ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৯

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৬:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ২৩ বার পড়া হয়েছে

গাংনী অফিস:

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া-চিৎলা সড়কে স্বামী-স্ত্রীকে গাছে বেঁধে অস্ত্রের মুখে মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতভর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাঁদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত সদস্যরা হলেন- মেহেরপুর সদর উপজেলার উত্তর শালিকা গ্রামের অবেদ আলীর ছেলে আলামিন (২৫), একই উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে মিলন হোসেন (২৮), মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত মুকুল জোয়ার্দ্দারের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে খোকন ওরফে প্রতীক (২৬), একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে শাকিল (২২), মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের বাছাদ আলীর ছেলে সবুজ হোসেন (২৫) ও একই গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে শামীম রেজা ওরফে শিপন হোসেন (২৬)।

এছাড়া মোবাইল ফোন ক্রেতা গাংনী থানার কাথুলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে শামীম রেজা (২৭), স্বর্ণালংকার ক্রেতা গাংনী বাজারের স্বর্ণকার সাইফুল ইসলাম (৪০) এবং মোটারসাইকেল ক্রেতা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুনিয়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে জালাল উদ্দীনকে (৪৩) আটক করা হয়েছে।

জানা যায়, গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত মেহেরপুর জেলা, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের একটি চৌকস দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে এসব ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। এসময় লুণ্ঠিত একটি ১৫০ সিসি হাঙ্ক মোটরাসাইকেল, স্বর্ণের দুল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গাংনী থানা পুলিশের চৌকস দলের সদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের কারণে ডাকাতির ঘটনায় পুরো দলটিকে গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, মোটরাসাইকেল ক্রেতা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জালাল উদ্দীন একজন পেশাদার চোরাই মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী। এবং কাথুলীর শামীম রেজার কাজই চোরাইল মোবাইল ফোনের কারবার করা।

ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, গ্রেপ্তারকৃত ৬ ডাকাতের বিরুদ্ধে গাংনী, মুজিবনগর, মেহেরপুর সদর, আলমডাঙ্গাসহ আশপাশের থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরণসহ নানা অভিযোগে ৭ থেকে ৮টি করে মামলা রয়েছে। তারা জেলা এবং জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় গাছ ফেলে ডাকাতি করত। বিভিন্ন স্থানের ডাকাতদের নিয়ে তারা গড়ে তুলেছে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল চক্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এলাকার বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত রাত ৯টার দিকে বাঁশবাড়িয়া-চিৎলা সড়কের রাস্তা গতিরোধ করে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। চিৎলা গ্রামের ডিস ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান তাঁর স্ত্রী মহিমা খাতুন ও শিশু রিতাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের একটি বাগানের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গাছে বেঁধে ফেলে। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি হাঙ্ক মোটরসাইকেল, তিনটি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার নিয়ে চলে যায় ডাকাতরা। এঘটনায় কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ৩৯৫ দণ্ডবিধি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যসহ গ্রেপ্তার ৯

আপলোড টাইম : ০৯:৪৬:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

গাংনী অফিস:

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া-চিৎলা সড়কে স্বামী-স্ত্রীকে গাছে বেঁধে অস্ত্রের মুখে মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন ডাকাতির ঘটনায় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৬ সদস্যসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতভর উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মেহেরপুর সদর, মুজিবনগর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এসব ডাকাতদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাঁদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত সদস্যরা হলেন- মেহেরপুর সদর উপজেলার উত্তর শালিকা গ্রামের অবেদ আলীর ছেলে আলামিন (২৫), একই উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার আব্দুল বারীর ছেলে মিলন হোসেন (২৮), মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত মুকুল জোয়ার্দ্দারের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে খোকন ওরফে প্রতীক (২৬), একই গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে শাকিল (২২), মুজিবনগর উপজেলার পুরন্দরপুর গ্রামের বাছাদ আলীর ছেলে সবুজ হোসেন (২৫) ও একই গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে শামীম রেজা ওরফে শিপন হোসেন (২৬)।

এছাড়া মোবাইল ফোন ক্রেতা গাংনী থানার কাথুলী গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে শামীম রেজা (২৭), স্বর্ণালংকার ক্রেতা গাংনী বাজারের স্বর্ণকার সাইফুল ইসলাম (৪০) এবং মোটারসাইকেল ক্রেতা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কুনিয়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে জালাল উদ্দীনকে (৪৩) আটক করা হয়েছে।

জানা যায়, গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত থেকে শুক্রবার ভোররাত পর্যন্ত মেহেরপুর জেলা, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশের একটি চৌকস দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে এসব ডাকাতকে গ্রেপ্তার করে। এসময় লুণ্ঠিত একটি ১৫০ সিসি হাঙ্ক মোটরাসাইকেল, স্বর্ণের দুল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গাংনী থানা পুলিশের চৌকস দলের সদস্যদের নিরলস পরিশ্রমের কারণে ডাকাতির ঘটনায় পুরো দলটিকে গ্রেপ্তার ও মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, মোটরাসাইকেল ক্রেতা চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার জালাল উদ্দীন একজন পেশাদার চোরাই মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী। এবং কাথুলীর শামীম রেজার কাজই চোরাইল মোবাইল ফোনের কারবার করা।

ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, গ্রেপ্তারকৃত ৬ ডাকাতের বিরুদ্ধে গাংনী, মুজিবনগর, মেহেরপুর সদর, আলমডাঙ্গাসহ আশপাশের থানায় ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিস্ফোরণসহ নানা অভিযোগে ৭ থেকে ৮টি করে মামলা রয়েছে। তারা জেলা এবং জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় গাছ ফেলে ডাকাতি করত। বিভিন্ন স্থানের ডাকাতদের নিয়ে তারা গড়ে তুলেছে একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল চক্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এলাকার বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত রাত ৯টার দিকে বাঁশবাড়িয়া-চিৎলা সড়কের রাস্তা গতিরোধ করে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। চিৎলা গ্রামের ডিস ব্যবসায়ী কামরুজ্জামান তাঁর স্ত্রী মহিমা খাতুন ও শিশু রিতাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের একটি বাগানের মধ্যে নিয়ে গিয়ে গাছে বেঁধে ফেলে। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি হাঙ্ক মোটরসাইকেল, তিনটি মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার নিয়ে চলে যায় ডাকাতরা। এঘটনায় কামরুজ্জামান বাদী হয়ে ৩৯৫ দণ্ডবিধি আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।