ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিহত বিজিবি সোর্স হযরত আলীর দাফন সম্পন্ন : এলাকায় আতঙ্ক! , একজন থানা হেফাজতে

দর্শনা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৯২ বার পড়া হয়েছে

দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত বিজিবির সোর্স ও কৃষক হযরত আলীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের কবরস্থানে গতকাল সন্ধ্যার পর হযরত আলীর দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়। এর আগে বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে মরদেহের ময়নাতদন্তশেষে লাশ গ্রামে পৌঁছালে এক হৃদয়-বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। গ্রামের শতশত মানুষ শেষবারের মত দেখতে হযরত আলীর বাড়িতে ছুটে আসেন।

এদিকে, এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে সুমি খাতুন দর্শনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাস্তিপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে জসিমকে থানা হেফাজতে নিয়েছে দর্শনা থানা পুলিশ। তবে হত্যার কারণ এখনো নিশ্চিত না হওয়া গেলেও প্রশাসনের নিকট চোরাচালানের তথ্য দেওয়ার জন্য তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে স্থানীয় অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ‘নিহত হযরত আলী দীর্ঘদিন ধরেই বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করেন। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির সোর্স হওয়ায় চোরাচালানীদের কাছে অনেক আগে থেকেই সে শত্রু হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এরই জেরে সুযোগ বুঝে হয়তো চোরাচালানীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।’

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবির জানান, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। হত্যার আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। একইসাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জসিম নামের একব্যক্তিকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে কে বা কারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি। হত্যা ঘটনার ক্লু ও আসামী আটকে পুলিশের একাধিক টিম তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। খুব দ্রুত আমরা হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করতে পারবো বলে আশা করছি।’

অপরদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের পর অত্র এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতি বছরেই সীমান্তবর্তী এই নাস্তিপুর গ্রামে সোর্স হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় গ্রামবাসী। কারণ ২০২০ সালে একই গ্রামের একই পাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে বিজিবির সোর্স ওমিদুলকে কে বা কারা হত্যা করে সীমান্তের ভারতের অভ্যান্তরে লাশ ফেলে রেখেছিলো। সেই বিচার না হতেই ঘটলো আরেকটি হত্যাকাণ্ড।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে বিজিবির সোর্স ও কৃষক হযরত আলী (৫৫) কে দুর্বৃত্তরা ঘরের জানালা দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে সেখানেই হযরত আলীর মৃত্যু হয়। সংসার জীবনে হযরত আলী তিন সন্তানের জনক ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

নিহত বিজিবি সোর্স হযরত আলীর দাফন সম্পন্ন : এলাকায় আতঙ্ক! , একজন থানা হেফাজতে

আপলোড টাইম : ০৯:১৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১

দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত বিজিবির সোর্স ও কৃষক হযরত আলীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের কবরস্থানে গতকাল সন্ধ্যার পর হযরত আলীর দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়। এর আগে বিকেলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে মরদেহের ময়নাতদন্তশেষে লাশ গ্রামে পৌঁছালে এক হৃদয়-বিদারক দৃশ্যের অবতারণ হয়। গ্রামের শতশত মানুষ শেষবারের মত দেখতে হযরত আলীর বাড়িতে ছুটে আসেন।

এদিকে, এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে সুমি খাতুন দর্শনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এছাড়া এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নাস্তিপুর গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে জসিমকে থানা হেফাজতে নিয়েছে দর্শনা থানা পুলিশ। তবে হত্যার কারণ এখনো নিশ্চিত না হওয়া গেলেও প্রশাসনের নিকট চোরাচালানের তথ্য দেওয়ার জন্য তাকে হত্যা করা হতে পারে বলে স্থানীয় অনেকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের কাছে মন্তব্য করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাংবাদিকদের স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ‘নিহত হযরত আলী দীর্ঘদিন ধরেই বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করেন। সীমান্ত এলাকায় বিজিবির সোর্স হওয়ায় চোরাচালানীদের কাছে অনেক আগে থেকেই সে শত্রু হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এরই জেরে সুযোগ বুঝে হয়তো চোরাচালানীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।’

দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবির জানান, ‘ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। হত্যার আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে দুই রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। একইসাথে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জসিম নামের একব্যক্তিকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে কে বা কারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি। হত্যা ঘটনার ক্লু ও আসামী আটকে পুলিশের একাধিক টিম তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। খুব দ্রুত আমরা হত্যার প্রকৃত রহস্য উন্মোচন করতে পারবো বলে আশা করছি।’

অপরদিকে, এ হত্যাকাণ্ডের পর অত্র এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রতি বছরেই সীমান্তবর্তী এই নাস্তিপুর গ্রামে সোর্স হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয় গ্রামবাসী। কারণ ২০২০ সালে একই গ্রামের একই পাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে বিজিবির সোর্স ওমিদুলকে কে বা কারা হত্যা করে সীমান্তের ভারতের অভ্যান্তরে লাশ ফেলে রেখেছিলো। সেই বিচার না হতেই ঘটলো আরেকটি হত্যাকাণ্ড।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে বিজিবির সোর্স ও কৃষক হযরত আলী (৫৫) কে দুর্বৃত্তরা ঘরের জানালা দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। এসময় পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে সেখানেই হযরত আলীর মৃত্যু হয়। সংসার জীবনে হযরত আলী তিন সন্তানের জনক ছিলেন।