ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহ পৌরসভার লাখ লাখ টাকা গায়েব!

ঝিনাইদহ অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০২:৪৮:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ পৌরসভার একাধিক ব্যাংক হিসাব থেকে লাখ লাখ টাকা গায়েব হওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। গঠিত তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করে সত্যতা পাওয়ার পরও চেক জালিয়াতি চক্রের মূল হোতা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান (চাঁন) বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। এতে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন। তাঁদের ভাষ্য, ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন ও কার্যসহকারী হাবিবুর রহমান হাবিবের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে এই দুই কর্মচারীর সমালোচনা চলে পৌর ভবনে।

এদিকে, ২০২১ সালের ২৭ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার ২৯৬ নম্বর স্মারকে সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিণ্টু সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন। ওই পত্রে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ওরফে চাঁদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ তোলেন মেয়র। পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পৌরসভার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৮১৯ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান উত্তোলন করেন। এর মধ্যে ২৮ লাখ টাকা চেক জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২টি চেকের মাধ্যমে বিপুল অংকের ওই টাকা স্থানীয় জনতা, সোনালীসহ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। অথচ পৌরসভার ক্যাশ বইয়ে মাত্র ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮১৯ টাকা দেখানো হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, মেয়রের অভিযোগপত্র পাওয়ার পরে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের (পৌরসভা শাখা-১) উপ-সচিব মুহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঝিনাইদহকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছরের (২০২১) ১২ আগস্ট জারি করা ওই পত্রটি ধামাচাপা পড়ে যায়। সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংক ঝিনাইদহের প্রধান শাখার সাবেক ৩১৬ এবং বর্তমান ১১০০০০০৩১ নম্বর ডিপোজিট অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে ৮৪ লাখ ৩৩ হাজার ৬৯৮ টাকা তুলে নেয় চক্রের সদস্যরা। ২০১১ সালের পহেলা জুন থেকে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বমোট ৩৮টি চেক ও ভাউচারের অনুকূলে বিপুল অংকের এই টাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও জনতা, ইউসিবিএল, রুপালী, অগ্রণী, এবিসহ পৌরসভার ব্যাংক হিসাব থেকে কত টাকা চক্রটি উত্তোলন করেছে, তা আজও নিরুপণ করা যায়নি।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, গাড়ি মেরামত, প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা মেরামত ও সংস্কার, কেনাকাটা, স্যানিটারি, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ভাউচারে উল্লেখ করা টাকার বিপরীতে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা টাকার অংকে কোনো মিল নেই। মুড়ি বইয়ে খরচের ভাউচার মোতাবেক টাকার অংক লেখা হলেও ব্যাংকের চেকে (বেয়ারার চেক) বেশি টাকা উল্লেখ আছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান, প্রশাসক ও উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বিভাগ (তদন্তকারী কর্মকর্তা) মো. ইয়ারুল ইসলাম (উপ-সচিব) সংশ্লিষ্ট সব খাতাপত্র চেকের মুড়ি বই নিজের হেফাজতে রেখেছেন। ব্যাংক থেকে চেকের (উত্তোলন করা চেক) কপি, বিল ভাউচারের অফিস কপি ইতঃমধ্যে কব্জা করেছেন তিনি। অন্তত ১২টি চেকের পিছনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ওরফে চাঁদের জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য মিলেছে বলে জানান এ কর্মকর্তা। এছাড়া ৩৮টির মধ্যে বাকি ২৬টি চেকের পিছনে টাকা উত্তোলনকারীর স্বাক্ষর এবং মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা।

