরাধে কর্তৃপক্ষ তাকে ডিমোশন দিয়ে শাস্তিমূলক বদলি করেন খুলনাতে। সেখান থেকে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নেন। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। ঢাকার শ্যামলী ও স্কাটন রোডে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ফ্লাট রয়েছে তার। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে রয়েছে টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে বায়োমেট্রিক হাজিরার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। নতুন তত্ত্বাবধায়ক আসার পর হাসপাতালের ম্যানেজমেন্ট ভেঙে পড়েছে। তার ইচ্ছেমত চালান তিনি। তাকে যারা তোষমোদ করতে পারেন, অনিয়ম করে হলেও তাদের সুবিধা দেন। তিনি আসার পর স্বাস্থ্যসেবা কমিটির মিটিংও হয়নি।

এ ব্যাপারে জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. মুন্সী রেজা সেকেন্দার বলেন, হাসপাতালে একজন তত্ত্বাবধায়কের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল জেলার স্বাস্থ্যখাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাই তত্ত্বাবধায়কের অবশ্যই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রয়েছে। তাকে অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে। তিনি যদি অনিয়ম ও দুর্নীতি করে থাকেন, তাহলে তার তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, একটি মহল সুবিধা না পেয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরি করে লাখ লাখ আত্মসাৎ!

আপলোড টাইম : ০৮:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ মে ২০২৩

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সৈয়দ রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কাজ না করে ভুয়া বিলের ভাউচার দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সময় মতো হাসপাতালে না আসা, নিজের খেয়াল খুশি মতো হাসপাতাল চালানোসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। অভিযোগে রয়েছে, ডা. সৈয়দ রেজাউল করিম যোগদানের পর থেকেই সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙে পড়েছে। তিনি ঠিকমতো অফিস করেন না। সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন অফিসে আসেন না। বেশির ভাগ সময় থাকেন ঢাকাতে।

অভিযোগ রয়েছে, সদর হাসপাতাল চত্বরের ভেষজ বাগানের উন্নয়নের নামে গত অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। সেখানে শুধুমাত্রা পুরাতন সাইনবোর্ড রঙ করে বাকি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে হাসপাতালের অটোমেশনের ৮ লাখ টাকার বেশিভাগ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। গত অর্থবছরে হাসপাতালের অটোমেশনের জন্য ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ এলেও তিনি ভুয়া বিলের ভাউচারের মাধ্যমে টাকা তুলে নেন। একইভাবে লিলেন প্রকল্পের টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা. সৈয়দ রেজাউল করিম এর আগেও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন। তিনি আগে ভোলা জেলার সিভিল সার্জনের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করার অপরাধে কর্তৃপক্ষ তাকে ডিমোশন দিয়ে শাস্তিমূলক বদলি করেন খুলনাতে। সেখান থেকে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব নেন। দুর্নীতির মাধ্যমে তিনি হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। ঢাকার শ্যামলী ও স্কাটন রোডে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ফ্লাট রয়েছে তার। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বেনামে রয়েছে টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে বায়োমেট্রিক হাজিরার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। নতুন তত্ত্বাবধায়ক আসার পর হাসপাতালের ম্যানেজমেন্ট ভেঙে পড়েছে। তার ইচ্ছেমত চালান তিনি। তাকে যারা তোষমোদ করতে পারেন, অনিয়ম করে হলেও তাদের সুবিধা দেন। তিনি আসার পর স্বাস্থ্যসেবা কমিটির মিটিংও হয়নি।

এ ব্যাপারে জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. মুন্সী রেজা সেকেন্দার বলেন, হাসপাতালে একজন তত্ত্বাবধায়কের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল জেলার স্বাস্থ্যখাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাই তত্ত্বাবধায়কের অবশ্যই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রয়েছে। তাকে অনেক দায়িত্বশীল হতে হবে। তিনি যদি অনিয়ম ও দুর্নীতি করে থাকেন, তাহলে তার তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, একটি মহল সুবিধা না পেয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।