ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘এ প্লাস না দিলে বোর্ড-মোড ভেঙে ফেলবানে’

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:২৪:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০২২
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:

পরীক্ষার হলে ফেসবুক লাইভে এসে সমালোচনার মধ্যে পড়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ে ৬ মাস মেয়াদি কোর্সের পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ করেন তিনি।

লাইভে ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলছে। সবাই লিখছে আমি বসে আছি। সবাই লিখছে বাংলায়। আমিতো বাংলায় লিখি না, ইংলিশে লিখি। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল পরীক্ষার হলরুমে ফেসবুক লাইভ দেবো। সেই ইচ্ছা আজ পূরণ হলো। ম্যাডামও দেখি আমার ভিডিও করছেন। আমরা ছাত্রলীগ, যেখানে যাবো সেখানেই বুলেট।’ তিনি বলেন, ‘আমার খাতা দেখবেন ইংরেজিতে মাস্টার্স করা কেউ। স্যাররা ঘুমাচ্ছেন। আমি ইংরেজিতে লিখেছি, সালামও লিখেছি। পাশের শিক্ষার্থীকে বলেন, দেখি তুই কী লিখেছিস। তখন ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বলতে থাকেন- না লিখে আমরা এ+ পেতে চাই। ওই পাশে একটা খালা পরীক্ষা দিচ্ছেন।’

ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘পরীক্ষার খাতায় বায়োডাটায় লিখে দিয়েছি ও গ্রুপের জায়গা লিখে দিয়েছি, এমপি আনার গ্রুপ করি। স্যাররা এ প্লাস না দিলে বোর্ড-মোড ভেঙে ফেলবানে। জয়ও তাই লিখেছে। আমার লাইভটি কালীগঞ্জ ভাইস চেয়ারম্যান দেখছেন। তিনি মন্তব্যে লিখেছেন, গল্প না করে তোরা খাতায় লেখ।’ লাইভে তিনি আরও বলেন, ‘কী সুন্দর হলে পরীক্ষা দিচ্ছি। তোরাতো জীবনে পরীক্ষা দিতে পারবি না, রোজা থেকে পরীক্ষা দিচ্ছি। গোল্ডেন পাবো, এ দেখ সালামও আছে। পরীক্ষার হলে লাইভে আছি। আমার প্রাণের সংগঠন কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এ প্লাসতো পাবোই। ম্যাডামরা সবই বলে দিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন মোবাইলে জানান, ‘আমি তো পরীক্ষা চলাকালে লাইভ করিনি। পরীক্ষা শেষ হলে ছোট একটা লাইভ করেছি।’

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান নাজিম বলেন, ‘পরীক্ষার হলেতো লাইভ করা ঠিক না। তবে সাধারণ সম্পাদক লাইভে এসে কী বলেছেন, সেটি এখনও আমি জানি না। বিষয়টি প্রমাণিত হলে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ইনচার্জ মাহবুব উল ইসলাম জানান, পরীক্ষা তো পরীক্ষাই। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা হোক আর সাধারণ শিক্ষার্থীই হোক কারো ফেসবুক লাইভের সুযোগ নেই। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দেশব্যাপী কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়ে ৬ মাস ও ৩ মাস মেয়াদি কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত লিখিত ও সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা হয়। সূত্র- জাগোনিউজ

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

‘এ প্লাস না দিলে বোর্ড-মোড ভেঙে ফেলবানে’

আপলোড টাইম : ১০:২৪:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৯ এপ্রিল ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন:

পরীক্ষার হলে ফেসবুক লাইভে এসে সমালোচনার মধ্যে পড়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঝিনাইদহে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ে ৬ মাস মেয়াদি কোর্সের পরীক্ষা দেওয়ার সময় ৯ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের একটি লাইভ করেন তিনি।

লাইভে ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষা চলছে। সবাই লিখছে আমি বসে আছি। সবাই লিখছে বাংলায়। আমিতো বাংলায় লিখি না, ইংলিশে লিখি। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল পরীক্ষার হলরুমে ফেসবুক লাইভ দেবো। সেই ইচ্ছা আজ পূরণ হলো। ম্যাডামও দেখি আমার ভিডিও করছেন। আমরা ছাত্রলীগ, যেখানে যাবো সেখানেই বুলেট।’ তিনি বলেন, ‘আমার খাতা দেখবেন ইংরেজিতে মাস্টার্স করা কেউ। স্যাররা ঘুমাচ্ছেন। আমি ইংরেজিতে লিখেছি, সালামও লিখেছি। পাশের শিক্ষার্থীকে বলেন, দেখি তুই কী লিখেছিস। তখন ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বলতে থাকেন- না লিখে আমরা এ+ পেতে চাই। ওই পাশে একটা খালা পরীক্ষা দিচ্ছেন।’

ছাত্রলীগ নেতা বলেন, ‘পরীক্ষার খাতায় বায়োডাটায় লিখে দিয়েছি ও গ্রুপের জায়গা লিখে দিয়েছি, এমপি আনার গ্রুপ করি। স্যাররা এ প্লাস না দিলে বোর্ড-মোড ভেঙে ফেলবানে। জয়ও তাই লিখেছে। আমার লাইভটি কালীগঞ্জ ভাইস চেয়ারম্যান দেখছেন। তিনি মন্তব্যে লিখেছেন, গল্প না করে তোরা খাতায় লেখ।’ লাইভে তিনি আরও বলেন, ‘কী সুন্দর হলে পরীক্ষা দিচ্ছি। তোরাতো জীবনে পরীক্ষা দিতে পারবি না, রোজা থেকে পরীক্ষা দিচ্ছি। গোল্ডেন পাবো, এ দেখ সালামও আছে। পরীক্ষার হলে লাইভে আছি। আমার প্রাণের সংগঠন কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এ প্লাসতো পাবোই। ম্যাডামরা সবই বলে দিচ্ছেন।’

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমন মোবাইলে জানান, ‘আমি তো পরীক্ষা চলাকালে লাইভ করিনি। পরীক্ষা শেষ হলে ছোট একটা লাইভ করেছি।’

বিষয়টি নিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান নাজিম বলেন, ‘পরীক্ষার হলেতো লাইভ করা ঠিক না। তবে সাধারণ সম্পাদক লাইভে এসে কী বলেছেন, সেটি এখনও আমি জানি না। বিষয়টি প্রমাণিত হলে তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক ইনচার্জ মাহবুব উল ইসলাম জানান, পরীক্ষা তো পরীক্ষাই। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা হোক আর সাধারণ শিক্ষার্থীই হোক কারো ফেসবুক লাইভের সুযোগ নেই। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দেশব্যাপী কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন ও গ্রাফিক্স ডিজাইন বিষয়ে ৬ মাস ও ৩ মাস মেয়াদি কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত লিখিত ও সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা হয়। সূত্র- জাগোনিউজ