ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবননগরে নিখোঁজের চার দিন পর ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার, পরিবারে শোকের ছায়া

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:১৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:

জীবননগরে নিখোঁজের চার দিন পর ব্যবসায়ী আবু সাঈদের (২৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে জীবননগর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বসুতিপাড়ায় কোরিয়ান প্রবাসী কবিরের নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের বেসমেন্ট থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। আবু সাঈদ জীবননগর হাইস্কুল পাড়ার আব্দুল রইচের ছোট ছেলে। তিনি জীবননগর পৌর শহরের ইয়ান সু স্টোরের মালিক।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে প্রবাসী কবিরের নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের লিফটের বেসমেন্ট থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। পরে তারা সেখানে খোঁজ করে একটি লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বেলা দুইটার দিকে লিফটের একটি অংশ ভেঙে লাশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হাসান বলেন, ‘আবু সাঈদ গত ২ এপ্রিল মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। আমরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, কিন্তু তার কোনো সন্ধান পাইনি। এর একদিন পর আমার ভাইয়ের মোবাইল ফোন থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমার কাছে ফোন করে। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে সে তার পরিচয় গোপন করে ফোনটি বন্ধ করে রাখে। পরে একটা ইন্টারনেট নম্বর থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন, ১৫ হাজার টাকা দিলে আমার ভাইয়ের খোঁজ দেবেন। টাকা না দিলে তার খোঁজ পাওয়া যাবে না বলে আমাকে হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর আমরা জীবননগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম।’ আবু হাসান আরও বলেন, ‘আজ সকালে আমি খবর পাই বসুতিপাড়ার একটি বাড়িতে অজ্ঞাত একটি লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। আমি সেখানে যেয়ে পরনের লুঙ্গী ও গেঞ্জি দেখে আমার ভাইকে শনাক্ত করি।’

আবু সাঈদ
আবু সাঈদ

এদিকে আবু সাঈদের বাবা রইচ উদ্দিন সন্তানের লাশ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আবু সাঈদের লাশ যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, ওই এলাকায় সব সময় মাদকসেবীদের আনাগোনা থাকে। আবু সাঈদের মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে উঠাবসা ছিল। স্থানীয়দের ধারণা, মাদকের টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে হয়ত এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছে, নারীঘটিত কারণেও তাকে হত্যা করা হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, লাশ পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেছে। এ ঘটনায় আবু সাঈদের বাবা বাদী হয়ে জীবননগর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আবু সাঈদের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান বলেন, মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ। এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পিবিআই, সিআইডি, র‌্যাব ও ডিবির সদস্যরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরে নিখোঁজের চার দিন পর ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার, পরিবারে শোকের ছায়া

আপলোড টাইম : ১১:১৫:৪১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ এপ্রিল ২০২৩

জীবননগর অফিস:

জীবননগরে নিখোঁজের চার দিন পর ব্যবসায়ী আবু সাঈদের (২৭) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে জীবননগর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বসুতিপাড়ায় কোরিয়ান প্রবাসী কবিরের নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের বেসমেন্ট থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। আবু সাঈদ জীবননগর হাইস্কুল পাড়ার আব্দুল রইচের ছোট ছেলে। তিনি জীবননগর পৌর শহরের ইয়ান সু স্টোরের মালিক।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সকালে প্রবাসী কবিরের নির্মাণাধীন সাততলা ভবনের লিফটের বেসমেন্ট থেকে পচা দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। পরে তারা সেখানে খোঁজ করে একটি লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বেলা দুইটার দিকে লিফটের একটি অংশ ভেঙে লাশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।

আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হাসান বলেন, ‘আবু সাঈদ গত ২ এপ্রিল মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করতে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। আমরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি, কিন্তু তার কোনো সন্ধান পাইনি। এর একদিন পর আমার ভাইয়ের মোবাইল ফোন থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমার কাছে ফোন করে। আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে সে তার পরিচয় গোপন করে ফোনটি বন্ধ করে রাখে। পরে একটা ইন্টারনেট নম্বর থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে বলেন, ১৫ হাজার টাকা দিলে আমার ভাইয়ের খোঁজ দেবেন। টাকা না দিলে তার খোঁজ পাওয়া যাবে না বলে আমাকে হুমকি দেয়। এ ঘটনার পর আমরা জীবননগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলাম।’ আবু হাসান আরও বলেন, ‘আজ সকালে আমি খবর পাই বসুতিপাড়ার একটি বাড়িতে অজ্ঞাত একটি লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে। আমি সেখানে যেয়ে পরনের লুঙ্গী ও গেঞ্জি দেখে আমার ভাইকে শনাক্ত করি।’

আবু সাঈদ
আবু সাঈদ

এদিকে আবু সাঈদের বাবা রইচ উদ্দিন সন্তানের লাশ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করেন। তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আবু সাঈদের লাশ যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, ওই এলাকায় সব সময় মাদকসেবীদের আনাগোনা থাকে। আবু সাঈদের মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে উঠাবসা ছিল। স্থানীয়দের ধারণা, মাদকের টাকা ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে হয়ত এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছে, নারীঘটিত কারণেও তাকে হত্যা করা হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, লাশ পরিবারের সদস্যরা শনাক্ত করেছে। এ ঘটনায় আবু সাঈদের বাবা বাদী হয়ে জীবননগর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আবু সাঈদের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান বলেন, মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ। এদিকে, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পিবিআই, সিআইডি, র‌্যাব ও ডিবির সদস্যরা।