ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছোলাকাণ্ডে নাটকীয়তা, মিঠু মেম্বারসহ দুজন আটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৪:২৯:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদক:

ভাতর থেকে আমদানিকৃত মেসার্স সৈকত ট্রেডার্সের খোয়া যাওয়া ৬৬৭ বস্তা ছোলা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে উদ্ধার করেছে যশোর ডিবি (ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ)। গত সোমবার ছোলা উদ্ধারে পর থেকে এ নিয়ে নাটকিয়তা শুরু হয়। এর পূর্বে ডিবি পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করলে ছোলাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে অনেকের নাম আলোচনায় আসে। পরে আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারের আস্থাভাজন ভূষিমাল ব্যবসায়ী বিশারতকে সঙ্গে নিয়ে ও তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেডিকে ইউনিয়নের খাসিয়ার রহমান মিঠু মেম্বার ও ট্রাকচালক হাসান আল মামুন রাজনকে ওই ছোলাসহ আটক করে। পরবর্তীতে পুলিশ আটক দুজনের বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করে এবং বিশারতকে ছেড়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বলেন, ‘আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের ভূষিমাল ব্যবসায়ী বিশারত চিহ্নিত চোরাকারবারি। তিনি বিভিন্ন স্থান থেকে অল্প দামে চোরাই মালামাল কিনে এনে বিক্রি করেন। এভাবেই তার আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। ছোলা চুরি ঘটনার তদন্ত করলে এর সঙ্গে কারা জড়িত আছে, সেটি বেরিয়ে আসবে।’ তারা আরও বলেন, অদৃশ্য কারণে জীবননগরে ছোলা উদ্ধারের ঘটনা থেকে দুই চেয়ারম্যানের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে রাঘোবোয়াল ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। আর ছোলা কীভাবে জীবননগরে আসল, বিষয়টি ধামাচাপা রয়ে গেল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছোলা চোর মেম্বার আটক হলেও অধরা আছে দুই চেয়ারম্যান। অনেকেই বলছে, এটা টিসিবির ছোলা। ডিলারের সঙ্গে যোগসাজসে চেয়ারম্যান ও মেম্বার মিলে বিশারতের কাছে বিক্রি করেছে। আবার কেউ বলছে, চোরাই ছোলা।

এ বিষয়ে বিশারতের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী একজন ভূষিমাল ব্যবসায়ী। গত সোমবার বিকেলে আমার স্বামীকে একটি সাদা গাড়িতে করে নিয়ে যায়। সেই গাড়িতে একজন চেয়ারম্যান ছিল। আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে বলেছে, এই ছোলাগুলো চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কিনেছেন। তবে এই ছোলাগুলো টেকেরহাটের ব্যাপারি আনন্দর কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। আমার স্বামী তাকে এ ঘটনা জানার পর ফোন দিয়েছিল। সে মালগুলো ফেরত দিয়েছে।’ তবে কোন কোন চেয়ারম্যান জড়িত আছে এ ঘটনার সঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম প্রকাশে বাধা আছে। এ বিষয়ে বিশারতের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে, তিনি সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে বাড়ি থেকে সটকে পড়েন।

ডিবি বলছে, ভারত থেকে আমদানিকৃত মেসার্স সৈকত ট্রেডার্সের ৬৬৭ বস্তা ছোলা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক দুজনের নামে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকুনুজ্জামান বলেন, ডিবি পুলিশ যে ছোলা উদ্ধার করেছে, এটা টিসিবির হতে পারে না। কারণ এত ছোলা টিসিবির ডিলাররা কীভাবে বিক্রয় করবে? তারপরও এটা তদন্ত করা হবে। যদি কোনো টিসিবির ডিলার বা জনপ্রতিনিধি জড়িত থাকে, তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ছোলাকাণ্ডে নাটকীয়তা, মিঠু মেম্বারসহ দুজন আটক

