ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালীগঞ্জে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে দুদকের ফাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৩:০২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মে ২০২২
  • / ৩১ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের দুই সহকারী অধ্যাপক লাঞ্ছিত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক দল বহিরাগত দুষ্কৃতিকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে। কালীগঞ্জ খানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও তারা ক্যাম্পাসে যাননি বলে অভিযোগ। ফলে বিকেল পর্যন্ত বহিরাগতরা দুদকের কিছু নথি হাতিয়ে নিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কলেজের একটি কক্ষে আটকে রাখে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে কলেজের নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক সুব্রত ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মণ্ডল জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় কলেজের দুই কর্মচারী তাপস ও সবুজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেনকে টানা-হ্যাচড়া করেন।

এদিকে, শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় জেলাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। শিক্ষকরা আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন। লাঞ্ছিত শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন অভিযোগ করেন, তিনি তাঁর ডিপার্টমেন্টে জরুরি কাজ করছিলেন। এসময় কিছু বহিরাগত দুস্কৃতিকারী ‘তুই শিবির করিস’ এই বলে চড়-থাপ্পড় মারেন। এতে তিনি কানে গুরুতর ব্যথা পান। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি বলেও জানান।

কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, কলেজ থেকে সরকারি খাতা চুরির বিষয় নিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশক্রমে একটি চুরির মামলা করা হয় আদালতে। মামলাটি বর্তমান সিআইডি তদন্ত করছে। এই মামলার সাক্ষী আছেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন। এ কারণে তাঁর ওপর ক্ষুদ্ধ আসামিরা। তারাও ওই কলেজে চাকরি করেন। এ কারণে বহিরাগতদের ডেকে নিয়ে খাতা চুরি মামলার আসামি রকিবুল ইসলাম মিল্টনসহ অন্যান্যরা তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান আরও জানান, কলেজের কাজে সহকারী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেনকে সাময়িক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়ার পর নন এমপিও ৬১ নম্বর সিরিয়ালধারী জুনিয়র প্রভাষক সব্রত কুমার নন্দী ও খাতা চুরির মামলার আসামি সাবেক উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বহিরাগত, কলেজের স্টাফ সবুজ ও পিয়ন তাপসের সহায়তায় ত্রাস সৃষ্টিসহ সহকারী অধ্যাপক মোশাররফকে লাঞ্ছিত করে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, দুদকের একটি ফাইল হাতিয়ে নিতে সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল তাকে অপমান-অপদস্ত এমনকি মারধর করতে উদ্যত হন। কিন্তু এ ধরণের একটি সরকারি ডকুমেন্ট নিতে হলে কালীগঞ্জ ইউএনওর সম্মতি ছাড়া দিতে পারবেন না বলে তাদের সাফ জানিয়ে দেন। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সুবিধা করতে না পেরে তাকে ছেড়ে দেন বলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন জানান।

এবিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, কলেজের বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তাই তিনি কিছুই জানেন না।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

কালীগঞ্জে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে দুদকের ফাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা

আপলোড টাইম : ০৩:০২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ মে ২০২২

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের দুই সহকারী অধ্যাপক লাঞ্ছিত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক দল বহিরাগত দুষ্কৃতিকারী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে। কালীগঞ্জ খানা পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও তারা ক্যাম্পাসে যাননি বলে অভিযোগ। ফলে বিকেল পর্যন্ত বহিরাগতরা দুদকের কিছু নথি হাতিয়ে নিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কলেজের একটি কক্ষে আটকে রাখে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে কলেজের নন এমপিওভুক্ত শিক্ষক সুব্রত ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মণ্ডল জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। এসময় কলেজের দুই কর্মচারী তাপস ও সবুজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেনকে টানা-হ্যাচড়া করেন।

এদিকে, শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় জেলাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেটিজেনরা ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন। শিক্ষকরা আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন। লাঞ্ছিত শিক্ষক সাজ্জাদ হোসেন অভিযোগ করেন, তিনি তাঁর ডিপার্টমেন্টে জরুরি কাজ করছিলেন। এসময় কিছু বহিরাগত দুস্কৃতিকারী ‘তুই শিবির করিস’ এই বলে চড়-থাপ্পড় মারেন। এতে তিনি কানে গুরুতর ব্যথা পান। এখন তিনি হাসপাতালে ভর্তি বলেও জানান।

কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, কলেজ থেকে সরকারি খাতা চুরির বিষয় নিয়ে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশক্রমে একটি চুরির মামলা করা হয় আদালতে। মামলাটি বর্তমান সিআইডি তদন্ত করছে। এই মামলার সাক্ষী আছেন গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন। এ কারণে তাঁর ওপর ক্ষুদ্ধ আসামিরা। তারাও ওই কলেজে চাকরি করেন। এ কারণে বহিরাগতদের ডেকে নিয়ে খাতা চুরি মামলার আসামি রকিবুল ইসলাম মিল্টনসহ অন্যান্যরা তাঁকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান আরও জানান, কলেজের কাজে সহকারী অধ্যাপক মো. মোশাররফ হোসেনকে সাময়িক ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেওয়ার পর নন এমপিও ৬১ নম্বর সিরিয়ালধারী জুনিয়র প্রভাষক সব্রত কুমার নন্দী ও খাতা চুরির মামলার আসামি সাবেক উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বহিরাগত, কলেজের স্টাফ সবুজ ও পিয়ন তাপসের সহায়তায় ত্রাস সৃষ্টিসহ সহকারী অধ্যাপক মোশাররফকে লাঞ্ছিত করে।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, দুদকের একটি ফাইল হাতিয়ে নিতে সুব্রত ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মণ্ডল তাকে অপমান-অপদস্ত এমনকি মারধর করতে উদ্যত হন। কিন্তু এ ধরণের একটি সরকারি ডকুমেন্ট নিতে হলে কালীগঞ্জ ইউএনওর সম্মতি ছাড়া দিতে পারবেন না বলে তাদের সাফ জানিয়ে দেন। বিকেল পৌনে ৫টার দিকে সুবিধা করতে না পেরে তাকে ছেড়ে দেন বলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন জানান।

এবিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, কলেজের বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। তাই তিনি কিছুই জানেন না।