ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলের জমি দখল করে মার্কেট ও গোয়ালঘর নির্মাণ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:

২৫ বছর ধরে জীবননগর উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলে রেখে মার্কেট নির্মাণ ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর শুকুর সরকারসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। স্কুলের শিক্ষকেরা বলছেন, এ বিষয়ে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও জমি দখলমুক্ত করতে পারেননি।

অভিযোগ রয়েছে, কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ শতক জমি দখল করে ১০টি পাকা ইমারত নির্মাণ করেছেন কেডিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর সরকার, শাজাহান মালিতা, ইয়ামিন হোসেন, শামসুল সরকার, গোলাম মুর্তুজা, নাজমুল হক, আজিজুল হক, সামাদ, টিটু ও আলফাজ ময়রা। এছাড়াও স্কুলের জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছে গরুর গোয়াল। এতে গন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে চরম সমস্যা হচ্ছে।

সূত্রে জানা গেছে, কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট জমি দেড় একর। এর মধ্যে ৭ শতক জমি দখলদারদের কবলে। এই জমি দখলমুক্ত করতে একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। ফলে দখলদাররা স্কুলের জমি দখল করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিকট মোটা অর্থের বিনিময় বিক্রয় করছে। ‘দখলদার’ আব্দুস সামাদের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘জমিটা স্কুলের। তবে আমি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জমিটা কিনেছি শহিদুল সরকারের কাছ থেকে।’

কেডিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর সরকার বলেন, ‘কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে জমিতে তৈরি করা হয়েছে, সেটি জমিদারদের জমি। আমরা যে জমিতে দোকান তৈরি করেছি, সেটাও জমিদারদের জমি। এ নিয়ে অনেকবার নোটিশ হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি।’

বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা বলছে, স্কুলের জমি এমনিতে কম। স্কুলের জমি দখল হওয়ায় তাদের খেলাধুলা করতে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম বলেন, এর আগে যিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তিনি স্কুলের জমি দখলমুক্ত করতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। তাতে কোনো ফল হয়নি। গত বৃহস্পতিবার আমরা নতুন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, বিদ্যালয়ের ৭ শতক জমি দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ একটি মহল দখল করে অর্থ আদায় করছে। স্কুলের দখলকৃত জমি থেকে মার্কেট উচ্ছেদ করে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ তৈরি করা দরকার। তা না হলে একদিন স্কুলের সমস্ত জমি দখলদারদের কবলে চলে যাবে।

জীবননগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি কেউ দখল করতে পারবে না। যারা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখল করে কেউ অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। যদি কেউ করে থাকে, তাহলে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

স্কুলের জমি দখল করে মার্কেট ও গোয়ালঘর নির্মাণ

আপলোড টাইম : ১১:৩৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ এপ্রিল ২০২৩

জীবননগর অফিস:

২৫ বছর ধরে জীবননগর উপজেলার কেডিকে ইউনিয়নের কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখলে রেখে মার্কেট নির্মাণ ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর শুকুর সরকারসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। স্কুলের শিক্ষকেরা বলছেন, এ বিষয়ে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও জমি দখলমুক্ত করতে পারেননি।

অভিযোগ রয়েছে, কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭ শতক জমি দখল করে ১০টি পাকা ইমারত নির্মাণ করেছেন কেডিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর সরকার, শাজাহান মালিতা, ইয়ামিন হোসেন, শামসুল সরকার, গোলাম মুর্তুজা, নাজমুল হক, আজিজুল হক, সামাদ, টিটু ও আলফাজ ময়রা। এছাড়াও স্কুলের জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছে গরুর গোয়াল। এতে গন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে চরম সমস্যা হচ্ছে।

সূত্রে জানা গেছে, কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট জমি দেড় একর। এর মধ্যে ৭ শতক জমি দখলদারদের কবলে। এই জমি দখলমুক্ত করতে একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। ফলে দখলদাররা স্কুলের জমি দখল করে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের নিকট মোটা অর্থের বিনিময় বিক্রয় করছে। ‘দখলদার’ আব্দুস সামাদের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘জমিটা স্কুলের। তবে আমি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা দিয়ে জমিটা কিনেছি শহিদুল সরকারের কাছ থেকে।’

কেডিকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস শুকুর সরকার বলেন, ‘কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে জমিতে তৈরি করা হয়েছে, সেটি জমিদারদের জমি। আমরা যে জমিতে দোকান তৈরি করেছি, সেটাও জমিদারদের জমি। এ নিয়ে অনেকবার নোটিশ হয়েছে। কিন্তু কিছুই হয়নি।’

বিদ্যালয়ের শিক্ষাথীরা বলছে, স্কুলের জমি এমনিতে কম। স্কুলের জমি দখল হওয়ায় তাদের খেলাধুলা করতে সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহ আলম বলেন, এর আগে যিনি এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তিনি স্কুলের জমি দখলমুক্ত করতে উপজেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। তাতে কোনো ফল হয়নি। গত বৃহস্পতিবার আমরা নতুন করে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, বিদ্যালয়ের ৭ শতক জমি দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ একটি মহল দখল করে অর্থ আদায় করছে। স্কুলের দখলকৃত জমি থেকে মার্কেট উচ্ছেদ করে শিক্ষার্থীদের জন্য খেলার মাঠ তৈরি করা দরকার। তা না হলে একদিন স্কুলের সমস্ত জমি দখলদারদের কবলে চলে যাবে।

জীবননগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি কেউ দখল করতে পারবে না। যারা দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জমি দখল করে কেউ অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। যদি কেউ করে থাকে, তাহলে লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’