আপলোড টাইম : ০৪:২৯:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ এপ্রিল ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদক:

ভাতর থেকে আমদানিকৃত মেসার্স সৈকত ট্রেডার্সের খোয়া যাওয়া ৬৬৭ বস্তা ছোলা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে উদ্ধার করেছে যশোর ডিবি (ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চ)। গত সোমবার ছোলা উদ্ধারে পর থেকে এ নিয়ে নাটকিয়তা শুরু হয়। এর পূর্বে ডিবি পুলিশ এ ঘটনার তদন্ত শুরু করলে ছোলাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়ে অনেকের নাম আলোচনায় আসে। পরে আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ শফিকুল ইসলাম মোক্তারের আস্থাভাজন ভূষিমাল ব্যবসায়ী বিশারতকে সঙ্গে নিয়ে ও তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কেডিকে ইউনিয়নের খাসিয়ার রহমান মিঠু মেম্বার ও ট্রাকচালক হাসান আল মামুন রাজনকে ওই ছোলাসহ আটক করে। পরবর্তীতে পুলিশ আটক দুজনের বিরুদ্ধে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা দায়ের করে এবং বিশারতকে ছেড়ে দেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার কয়েকজন বলেন, ‘আন্দুলবাড়ীয়া বাজারের ভূষিমাল ব্যবসায়ী বিশারত চিহ্নিত চোরাকারবারি। তিনি বিভিন্ন স্থান থেকে অল্প দামে চোরাই মালামাল কিনে এনে বিক্রি করেন। এভাবেই তার আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। ছোলা চুরি ঘটনার তদন্ত করলে এর সঙ্গে কারা জড়িত আছে, সেটি বেরিয়ে আসবে।’ তারা আরও বলেন, অদৃশ্য কারণে জীবননগরে ছোলা উদ্ধারের ঘটনা থেকে দুই চেয়ারম্যানের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে রাঘোবোয়াল ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে। আর ছোলা কীভাবে জীবননগরে আসল, বিষয়টি ধামাচাপা রয়ে গেল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছোলা চোর মেম্বার আটক হলেও অধরা আছে দুই চেয়ারম্যান। অনেকেই বলছে, এটা টিসিবির ছোলা। ডিলারের সঙ্গে যোগসাজসে চেয়ারম্যান ও মেম্বার মিলে বিশারতের কাছে বিক্রি করেছে। আবার কেউ বলছে, চোরাই ছোলা।

এ বিষয়ে বিশারতের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী একজন ভূষিমাল ব্যবসায়ী। গত সোমবার বিকেলে আমার স্বামীকে একটি সাদা গাড়িতে করে নিয়ে যায়। সেই গাড়িতে একজন চেয়ারম্যান ছিল। আমার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে বলেছে, এই ছোলাগুলো চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কিনেছেন। তবে এই ছোলাগুলো টেকেরহাটের ব্যাপারি আনন্দর কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। আমার স্বামী তাকে এ ঘটনা জানার পর ফোন দিয়েছিল। সে মালগুলো ফেরত দিয়েছে।’ তবে কোন কোন চেয়ারম্যান জড়িত আছে এ ঘটনার সঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম প্রকাশে বাধা আছে। এ বিষয়ে বিশারতের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার বাড়িতে গেলে, তিনি সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে বাড়ি থেকে সটকে পড়েন।

ডিবি বলছে, ভারত থেকে আমদানিকৃত মেসার্স সৈকত ট্রেডার্সের ৬৬৭ বস্তা ছোলা চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক দুজনের নামে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকুনুজ্জামান বলেন, ডিবি পুলিশ যে ছোলা উদ্ধার করেছে, এটা টিসিবির হতে পারে না। কারণ এত ছোলা টিসিবির ডিলাররা কীভাবে বিক্রয় করবে? তারপরও এটা তদন্ত করা হবে। যদি কোনো টিসিবির ডিলার বা জনপ্রতিনিধি জড়িত থাকে, তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।