ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিকৃত যৌনাচার থেকেই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৩৩:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৪৪ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে ৭দিনের ব্যবধানে খুন হয়েছে এক নারীসহ তিনজন। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। প্রায় প্রতিটি হত্যাকান্ডের একই রকম ধরণ দেখে পুলিশও মাঠে নামে অপরাধী শনাক্তে। এরই মধ্যে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার পোড়াহাটী গ্রামে ধর্ষণের পর খুন করা হয় বিবিজান নেছা (৪৫) নামের এক মধ্যবয়সী নারী। এ ঘটনায় জনতার হাতে আটক হয় ইয়াদ আলী মোল্লা নামের এক খুনি। পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তার ৫দিনের রিমান্ড চায়। বিজ্ঞ আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। বিবিজান নেছা হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে বিকৃত যৌনাচার থেকে ইয়াদ আলীর সিরিয়াল কিলার হয়ে উঠার ভয়ঙ্কর গল্প। কিভাবে সে একে-একে তিনটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তার বর্ণনা দেন ঘটনাস্থলে গিয়ে। তার এই বর্ণনা শুনে চমকে ওঠেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সিরিয়াল কিলার ইয়াদ আলী নড়াইল জেলা শহরের বিলডুমুরতলা গ্রামের মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে বিবিজান নেছা (৪৫) নামের এক নারীকে ধর্ষণের পর তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে ইয়াদ আলী মোল্লা। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র‌্যাবে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের ছেলে আবু জাফর বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা করে। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার তেঁতুলতলা এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ইলিয়াস আলী পাটোয়ারি ও ৯ ফেব্রুয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ি ঘরের নিচ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার ধরণ একই রকম দেখে সন্দেহ হলে পুলিশ ওই দুই হত্যার সাথে জড়িত কিনা তা নিয়ে ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় ইয়াদ আলী পুলিশের কাছে স্বীকার করে সে ওই দুই হত্যাকান্ডের সঙ্গেও জড়িত।’


ইয়াদ আলীর দেয়া বর্ণনার উদ্ধৃতি দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ইলিয়াস পাটোয়ারির সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে ইয়াদ আলী। এসময় সে ব্যর্থ হয়ে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাতের পর আঘাত করে হত্যা করে চাঁদপুর জেলায়র কচুয়া উপজেলার নুরপুর গ্রামের বৃদ্ধ ইলিয়াসকে। এরআগে ৩ ফেব্রয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির সঙ্গেও ইয়াদ বিকৃত যৌনাচারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকেও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।’


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার আরো জানান, ‘আমরা তদন্ত করে ও তার হত্যার বর্ণনা দেখে নিশ্চিত হয়েছি যে, বিকৃত যৌনাচার ও ধর্ষণে বাঁধা দেওয়ার কারণে ইয়াদ আলী একে একে তিনটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।’


বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, ‘৩টি ঘটনায় ২টিতে হত্যা মামলা ও ১টিতে অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। এখন ৩টিই হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইয়াদ আলী মোল্লা আরো কোনো হত্যার সাথে জড়িত কিনা সেটাও বের করার চেষ্টা করছি। ইয়াদ আলী মাদক সেবন করে বিকৃত যৌনাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে হানা দিতো। সে নড়াইল থেকে গত ৫ মাস আগে ঝিনাইদহ শহরে আসে। তারপর থেকেই চলে তার এই মিশন।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বিকৃত যৌনাচার থেকেই ভয়ঙ্কর সিরিয়াল কিলার!

আপলোড টাইম : ০২:৩৩:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহে ৭দিনের ব্যবধানে খুন হয়েছে এক নারীসহ তিনজন। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে পুলিশ। প্রায় প্রতিটি হত্যাকান্ডের একই রকম ধরণ দেখে পুলিশও মাঠে নামে অপরাধী শনাক্তে। এরই মধ্যে গত ১০ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার পোড়াহাটী গ্রামে ধর্ষণের পর খুন করা হয় বিবিজান নেছা (৪৫) নামের এক মধ্যবয়সী নারী। এ ঘটনায় জনতার হাতে আটক হয় ইয়াদ আলী মোল্লা নামের এক খুনি। পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তার ৫দিনের রিমান্ড চায়। বিজ্ঞ আদালত দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। বিবিজান নেছা হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে বিকৃত যৌনাচার থেকে ইয়াদ আলীর সিরিয়াল কিলার হয়ে উঠার ভয়ঙ্কর গল্প। কিভাবে সে একে-একে তিনটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তার বর্ণনা দেন ঘটনাস্থলে গিয়ে। তার এই বর্ণনা শুনে চমকে ওঠেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সিরিয়াল কিলার ইয়াদ আলী নড়াইল জেলা শহরের বিলডুমুরতলা গ্রামের মৃত চাঁন মোল্লার ছেলে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবুল বাশার জানান, ‘গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে বিবিজান নেছা (৪৫) নামের এক নারীকে ধর্ষণের পর তাকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে ইয়াদ আলী মোল্লা। পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে র‌্যাবে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় ওই দিন নিহতের ছেলে আবু জাফর বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা করে। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার তেঁতুলতলা এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দা থেকে ইলিয়াস আলী পাটোয়ারি ও ৯ ফেব্রুয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিঁড়ি ঘরের নিচ থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার ধরণ একই রকম দেখে সন্দেহ হলে পুলিশ ওই দুই হত্যার সাথে জড়িত কিনা তা নিয়ে ইয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এসময় ইয়াদ আলী পুলিশের কাছে স্বীকার করে সে ওই দুই হত্যাকান্ডের সঙ্গেও জড়িত।’


ইয়াদ আলীর দেয়া বর্ণনার উদ্ধৃতি দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে এমকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় ইলিয়াস পাটোয়ারির সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করে ইয়াদ আলী। এসময় সে ব্যর্থ হয়ে টিউবওয়েলের হাতল দিয়ে মাথায় আঘাতের পর আঘাত করে হত্যা করে চাঁদপুর জেলায়র কচুয়া উপজেলার নুরপুর গ্রামের বৃদ্ধ ইলিয়াসকে। এরআগে ৩ ফেব্রয়ারি লাউদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ঘুমিয়ে থাকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির সঙ্গেও ইয়াদ বিকৃত যৌনাচারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তাকেও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।’


অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার আরো জানান, ‘আমরা তদন্ত করে ও তার হত্যার বর্ণনা দেখে নিশ্চিত হয়েছি যে, বিকৃত যৌনাচার ও ধর্ষণে বাঁধা দেওয়ার কারণে ইয়াদ আলী একে একে তিনটি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।’


বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. সোহেল রানা বলেন, ‘৩টি ঘটনায় ২টিতে হত্যা মামলা ও ১টিতে অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। এখন ৩টিই হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘ইয়াদ আলী মোল্লা আরো কোনো হত্যার সাথে জড়িত কিনা সেটাও বের করার চেষ্টা করছি। ইয়াদ আলী মাদক সেবন করে বিকৃত যৌনাচার করার জন্য বিভিন্ন স্থানে হানা দিতো। সে নড়াইল থেকে গত ৫ মাস আগে ঝিনাইদহ শহরে আসে। তারপর থেকেই চলে তার এই মিশন।’