জানা যায়, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন স্টোর কিপার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে প্রধান সহকারী হন এবং পরবর্তীতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁন জানান, পৌরসভার চেকে যৌথ স্বাক্ষর করেন মেয়র ও সচিব। সাধারণ শাখার নোটশীট তৈরির দায়িত্ব তাঁর। তিনি আরও বলেন, ‘টাকা তুলতে আমি কখনো ব্যাংকে যায়নি।’ এমনকি চেকের পিছনে স্বাক্ষর করেননি বলেও দাবি তাঁর। পৌরসভার মোট ৩৮টি চেক ও ভাউচারের বিপরীতে পৌনে ১ কোটি টাকার বেশি উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে ১২টির টাকা উত্তোলনের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে করা হয়েছে বলে স্বীকার করে আসাদুজ্জামান চাঁন জানান, এক মাস আগে লিখিত জবাব তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা হয়েছে। জবাবে চেক জালিয়াতির সাথে জড়িত নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আজমল হোসেন (সাবেক সচিব) ২০০৮ সালে ঝিনাইদহ পৌরসভায় সচিব পদে যোগদান করেন। ২০১৮ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন শেষে যশোর পৌরসভায় বদলি হন। জালিয়াতি করা চেকে স্বাক্ষর রয়েছে তাঁর। এক প্রশ্নের সচিব আজমল বলেন, ‘মেয়র ও আমি যৌথ স্বাক্ষরে চেক দিয়েছি। স্বাক্ষর করার সময় বিল ভাউচারের সাথে চেকে উল্লেখ করা টাকার অংক মিল ছিল। পরবর্তী সময়ে চেকের কাস্টডিয়ান টাকার অংক পাল্টে দিয়েছেন।’

পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) মো. নূর মাহমুদ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় সোনালী, জনতাসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৮টি চেকের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সকল ধরণের প্রমাণ তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও চক্রটির বিরুদ্ধে আজও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি। সঠিক তদন্তে রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসছে বলেও ধারণা দেন পৌরসভার দায়িত্বশীল এ কর্মকর্তা।

ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মো. ইয়ারুল ইসলাম জানান, তদন্ত শেষের দিকে। পৌরসভার ব্যাংক হিসাব থেকে লাখ লাখ টাকা তছরুপের সত্যতা মিলেছে। জড়িতদের নামও পাওয়া গেছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহ পৌরসভার লাখ লাখ টাকা গায়েব!

আপলোড টাইম : ০২:৪৮:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২

ঝিনাইদহ পৌরসভার একাধিক ব্যাংক হিসাব থেকে লাখ লাখ টাকা গায়েব হওয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। গঠিত তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান করে সত্যতা পাওয়ার পরও চেক জালিয়াতি চক্রের মূল হোতা প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান (চাঁন) বহাল তবিয়তে চাকরি করে যাচ্ছেন। এতে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাঁরা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন। তাঁদের ভাষ্য, ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন ও কার্যসহকারী হাবিবুর রহমান হাবিবের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে এই দুই কর্মচারীর সমালোচনা চলে পৌর ভবনে।

এদিকে, ২০২১ সালের ২৭ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার ২৯৬ নম্বর স্মারকে সাবেক মেয়র সাইদুল করিম মিণ্টু সিনিয়র সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন। ওই পত্রে পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ওরফে চাঁদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের গুরুতর অভিযোগ তোলেন মেয়র। পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পৌরসভার বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে ৩১ লাখ ৪৪ হাজার ৮১৯ টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চান উত্তোলন করেন। এর মধ্যে ২৮ লাখ টাকা চেক জালিয়াতির মাধ্যমে তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়। ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১২টি চেকের মাধ্যমে বিপুল অংকের ওই টাকা স্থানীয় জনতা, সোনালীসহ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। অথচ পৌরসভার ক্যাশ বইয়ে মাত্র ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮১৯ টাকা দেখানো হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, মেয়রের অভিযোগপত্র পাওয়ার পরে স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের (পৌরসভা শাখা-১) উপ-সচিব মুহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক পত্রে উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঝিনাইদহকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বছরের (২০২১) ১২ আগস্ট জারি করা ওই পত্রটি ধামাচাপা পড়ে যায়। সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংক ঝিনাইদহের প্রধান শাখার সাবেক ৩১৬ এবং বর্তমান ১১০০০০০৩১ নম্বর ডিপোজিট অ্যাকাউন্টসহ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে ৮৪ লাখ ৩৩ হাজার ৬৯৮ টাকা তুলে নেয় চক্রের সদস্যরা। ২০১১ সালের পহেলা জুন থেকে ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত সর্বমোট ৩৮টি চেক ও ভাউচারের অনুকূলে বিপুল অংকের এই টাকা উত্তোলন করা হয়। এছাড়াও জনতা, ইউসিবিএল, রুপালী, অগ্রণী, এবিসহ পৌরসভার ব্যাংক হিসাব থেকে কত টাকা চক্রটি উত্তোলন করেছে, তা আজও নিরুপণ করা যায়নি।
দায়িত্বশীল সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, গাড়ি মেরামত, প্রকৌশল বিভাগের রাস্তা মেরামত ও সংস্কার, কেনাকাটা, স্যানিটারি, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ভাউচারে উল্লেখ করা টাকার বিপরীতে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা টাকার অংকে কোনো মিল নেই। মুড়ি বইয়ে খরচের ভাউচার মোতাবেক টাকার অংক লেখা হলেও ব্যাংকের চেকে (বেয়ারার চেক) বেশি টাকা উল্লেখ আছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার এক কর্মকর্তা জানান, প্রশাসক ও উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বিভাগ (তদন্তকারী কর্মকর্তা) মো. ইয়ারুল ইসলাম (উপ-সচিব) সংশ্লিষ্ট সব খাতাপত্র চেকের মুড়ি বই নিজের হেফাজতে রেখেছেন। ব্যাংক থেকে চেকের (উত্তোলন করা চেক) কপি, বিল ভাউচারের অফিস কপি ইতঃমধ্যে কব্জা করেছেন তিনি। অন্তত ১২টি চেকের পিছনে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান ওরফে চাঁদের জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত তথ্য মিলেছে বলে জানান এ কর্মকর্তা। এছাড়া ৩৮টির মধ্যে বাকি ২৬টি চেকের পিছনে টাকা উত্তোলনকারীর স্বাক্ষর এবং মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে বলেও নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা।

