ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেনা সদস্যের স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে পাঁচ বিঘা জমি ও বাড়ি দাবি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, গাংনী:

৫ বিঘা জমি ও মেহেরপুর শহরে বাড়ি করে দিতে না পারায় সেনা সদস্যের স্ত্রীর মর্যাদা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগে গ্রাম আদালতে বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ আলী। গত শনিবার সেনা সদস্য সোহান সাইমের বিরুদ্ধে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ওই মেয়ের বাবা ফুলচাঁদ আলী বলেছেন, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে সেনা সদস্য সোহান সাইম ও তাঁর মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে রেজিস্ট্রি না করে সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে চার লাখ টাকা বাকিতে দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে জামাই সোহান সাইম তার বাড়িতে রাত্রীযাপনসহ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে আসছে।

বিয়ের পর ২০২০ সালে সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরি পেলে মেয়ের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে চাপ প্রয়োগ করে। মেয়ের সুখ-শান্তির কথা ভেবে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করে। জামাই সোহান সাইম ট্রেনিং শেষ করে ছুটিতে বাড়িতে আসলে মেয়েকে তার বাড়িতে নেওয়ার কথা বললে সে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

ভুক্তভোগী ওই মেয়ের বাবা আরও জানান, ‘স্ত্রীর মর্যাদা পেতে গত শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আমার মেয়ে জামাই সেনা সদস্য সোহান সাইমের বাড়িতে গেলে সে ও তার পিতা কামরুজ্জামান মারধর ও গালিগালাজ করে ৫ বিঘা জমি ও মেহেরপুর শহরে বাড়ি করে দিতে পারলে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনদের পরামর্শে সোহান সাইমকে বিবাদী করে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করে বিচার চেয়েছি।’

ফুলচাঁদ আলীর মেয়ে ও সোহান সাইমের স্ত্রী বলেন, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজে পড়ার সময় ২০১৮ সালে সোহান সাইম নানাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। একপর্যায়ে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের কারণে সোহান সাইম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। দুজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় রেজিস্ট্রি না করে সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে ৪ লাখ টাকা বাকিতে দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক গত ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে সে তার বাবার বাড়ি গাড়াবাড়িয়াতে না নিয়ে আমার বাবার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করার পরামর্শ দেয়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে তুলবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন সে যৌতুক দাবি, মারধর ও বিয়ের বিষয়ে সব অস্বীকার করছে।

এ বিষয়ে সেনা সদস্য সোহান সাইম বলেন, ফুলচাঁদ আলীর মেয়ের সাথে তাঁর বিয়ে হয়নি। তাঁকে তিনি চেনেন না। স্থানীয়রা জানান, বিয়ে হলে সেনা সদস্য পদে চাকরি হয় না। এমন নিয়ম থাকলেও বিয়ের পরেও কীভাবে চাকরি হলো তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা জানান, মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ আলী সেনা সদস্য সোহান সাইমের বিরুদ্ধে বিয়ের পর যৌতুক চাওয়া, তাঁর মেয়েকে মারধরসহ বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেছে। লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে নোটিশ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সেনা সদস্যের স্ত্রীর স্বীকৃতি দিতে পাঁচ বিঘা জমি ও বাড়ি দাবি

আপলোড টাইম : ০৯:৩৬:২৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

প্রতিবেদক, গাংনী:

৫ বিঘা জমি ও মেহেরপুর শহরে বাড়ি করে দিতে না পারায় সেনা সদস্যের স্ত্রীর মর্যাদা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগে গ্রাম আদালতে বিচার চেয়ে লিখিত আবেদন করেছেন ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ আলী। গত শনিবার সেনা সদস্য সোহান সাইমের বিরুদ্ধে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী ওই মেয়ের বাবা ফুলচাঁদ আলী বলেছেন, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে সেনা সদস্য সোহান সাইম ও তাঁর মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার কারণে রেজিস্ট্রি না করে সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে চার লাখ টাকা বাকিতে দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে জামাই সোহান সাইম তার বাড়িতে রাত্রীযাপনসহ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে আসছে।

বিয়ের পর ২০২০ সালে সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরি পেলে মেয়ের মাধ্যমে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে চাপ প্রয়োগ করে। মেয়ের সুখ-শান্তির কথা ভেবে দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করে। জামাই সোহান সাইম ট্রেনিং শেষ করে ছুটিতে বাড়িতে আসলে মেয়েকে তার বাড়িতে নেওয়ার কথা বললে সে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

ভুক্তভোগী ওই মেয়ের বাবা আরও জানান, ‘স্ত্রীর মর্যাদা পেতে গত শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আমার মেয়ে জামাই সেনা সদস্য সোহান সাইমের বাড়িতে গেলে সে ও তার পিতা কামরুজ্জামান মারধর ও গালিগালাজ করে ৫ বিঘা জমি ও মেহেরপুর শহরে বাড়ি করে দিতে পারলে স্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হবে বলে জানিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। নিরুপায় হয়ে স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনদের পরামর্শে সোহান সাইমকে বিবাদী করে কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাছে লিখিত অভিযোগ করে বিচার চেয়েছি।’

ফুলচাঁদ আলীর মেয়ে ও সোহান সাইমের স্ত্রী বলেন, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের কুতুবপুর স্কুল এন্ড কলেজে পড়ার সময় ২০১৮ সালে সোহান সাইম নানাভাবে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। একপর্যায়ে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের কারণে সোহান সাইম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। দুজনই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় রেজিস্ট্রি না করে সাক্ষীগণের উপস্থিতিতে ৪ লাখ টাকা বাকিতে দেনমোহর নির্ধারণ করে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক গত ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকে সে তার বাবার বাড়ি গাড়াবাড়িয়াতে না নিয়ে আমার বাবার বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করার পরামর্শ দেয়। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে তুলবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন সে যৌতুক দাবি, মারধর ও বিয়ের বিষয়ে সব অস্বীকার করছে।

এ বিষয়ে সেনা সদস্য সোহান সাইম বলেন, ফুলচাঁদ আলীর মেয়ের সাথে তাঁর বিয়ে হয়নি। তাঁকে তিনি চেনেন না। স্থানীয়রা জানান, বিয়ে হলে সেনা সদস্য পদে চাকরি হয় না। এমন নিয়ম থাকলেও বিয়ের পরেও কীভাবে চাকরি হলো তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি এলাকাবাসীর।

কাথুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান রানা জানান, মেহেরপুর সদর উপজেলার হিতিমপাড়া গ্রামের ফুলচাঁদ আলী সেনা সদস্য সোহান সাইমের বিরুদ্ধে বিয়ের পর যৌতুক চাওয়া, তাঁর মেয়েকে মারধরসহ বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ করেছে। লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষকে নোটিশ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।