ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাবি তুলে পিটুনি খেল শিক্ষার্থীরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ মার্চ ২০২২
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাবি করে শিক্ষকের পিটুনি খেয়ে গুরুতর জখম হয়েছে দশম শ্রেণির এনামুল হোসেন ও রবিউল হোসেন নামের দুই ছাত্র। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। আহত দুই ছাত্রকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে এনামুলের হাতের একটি হাড় ফেটে গেছে। এ ঘটনায় আহত এনামুল শৈলকুপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পার্থ প্রতিম শীল ও শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম স্কুলটি পরিদর্শন করে অভিভাবক সমাবেশ করার পরামর্শ দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ের জন্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে।

আহত ছাত্র এনামুল হোসেন জানায়, দীর্ঘদিন স্কুলে কোনো ক্রীড়া অনুষ্ঠান না হওয়ায় কয়েকদিন আগে দশম শ্রেণির ছাত্ররা প্রধান শিক্ষক বরাবর ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য আবেদন করেন। আরেকটি আবেদন করে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আলোচনায় বসেন। এসময় কোনো ক্লাস না হওায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষর্থীরা ক্রিকেট খেলার জন্য ব্যাট ও ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে তিন তলায় তাদের ডাকতে যায়। যাবার পথে স্ট্যাম্প পড়ে শব্দ হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে তিন তলায় উঠে দশম শ্রেণির ক্লাসরুম আটকে স্ট্যাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করে। এসময় দশম শ্রেণির এনামুল হোসেন, রবিউল হোসেন রবিন হোসেন আহত হয়। দশম শ্রেণির ছাত্র ইমাম, আলিফ, ৮ম শ্রেণির ছাত্র হাসান ও ৯ম শ্রেণির ছাত্র সাইফসহ ছাত্রদের অভিযোগ, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাবি করায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ছাত্রদের বেদম প্রহার করেছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী তাঁরা গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলে মিটিংয়ে বসেন। এসময় কিছু বখাটে ছাত্র দাবি আদায়ের নামে ভাঙচুর শুরু করে। ছাত্রদের শান্ত করতে তিনি একটি ছাত্রকে স্ট্যাম্প দিয়ে একটি আঘাত করেন। তবে তা গুরুতর না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপানন্দন কুমার মণ্ডল জানান, বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য ছাত্ররা তাঁদের কাছে একটি আবেদন করে। এ বিষয়টি নিয়ে স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে একটি আলোচনায় বসা হয়। এসময় কিছু ছাত্র দাবি আদায়ের নামে দশম শ্রেণির ক্লাসরুমের নতুন ব্লাকবোর্ড, সিড়ির রেলিং, বাথরুমের বেসিন, কোমটসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। এসময় সহকারী প্রধান শিক্ষক পরিস্থিতি শান্ত করতে বেত দিয়ে ছাত্রদের দু-একটি আঘাত করে, যা গুরুতর নয়।

ঘটনা নিয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনে তিনি স্কুলে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ছাত্রদের পেটানো ঠিক হয়নি বলে জানান। তবে সন্তানদের প্রতি সবসময় খেয়াল রাখা উচিত প্রতিটা অভিভাবকের। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পার্থ প্রতিম শীল বলেন, স্কুল ভাঙচুরের ঘটনা শুনে তিনি গিয়েছিলেন। তবে ছাত্র পেটানোর ঘটনা তাঁকে কেউ জানাননি বলে জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাবি তুলে পিটুনি খেল শিক্ষার্থীরা

আপলোড টাইম : ০৯:২৭:২৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ মার্চ ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস:

বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাবি করে শিক্ষকের পিটুনি খেয়ে গুরুতর জখম হয়েছে দশম শ্রেণির এনামুল হোসেন ও রবিউল হোসেন নামের দুই ছাত্র। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাটফাজিলপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। আহত দুই ছাত্রকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে এনামুলের হাতের একটি হাড় ফেটে গেছে। এ ঘটনায় আহত এনামুল শৈলকুপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পার্থ প্রতিম শীল ও শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম স্কুলটি পরিদর্শন করে অভিভাবক সমাবেশ করার পরামর্শ দিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীরা দাবি আদায়ের জন্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছে।

আহত ছাত্র এনামুল হোসেন জানায়, দীর্ঘদিন স্কুলে কোনো ক্রীড়া অনুষ্ঠান না হওয়ায় কয়েকদিন আগে দশম শ্রেণির ছাত্ররা প্রধান শিক্ষক বরাবর ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য আবেদন করেন। আরেকটি আবেদন করে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আলোচনায় বসেন। এসময় কোনো ক্লাস না হওায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষর্থীরা ক্রিকেট খেলার জন্য ব্যাট ও ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে তিন তলায় তাদের ডাকতে যায়। যাবার পথে স্ট্যাম্প পড়ে শব্দ হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে তিন তলায় উঠে দশম শ্রেণির ক্লাসরুম আটকে স্ট্যাম্প দিয়ে বেদম প্রহার করে। এসময় দশম শ্রেণির এনামুল হোসেন, রবিউল হোসেন রবিন হোসেন আহত হয়। দশম শ্রেণির ছাত্র ইমাম, আলিফ, ৮ম শ্রেণির ছাত্র হাসান ও ৯ম শ্রেণির ছাত্র সাইফসহ ছাত্রদের অভিযোগ, ক্রীড়া অনুষ্ঠানের দাবি করায় স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ছাত্রদের বেদম প্রহার করেছেন।

অভিযোগ সম্পর্কে সহকারী প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী তাঁরা গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে স্কুলে মিটিংয়ে বসেন। এসময় কিছু বখাটে ছাত্র দাবি আদায়ের নামে ভাঙচুর শুরু করে। ছাত্রদের শান্ত করতে তিনি একটি ছাত্রকে স্ট্যাম্প দিয়ে একটি আঘাত করেন। তবে তা গুরুতর না।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপানন্দন কুমার মণ্ডল জানান, বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠানের জন্য ছাত্ররা তাঁদের কাছে একটি আবেদন করে। এ বিষয়টি নিয়ে স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে একটি আলোচনায় বসা হয়। এসময় কিছু ছাত্র দাবি আদায়ের নামে দশম শ্রেণির ক্লাসরুমের নতুন ব্লাকবোর্ড, সিড়ির রেলিং, বাথরুমের বেসিন, কোমটসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে। এসময় সহকারী প্রধান শিক্ষক পরিস্থিতি শান্ত করতে বেত দিয়ে ছাত্রদের দু-একটি আঘাত করে, যা গুরুতর নয়।

ঘটনা নিয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি শুনে তিনি স্কুলে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। ছাত্রদের পেটানো ঠিক হয়নি বলে জানান। তবে সন্তানদের প্রতি সবসময় খেয়াল রাখা উচিত প্রতিটা অভিভাবকের। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পার্থ প্রতিম শীল বলেন, স্কুল ভাঙচুরের ঘটনা শুনে তিনি গিয়েছিলেন। তবে ছাত্র পেটানোর ঘটনা তাঁকে কেউ জানাননি বলে জানান।