ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে খাল খননে আবাদি জমি নষ্টের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩৭ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, ডাকবাংলা:

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে রাজারাম খালটি পুনঃখননের মাটি দিয়ে কৃষকদের জমিতে পাড় তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এলাকার কৃষকদের শত শত বিঘা আবাদি জমি নষ্ট করে পাড় তৈরির বিষয়টি কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে খালটি পুনঃখনন করতে সিন্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খননের মাটি মালিকানাধীন জমিতে ফেলে শুধু পাড়ই তৈরি করা হয়নি। সেখানে মালিকানা জমির ফসল ও ঘর-বাড়িতে মাটি ফেলে নষ্টের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়াশুলা ও জিয়ালা গ্রামের কৃষকরা। বর্তমান এই এলাকার কৃষক ও খাল পুনঃখননের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৬ দিন মধুহাটি ইউনিয়ন অংশে কাজ বন্ধ রয়েছে। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী লোকজন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাজারাম খালটি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি, গান্না এবং সাগান্না ইউনিয়নের গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে একপ্রান্ত বেগবতি নদীতে মিলেছে। খালটি পূর্বে এলাকার কৃষকদের উপকারে আসলেও ভরাট হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েক বছর পানি নিষ্কাশনের জন্য খালটি তেমন উপকারে আসছিল না। বর্তমান সরকার ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত) এই প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাজারাম খালের ১১ দশমিক ৬৭৬ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজ করতে অনুমতি দেয়। কাজটি করার জন্য ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ডাব্লু ১০/২০২০/২১ প্যাকেজ প্রদাণ করা হয়। যার প্রাককালীন মূল্য নির্ধারণ হয় ২ কোটি ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার ৪১ টাকা ৩২ পয়সা। চুক্তি মূল্য ২ কোটি ২৯ লাখ ৩১ হাজার ১৩৭ টাকা ৮৮ পয়সা। এই খালের পুনঃখননের কাজটি পান কুষ্টিয়ার চৌরহাসের মো. নাসির উদ্দিন মোল্লা। কর্তৃপক্ষ তাকে ২৫/০৪/২১ তারিখে কার্যাদেশ প্রদান করেন এবং ২৬/০৪/২১ তারিখে প্রতিষ্ঠানটি পুনঃখনন কাজ শুরু করেন। বর্তমান এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ও খনন কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরোধে কাজটি মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় কাজ বন্ধ রয়েছে।

এবিষয়ে মধুহাটি ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বিশ্বাস বলেন, খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে এলাকার কৃষকদের উপকারের জন্য। কিন্তু খননের মাটি ফেলে, কৃষকদের শতশত আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে এটা দুঃখজনক। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কৃষকদের ক্ষতির বিষয়ে কথা বলেছি। তারা দ্রুত একটা সমাধান দিবেন বলে তিনি জানান।

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মহসিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের নিজেদের জমিতে খালটি পুনঃখনন কাজ করছেন। পাড় তৈরির জন্য সাময়ীক ভাবে খননের মাটি কৃষকদের জমিতে পড়েছে। তারা কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কাজটি চলমান। খালের পাড়ে ডাইপ দেবার সময় মাটি সরিয়ে নেয়া হবে। এরপরেও যদি মাটি কৃষকদের জমিতে থেকে যায় এবং কৃষকরা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন হয়, তাহলে মাটি সরকারের নিয়মানুযায়ী সরিয়ে নেয়া হবে

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ঝিনাইদহে খাল খননে আবাদি জমি নষ্টের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ০৮:২৪:১৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২

প্রতিবেদক, ডাকবাংলা:

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে রাজারাম খালটি পুনঃখননের মাটি দিয়ে কৃষকদের জমিতে পাড় তৈরির অভিযোগ উঠেছে। এলাকার কৃষকদের শত শত বিঘা আবাদি জমি নষ্ট করে পাড় তৈরির বিষয়টি কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে খালটি পুনঃখনন করতে সিন্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু খননের মাটি মালিকানাধীন জমিতে ফেলে শুধু পাড়ই তৈরি করা হয়নি। সেখানে মালিকানা জমির ফসল ও ঘর-বাড়িতে মাটি ফেলে নষ্টের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মধুহাটি ইউনিয়নের বেড়াশুলা ও জিয়ালা গ্রামের কৃষকরা। বর্তমান এই এলাকার কৃষক ও খাল পুনঃখননের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিরোধী অবস্থান নেওয়ায় গতকাল বুধবার পর্যন্ত ৬ দিন মধুহাটি ইউনিয়ন অংশে কাজ বন্ধ রয়েছে। এবিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী লোকজন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, রাজারাম খালটি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি, গান্না এবং সাগান্না ইউনিয়নের গ্রামের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়ে একপ্রান্ত বেগবতি নদীতে মিলেছে। খালটি পূর্বে এলাকার কৃষকদের উপকারে আসলেও ভরাট হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েক বছর পানি নিষ্কাশনের জন্য খালটি তেমন উপকারে আসছিল না। বর্তমান সরকার ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত) এই প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাজারাম খালের ১১ দশমিক ৬৭৬ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজ করতে অনুমতি দেয়। কাজটি করার জন্য ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ডাব্লু ১০/২০২০/২১ প্যাকেজ প্রদাণ করা হয়। যার প্রাককালীন মূল্য নির্ধারণ হয় ২ কোটি ৫৪ লাখ ৭৯ হাজার ৪১ টাকা ৩২ পয়সা। চুক্তি মূল্য ২ কোটি ২৯ লাখ ৩১ হাজার ১৩৭ টাকা ৮৮ পয়সা। এই খালের পুনঃখননের কাজটি পান কুষ্টিয়ার চৌরহাসের মো. নাসির উদ্দিন মোল্লা। কর্তৃপক্ষ তাকে ২৫/০৪/২১ তারিখে কার্যাদেশ প্রদান করেন এবং ২৬/০৪/২১ তারিখে প্রতিষ্ঠানটি পুনঃখনন কাজ শুরু করেন। বর্তমান এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ও খনন কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরোধে কাজটি মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় কাজ বন্ধ রয়েছে।

এবিষয়ে মধুহাটি ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন বিশ্বাস বলেন, খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে এলাকার কৃষকদের উপকারের জন্য। কিন্তু খননের মাটি ফেলে, কৃষকদের শতশত আবাদি জমি নষ্ট হচ্ছে এটা দুঃখজনক। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সাথে কৃষকদের ক্ষতির বিষয়ে কথা বলেছি। তারা দ্রুত একটা সমাধান দিবেন বলে তিনি জানান।

ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী মহসিন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের নিজেদের জমিতে খালটি পুনঃখনন কাজ করছেন। পাড় তৈরির জন্য সাময়ীক ভাবে খননের মাটি কৃষকদের জমিতে পড়েছে। তারা কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে কাজটি চলমান। খালের পাড়ে ডাইপ দেবার সময় মাটি সরিয়ে নেয়া হবে। এরপরেও যদি মাটি কৃষকদের জমিতে থেকে যায় এবং কৃষকরা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এমন হয়, তাহলে মাটি সরকারের নিয়মানুযায়ী সরিয়ে নেয়া হবে