ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দর্শনায় গভীররাতে বিজিবি সোর্সকে গুলি করে হত্যা!

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১০৫ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় গভীর রাতে হযরত আলী (৫৫) নামের এক বিজিবির সোর্সকে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতরাত একটার দিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুলির শব্দে পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হযরত আলীকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। এসময় জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে রাত পৌনে তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত হযরত আলী নাস্তিপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত রইস উদ্দীনের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক হলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি’র) সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।


নিহত হযরত আলীর ছেলে নাঈম হাসান তৌফিক বলেন, ‘রাত আটটার দিকে রাতের খাবার খেয়ে বাবা ও মা আমার পাশের ঘরেই ঘুমিয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পরে আমিও ঘুমিয়ে পড়ি। মাঝরাতে হঠাৎ গুলির বিকট শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। এসময় মায়ের চিৎকারে পাশের ঘরে ছুটে যেয়ে দেখি বাবার মাথা দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। রাস্তার ধারের জানালাটাও খোলা। এসময় আমার চাচাতো ভাই মুকুলসহ প্রতিবেশিরাও ছুটে আসে। সময় নষ্ট না করে মুকুল ভাই ও আমি বাবাকে মোটরসাইকেলযোগে প্রথমে দর্শনার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কেউ দরজা না খুললে আমরা সেখান থেকে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।’


নিহত হযরত আলীর ছোট ভাই মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে মুকুল হোসেন বলেন, ‘আমার চাচার সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ ছিল না। তিনি কৃষিকাজসহ বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি’র) লাইন ম্যান (সোর্স) হিসেবেও কাজ করতেন। কেন তাঁকে এভাবে গুলি করা হলো, আর কেই বা করলো? আমাদের বুঝে আসছে না।’


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরব হোসেন বলেন, ‘রাত সোয়া দুইটার দিকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হযরত আলী নামের এক ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তার পরিবারের সদস্যরা জানায় তাঁর মাথায় গুলি করা হয়েছে। মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় প্রথমেই আমরা রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। তবে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌন তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে গুলিটি এখনও তার মাথার মধ্যেই আছে।’


এবিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি ও দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত ওই কৃষক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন বলে জানতে পেরেছি। তবে ঠিক কি কারণে কে বা কারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি। ঘটনাটির তদন্তে ও অপরাধী আটকে পুলিশের একাধিক কাজ করছে।’

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনায় গভীররাতে বিজিবি সোর্সকে গুলি করে হত্যা!

আপলোড টাইম : ০৯:২০:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১

চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় গভীর রাতে হযরত আলী (৫৫) নামের এক বিজিবির সোর্সকে ঘুমন্ত অবস্থায় গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতরাত একটার দিকে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গুলির শব্দে পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভাঙলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হযরত আলীকে দ্রুত উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। এসময় জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে রাত পৌনে তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত হযরত আলী নাস্তিপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত রইস উদ্দীনের ছেলে। তিনি পেশায় কৃষক হলেও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি’র) সোর্স হিসেবে কাজ করতেন।


নিহত হযরত আলীর ছেলে নাঈম হাসান তৌফিক বলেন, ‘রাত আটটার দিকে রাতের খাবার খেয়ে বাবা ও মা আমার পাশের ঘরেই ঘুমিয়ে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পরে আমিও ঘুমিয়ে পড়ি। মাঝরাতে হঠাৎ গুলির বিকট শব্দে আমার ঘুম ভেঙে যায়। এসময় মায়ের চিৎকারে পাশের ঘরে ছুটে যেয়ে দেখি বাবার মাথা দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছে। রাস্তার ধারের জানালাটাও খোলা। এসময় আমার চাচাতো ভাই মুকুলসহ প্রতিবেশিরাও ছুটে আসে। সময় নষ্ট না করে মুকুল ভাই ও আমি বাবাকে মোটরসাইকেলযোগে প্রথমে দর্শনার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে কেউ দরজা না খুললে আমরা সেখান থেকে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।’


নিহত হযরত আলীর ছোট ভাই মৃত জাহাঙ্গীরের ছেলে মুকুল হোসেন বলেন, ‘আমার চাচার সঙ্গে কারো কোনো বিরোধ ছিল না। তিনি কৃষিকাজসহ বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি’র) লাইন ম্যান (সোর্স) হিসেবেও কাজ করতেন। কেন তাঁকে এভাবে গুলি করা হলো, আর কেই বা করলো? আমাদের বুঝে আসছে না।’


চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরব হোসেন বলেন, ‘রাত সোয়া দুইটার দিকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হযরত আলী নামের এক ব্যক্তিকে জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। তার পরিবারের সদস্যরা জানায় তাঁর মাথায় গুলি করা হয়েছে। মাথা থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় প্রথমেই আমরা রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেছি। তবে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌন তিনটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে গুলিটি এখনও তার মাথার মধ্যেই আছে।’


এবিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি ও দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মুন্না বিশ্বাস স্যার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত ওই কৃষক বিজিবির সোর্স হিসেবে কাজ করতেন বলে জানতে পেরেছি। তবে ঠিক কি কারণে কে বা কারা তাঁকে গুলি করে হত্যা করেছে সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কিছুই জানা যায়নি। ঘটনাটির তদন্তে ও অপরাধী আটকে পুলিশের একাধিক কাজ করছে।’