জানা যায়, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান চাঁন স্টোর কিপার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে প্রধান সহকারী হন এবং পরবর্তীতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁন জানান, পৌরসভার চেকে যৌথ স্বাক্ষর করেন মেয়র ও সচিব। সাধারণ শাখার নোটশীট তৈরির দায়িত্ব তাঁর। তিনি আরও বলেন, ‘টাকা তুলতে আমি কখনো ব্যাংকে যায়নি।’ এমনকি চেকের পিছনে স্বাক্ষর করেননি বলেও দাবি তাঁর। পৌরসভার মোট ৩৮টি চেক ও ভাউচারের বিপরীতে পৌনে ১ কোটি টাকার বেশি উত্তোলনের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি। এর মধ্যে ১২টির টাকা উত্তোলনের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে করা হয়েছে বলে স্বীকার করে আসাদুজ্জামান চাঁন জানান, এক মাস আগে লিখিত জবাব তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দাখিল করা হয়েছে। জবাবে চেক জালিয়াতির সাথে জড়িত নয় বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আজমল হোসেন (সাবেক সচিব) ২০০৮ সালে ঝিনাইদহ পৌরসভায় সচিব পদে যোগদান করেন। ২০১৮ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন শেষে যশোর পৌরসভায় বদলি হন। জালিয়াতি করা চেকে স্বাক্ষর রয়েছে তাঁর। এক প্রশ্নের সচিব আজমল বলেন, ‘মেয়র ও আমি যৌথ স্বাক্ষরে চেক দিয়েছি। স্বাক্ষর করার সময় বিল ভাউচারের সাথে চেকে উল্লেখ করা টাকার অংক মিল ছিল। পরবর্তী সময়ে চেকের কাস্টডিয়ান টাকার অংক পাল্টে দিয়েছেন।’

পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) মো. নূর মাহমুদ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় সোনালী, জনতাসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৮টি চেকের মাধ্যমে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। সকল ধরণের প্রমাণ তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। এরপরেও চক্রটির বিরুদ্ধে আজও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি। সঠিক তদন্তে রাঘব বোয়ালদের নাম বেরিয়ে আসছে বলেও ধারণা দেন পৌরসভার দায়িত্বশীল এ কর্মকর্তা।

ঝিনাইদহ পৌরসভার প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (উপ-সচিব) মো. ইয়ারুল ইসলাম জানান, তদন্ত শেষের দিকে। পৌরসভার ব্যাংক হিসাব থেকে লাখ লাখ টাকা তছরুপের সত্যতা মিলেছে। জড়িতদের নামও পাওয়া গেছে। শিগগিরই সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।