ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেহেরপুরের গাংনীতে কলেজ শিক্ষক নজরুলের খামখেয়ালি কাণ্ড

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ২০ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, গাংনী:

মেহেরপুরের গাংনীতে নজরুল ইসলাম নামের এক কলেজ শিক্ষককের খামখেয়ালিপনার কারণে আব্দুল আলিমের দ্বিতীয়তলা ভবন ধসে যেতে বসেছে। ইমারত নীতিমালা ও পৌরসভার ভবন আইন লঙ্ঘন করে মাটি কাটার কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে গাংনী পৌর এলাকার ঈদগাঁহ পাড়ার ওই বাড়ির তলার নীচের অংশ ধসে গেছে। এ ঘটনায় ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ভবন ছেড়ে বাইরে অবস্থান করছেন। অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভুগী আব্দুল আলিম।

বাড়ির মালিক ষোলটাকা ইউনিয়নের বানিয়াপুর গ্রামের আব্দুল আলিম বলেন, ‘১৯৯৫ সালে গাংনী-হাটবোয়ালিয়া সড়কের ঈদগাঁহ পাড়াতে ৩ শতক জমির ওপর দ্বিতলভবন নির্মাণ করে বসবাস করে আসছি। হঠাৎ গত বুধবার হারদী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও বানিয়াপুকুর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম তার বাড়ির সাথে বাড়ি নির্মাণের জন্য এসকেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে। মাটি কাটতে কাটতে বাড়ির নীচ পর্যন্ত চলে আসে। বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ির নীচের অংশ ধসে যায়। এছাড়া ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাড়িটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।’ তিনি এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও দায়ী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রভাবশালী কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম গোপালনগর গ্রামের প্রবেশ মুখে ও পৌরসভার সীমানা পিলারের কাছে একটি সেতু রয়েছে, ক্ষমতার দাপটে সেতুর মুখে প্রাচীর দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ব্রিজ দখলের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

আব্দুল আলিমের স্ত্রী জেসমিন খাতুন কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, অনেক কষ্ট করে জীবনের সব আয় দিয়ে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে বসবাস করার পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া দিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলামের ক্ষমতার দাপটে তাদের সপ্নের ঘর ভেঙে পড়েছে। তিনি অভিযুক্তের বিচারের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবি করেন।

কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, একটা ঘটনা ঘটে গেছে, কী আর করার। তবে ভবনটাকে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে। বামন্দী ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা ইছাহাক আলী বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাটি সরেজমিন তদন্ত করার জন্য টিম পাঠানো হয়েছে। তবে ভবন যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে ভবনের বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান না করার জন্য বলা হয়েছে।

গাংনী পৌর মেয়র আহমেদ আলী বলেন, নজরুল ইসলাম ভবন অনুমোদনের শর্ত ভঙ্গ করেছে। আইনের বিষয়টি দেখভাল করা হচ্ছে অবশ্যই আইন অনুযায়ী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি খানম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন মালিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, বিষয়টি পৌর মেয়রের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেহেরপুরের গাংনীতে কলেজ শিক্ষক নজরুলের খামখেয়ালি কাণ্ড

আপলোড টাইম : ০৮:১০:৩২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২

প্রতিবেদক, গাংনী:

মেহেরপুরের গাংনীতে নজরুল ইসলাম নামের এক কলেজ শিক্ষককের খামখেয়ালিপনার কারণে আব্দুল আলিমের দ্বিতীয়তলা ভবন ধসে যেতে বসেছে। ইমারত নীতিমালা ও পৌরসভার ভবন আইন লঙ্ঘন করে মাটি কাটার কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে গাংনী পৌর এলাকার ঈদগাঁহ পাড়ার ওই বাড়ির তলার নীচের অংশ ধসে গেছে। এ ঘটনায় ভবনের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে ভবন ছেড়ে বাইরে অবস্থান করছেন। অভিযুক্ত নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভুগী আব্দুল আলিম।

বাড়ির মালিক ষোলটাকা ইউনিয়নের বানিয়াপুর গ্রামের আব্দুল আলিম বলেন, ‘১৯৯৫ সালে গাংনী-হাটবোয়ালিয়া সড়কের ঈদগাঁহ পাড়াতে ৩ শতক জমির ওপর দ্বিতলভবন নির্মাণ করে বসবাস করে আসছি। হঠাৎ গত বুধবার হারদী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও বানিয়াপুকুর গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম তার বাড়ির সাথে বাড়ি নির্মাণের জন্য এসকেভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে। মাটি কাটতে কাটতে বাড়ির নীচ পর্যন্ত চলে আসে। বৃহস্পতিবার ভোরে বাড়ির নীচের অংশ ধসে যায়। এছাড়া ভবনের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। বাড়িটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।’ তিনি এ ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও দায়ী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পৌর মেয়র ও গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, প্রভাবশালী কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম গোপালনগর গ্রামের প্রবেশ মুখে ও পৌরসভার সীমানা পিলারের কাছে একটি সেতু রয়েছে, ক্ষমতার দাপটে সেতুর মুখে প্রাচীর দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করলেও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। ব্রিজ দখলের কারণে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়ে। প্রভাবশালী হওয়ার কারণে কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

আব্দুল আলিমের স্ত্রী জেসমিন খাতুন কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে বলেন, অনেক কষ্ট করে জীবনের সব আয় দিয়ে দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে বসবাস করার পাশাপাশি বাড়ি ভাড়া দিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলামের ক্ষমতার দাপটে তাদের সপ্নের ঘর ভেঙে পড়েছে। তিনি অভিযুক্তের বিচারের পাশাপাশি ক্ষতিপূরণের দাবি করেন।

কলেজ শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, একটা ঘটনা ঘটে গেছে, কী আর করার। তবে ভবনটাকে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে। বামন্দী ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা ইছাহাক আলী বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাটি সরেজমিন তদন্ত করার জন্য টিম পাঠানো হয়েছে। তবে ভবন যে কোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ কারণে ভবনের বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান না করার জন্য বলা হয়েছে।

গাংনী পৌর মেয়র আহমেদ আলী বলেন, নজরুল ইসলাম ভবন অনুমোদনের শর্ত ভঙ্গ করেছে। আইনের বিষয়টি দেখভাল করা হচ্ছে অবশ্যই আইন অনুযায়ী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমি খানম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবন মালিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, বিষয়টি পৌর মেয়রের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।