ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাণ্ড

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

 

সমীকরণ প্রতিবেদক:

মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও তার ছেলে সুমনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও সহকারী শিক্ষক নার্গিস খাতুনকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত বছরের ৪ অক্টোবর থেকে কোনো রকম কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মেহেরপুর জজ কোর্টের ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌশলী গোলাম মোস্তফা গত ৩০ মার্চ স্বাক্ষরিত আইনগত মতামত প্রসঙ্গে ৪ অক্টোবর-২০২২ হইতে ১ এপ্রিল-২০২৩ পর্যন্ত ১৮০ দিন পূর্ণ হওয়ায় আবুল কালাম আজাদ অব্যাহতি পান। ফলে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বিদ্যালয়ে ২ এপ্রিল থেকে আইনগতভাবে সপদে দায়িত্ব ফিরে পান। যার অনুলিপি জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নিজ দায়িত্ব পালনের আমি ও সহকারী শিক্ষক নার্গিস বিদ্যালয়ে প্রবেশ করি। এসময় সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও তার ছেলে সুমন এসে আমাদের সাথে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী নার্গিসকে জড়িয়ে ধরে লাঞ্চিত করে এবং ব্যাগ কেড়ে নিতে চায়। এসময় নার্গিস তাদের ধস্তাধস্তিতে আহত হয়।’

সহকারী শিক্ষক নার্গিস বলেন, ‘সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও সুমন আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার নিকট থেকে ব্যাগ কেড়ে নিতে চায়। আমি দিতে না চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিদ্যালয়ের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং নিজ দায়িত্ব পালনে সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

এদিকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘তাঁরা দুজন আমাদের না জানিয়েই তালা ভেঙে কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করে। কক্ষের কোনো কিছু ব্যাগে ভরে নিয়ে যাচ্ছে কি না, তা জানতেই ব্যাগ চেক করার জন্য কাড়াকাড়ির একপর্যায়ে শিক্ষিকা পড়ে গিয়ে শরীরে চোট লাগে।’ তাদের অভিযোগ, কমিটিকে না জানিয়েই তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে।

বিদ্যালয়ে পরিচালিত কোচিং-এর শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ও নার্গিস ম্যাডাম বিদ্যালয় কক্ষে প্রবেশ করলে সুমন স্যার ভিডিও ধারণ করে এবং ব্যাগ কেড়ে নিয়ে বাইরে চলে যান। এসময় দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এসময় সভাপতি এসে স্যার এবং প্রধান শিক্ষক দুজনকেই মারধর করে।’

বারাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনা সম্বন্ধে দুপক্ষই পৃথকভাবে অভিযোগ জানালেও পরবর্তীতে কেউই আর যোগাযোগ করেনি। বিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে সকলে একসঙ্গে বসে আইনি প্রক্রিয়ায় ও সমঝোতা করার প্রয়োজন। এ বিষয়ে তারা চাইলে একত্রে বসে সমাধান করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাণ্ড

আপলোড টাইম : ০৯:১৮:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

 

সমীকরণ প্রতিবেদক:

মেহেরপুর সদর উপজেলার বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও তার ছেলে সুমনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ও সহকারী শিক্ষক নার্গিস খাতুনকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে বর্শিবাড়ীয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, গত বছরের ৪ অক্টোবর থেকে কোনো রকম কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মেহেরপুর জজ কোর্টের ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌশলী গোলাম মোস্তফা গত ৩০ মার্চ স্বাক্ষরিত আইনগত মতামত প্রসঙ্গে ৪ অক্টোবর-২০২২ হইতে ১ এপ্রিল-২০২৩ পর্যন্ত ১৮০ দিন পূর্ণ হওয়ায় আবুল কালাম আজাদ অব্যাহতি পান। ফলে প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বিদ্যালয়ে ২ এপ্রিল থেকে আইনগতভাবে সপদে দায়িত্ব ফিরে পান। যার অনুলিপি জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দেওয়া হয়েছে।

প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘নিজ দায়িত্ব পালনের আমি ও সহকারী শিক্ষক নার্গিস বিদ্যালয়ে প্রবেশ করি। এসময় সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও তার ছেলে সুমন এসে আমাদের সাথে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে আমার স্ত্রী নার্গিসকে জড়িয়ে ধরে লাঞ্চিত করে এবং ব্যাগ কেড়ে নিতে চায়। এসময় নার্গিস তাদের ধস্তাধস্তিতে আহত হয়।’

সহকারী শিক্ষক নার্গিস বলেন, ‘সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি ও সুমন আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার নিকট থেকে ব্যাগ কেড়ে নিতে চায়। আমি দিতে না চাইলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লাগে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিদ্যালয়ের শান্তি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং নিজ দায়িত্ব পালনে সকলের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’

এদিকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি গোলাম মোস্তফা শান্তি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘তাঁরা দুজন আমাদের না জানিয়েই তালা ভেঙে কক্ষের ভেতরে প্রবেশ করে। কক্ষের কোনো কিছু ব্যাগে ভরে নিয়ে যাচ্ছে কি না, তা জানতেই ব্যাগ চেক করার জন্য কাড়াকাড়ির একপর্যায়ে শিক্ষিকা পড়ে গিয়ে শরীরে চোট লাগে।’ তাদের অভিযোগ, কমিটিকে না জানিয়েই তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকেছে।

বিদ্যালয়ে পরিচালিত কোচিং-এর শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক ও নার্গিস ম্যাডাম বিদ্যালয় কক্ষে প্রবেশ করলে সুমন স্যার ভিডিও ধারণ করে এবং ব্যাগ কেড়ে নিয়ে বাইরে চলে যান। এসময় দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এসময় সভাপতি এসে স্যার এবং প্রধান শিক্ষক দুজনকেই মারধর করে।’

বারাদী ইউপি চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনা সম্বন্ধে দুপক্ষই পৃথকভাবে অভিযোগ জানালেও পরবর্তীতে কেউই আর যোগাযোগ করেনি। বিদ্যালয়ের শান্তি-শৃঙ্খলা ফেরাতে সকলে একসঙ্গে বসে আইনি প্রক্রিয়ায় ও সমঝোতা করার প্রয়োজন। এ বিষয়ে তারা চাইলে একত্রে বসে সমাধান করা হবে।