ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেদেনীদের ‘চাঁদাবাজিতে’ অতিষ্ট মেহেরপুরবাসী

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৭:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

মিজানুর রহমান, মেহেরপুর:

আপনি রিকশায় যাচ্ছেন, আপনার গতিরোধ করে দাঁড়াবে এক দল নারী। আপনি হেঁটে যাচ্ছেন, আপনার সামনে এসে দাঁড়াবে তারা। তাদের কারো হাতে ছোট বাক্স, যার ভেতর নানা ধরনের সাপ। কারো হাতে তাবিজ-কবজ। আপনি তাদের চাঁদা না দিয়ে পার পারবেন না। মেহেরপুর শহরে পথচারী- দোকানিদের জন্য এখন এক যন্ত্রণার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বেদেনীর দল। বলা যায় তাদের দৌরাত্ম্যে একরকম অতিষ্ঠ শহরবাসী।

গত কয়েকদিন ধরে মেহেরপুরে শহরের থানা সড়ক, বড় বাজার, কোর্ট মোড় এলাকায় বেদেনীদের বহর দেখা যাচ্ছে। দলবদ্ধ বেদিনীরা কাউকে দেখলেই বলছে, ‘আমাদের ঘৃণা করিস না। কিছু টাকা দে। সাপের জন্য খাবার কিনব। তুই অনেক সুখ পাবি, তোর কল্যাণ হবে।’ এসব বলে মানুষকে টাকা দিতে বাধ্য করছে বেদেনীরা। মানুষের পথ আগলে হরহামেশাই অলি-গলিতে এমন কথায় চাঁদা তুলছে বেদে তরুণীরা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছোট আকারের সাপের বাক্স মেলে ধরে হঠাৎ গতিরোধ করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে পথচারীরা। বাক্সটি সামনে ধরে রেখে টাকা চায়। না দেওয়া পর্যন্ত পথ আগলে রাখে বেদেনীরা। অল্প টাকায় মানে না তারা। অনেক সময় বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পথচারীদের অশালীন গালিও দিচ্ছে এরা। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ব্যস্ত পথচারীরা। সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত ৭ থেকে ১৫ জনের উঠতি বয়সের বেদেনীরা শহরের প্রধান সড়কের দু’পাশের পথচারীদের সাপের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের দৃশ্য সরেজমিনে দেখা গেছে।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ এক দল বেদে মেহেরপুর শহরের উপকণ্ঠে সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামে আস্তানা গড়ে তুলেছে। কিছুদিন আগেও এরা গ্রামাঞ্চলে গিয়ে বাতব্যথায় সিঙ্গা লাগানো, ‘দাঁতের পোকা’ তোলা, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ও সাপ খেলা দেখানো, তাবিজ-কবজ বিক্রি, ঝাঁড়-ফোক দিয়ে আয় করত। সাপের খেলা দেখিয়ে আর নানা কথায় ওষুধ বিক্রি করে চলত ওদের সংসার। কিন্তু এখন কায়িক শ্রম অবজ্ঞা করে সহজ রাস্তায় আয়ের লোভে এরা ‘চাঁদাবাজি’ পেশা বেছে নিয়েছে। মানুষকে সাপের ভয় দেখিয়ে পথ আগলে চাঁদা অদায় করছে দাপটের সঙ্গে। বিপজ্জনক সাপ দেখে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নীরবতায় মানুষও দিশাহারা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বেদেনীদের ‘চাঁদাবাজিতে’ অতিষ্ট মেহেরপুরবাসী

আপলোড টাইম : ০৮:১৭:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

মিজানুর রহমান, মেহেরপুর:

আপনি রিকশায় যাচ্ছেন, আপনার গতিরোধ করে দাঁড়াবে এক দল নারী। আপনি হেঁটে যাচ্ছেন, আপনার সামনে এসে দাঁড়াবে তারা। তাদের কারো হাতে ছোট বাক্স, যার ভেতর নানা ধরনের সাপ। কারো হাতে তাবিজ-কবজ। আপনি তাদের চাঁদা না দিয়ে পার পারবেন না। মেহেরপুর শহরে পথচারী- দোকানিদের জন্য এখন এক যন্ত্রণার নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বেদেনীর দল। বলা যায় তাদের দৌরাত্ম্যে একরকম অতিষ্ঠ শহরবাসী।

গত কয়েকদিন ধরে মেহেরপুরে শহরের থানা সড়ক, বড় বাজার, কোর্ট মোড় এলাকায় বেদেনীদের বহর দেখা যাচ্ছে। দলবদ্ধ বেদিনীরা কাউকে দেখলেই বলছে, ‘আমাদের ঘৃণা করিস না। কিছু টাকা দে। সাপের জন্য খাবার কিনব। তুই অনেক সুখ পাবি, তোর কল্যাণ হবে।’ এসব বলে মানুষকে টাকা দিতে বাধ্য করছে বেদেনীরা। মানুষের পথ আগলে হরহামেশাই অলি-গলিতে এমন কথায় চাঁদা তুলছে বেদে তরুণীরা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছোট আকারের সাপের বাক্স মেলে ধরে হঠাৎ গতিরোধ করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে পথচারীরা। বাক্সটি সামনে ধরে রেখে টাকা চায়। না দেওয়া পর্যন্ত পথ আগলে রাখে বেদেনীরা। অল্প টাকায় মানে না তারা। অনেক সময় বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পথচারীদের অশালীন গালিও দিচ্ছে এরা। এমন পরিস্থিতিতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন ব্যস্ত পথচারীরা। সকালে থেকে দুপুর পর্যন্ত ৭ থেকে ১৫ জনের উঠতি বয়সের বেদেনীরা শহরের প্রধান সড়কের দু’পাশের পথচারীদের সাপের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ আদায়ের দৃশ্য সরেজমিনে দেখা গেছে।

জানা গেছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ এক দল বেদে মেহেরপুর শহরের উপকণ্ঠে সদর উপজেলার গোভিপুর গ্রামে আস্তানা গড়ে তুলেছে। কিছুদিন আগেও এরা গ্রামাঞ্চলে গিয়ে বাতব্যথায় সিঙ্গা লাগানো, ‘দাঁতের পোকা’ তোলা, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ও সাপ খেলা দেখানো, তাবিজ-কবজ বিক্রি, ঝাঁড়-ফোক দিয়ে আয় করত। সাপের খেলা দেখিয়ে আর নানা কথায় ওষুধ বিক্রি করে চলত ওদের সংসার। কিন্তু এখন কায়িক শ্রম অবজ্ঞা করে সহজ রাস্তায় আয়ের লোভে এরা ‘চাঁদাবাজি’ পেশা বেছে নিয়েছে। মানুষকে সাপের ভয় দেখিয়ে পথ আগলে চাঁদা অদায় করছে দাপটের সঙ্গে। বিপজ্জনক সাপ দেখে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নীরবতায় মানুষও দিশাহারা।