ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

৯ মাসে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকার স্বর্ণ আটক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:০৬:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২
  • / ১৪ বার পড়া হয়েছে

স্বর্ণের প্রকৃত মালিকরা অদৃশ্য থেকে যাওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে বেড়েছে স্বর্ণ চোরাকারবারিদের তৎপরতা। সর্বশেষ কাস্টমসের গোয়েন্দা সংস্থা ও বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার স্বর্র্ণসহ আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি চক্রের দুই ভারতীয় ও এক বাংলাদেশী স্বর্র্ণ চোরাকারবারিকে আটক করেছে। গত ৯ মাসে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ৮ কোটি ২০ লাখ টাকার স্বর্ণ আটক করেছে। দামুড়হুদা ও দর্শনা থানায় ৯টি মামলায় ৯ জনকে স্বর্ণবহনকারী হিসেবে আটক করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তবে দুই দেশের মধ্যে স্বর্ণ চোরাচালান দীর্ঘদিনের হলেও মূল মালিক কে বা কারা, তা অদৃশ্যই থেকে যায়। প্রকৃত মালিকরা আড়ালে থাকলে চোরাচালান কখনো বন্ধ হবে না বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই দর্শনা ও দামুড়হুদা সীমান্তবর্তী এলাকাটি যেন স্বর্র্ণসহ অন্যান্য চোরাচালানীদের একটি অন্যতম রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সম্প্রতি বেনাপোল শুল্ক ও গোয়েন্দা সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে রাজস্ব কর্মকর্তা আ. রহিমের নেতৃত্বে একটি টিম দর্শনা চেকপোস্ট থেকে আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের সদস্য ভারতের কলকাতা শহরের অনুপ কুমার গুপ্ত (৪৫) ও রাজেশ কুমারকে (৪২) ৪৫ লাখ টাকার ১১টি স্বর্ণের বার জুতার ভেতর থেকে উদ্ধার করে। একই দিনে যশোর বিজিবি-৪৯ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি টহল দল দামুড়হুদার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে থেকে এক কোটি টাকার স্বর্ণ মোটরসাইকেলসহ চুয়াডাঙ্গা বেলগাছি গ্রামের আরিফ বিল্লালের ছেলে মারফ বিল্লাহকে (২৮) আটক করেন। তারা দিন হাজিরায় ও বহনকারী লেবার হিসেবে কাজ করেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণের সামনেই বলেন।

দর্শনা ও দামুড়হুদা থানা পুলিশ গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ২০২০ সালে দর্শনা থানা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৮টি স্বর্ণের মামলায় ৮ জনকে আটক দেখানো হয়েছে। এবং চলতি বছরে দামুড়হুদা থানায় একটি স্বর্ণের মামলায় একজনকে বহনকারী হিসেবে আটক দেখানো হয়েছে। তারা সবাই বহনকারী। মালামালের মূল মালিক কি আইনের আওতায় আসে না বা নাম প্রকাশ পায় না, এমন প্রশ্ন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেককে করা হলে তিনি জানান, অধিকাংশ স্বর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবির হাতে ধরা পড়ে। সে হিসেবে বিজিবি যেভাবে এজাহার দেয়, সেভাবে তদন্ত করা হয়। তার বাইরে যাওয়া যায় না। তাছাড়া যারা মালামালসহ আটক হয়, তারা খুবই চতুর, কিছুই বলতে চায় না।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. ইশতিয়াক পিএসসি জানান, ‘আমি চলতি বছরের ২২ মার্চ যোগদান করার পর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও দামুড়হুদা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ কেজি ১৯১.৪৮ গ্রাম স্বর্র্ণ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৮ কোটি ২০ লাখ ২৭ হাজার ১৫০ টাকা। তবে সীমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে। চোরাকারবারিরা যত কৌশল অবলম্বন করুক না কেন, ধরা তাদের পড়তেই হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

৯ মাসে ৮ কোটি ২০ লাখ টাকার স্বর্ণ আটক

আপলোড টাইম : ০৫:০৬:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২২

স্বর্ণের প্রকৃত মালিকরা অদৃশ্য থেকে যাওয়ায় বন্ধ হচ্ছে না চোরাচালান
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলাগুলোতে বেড়েছে স্বর্ণ চোরাকারবারিদের তৎপরতা। সর্বশেষ কাস্টমসের গোয়েন্দা সংস্থা ও বিজিবি পৃথক অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকার স্বর্র্ণসহ আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি চক্রের দুই ভারতীয় ও এক বাংলাদেশী স্বর্র্ণ চোরাকারবারিকে আটক করেছে। গত ৯ মাসে চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ৮ কোটি ২০ লাখ টাকার স্বর্ণ আটক করেছে। দামুড়হুদা ও দর্শনা থানায় ৯টি মামলায় ৯ জনকে স্বর্ণবহনকারী হিসেবে আটক করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তবে দুই দেশের মধ্যে স্বর্ণ চোরাচালান দীর্ঘদিনের হলেও মূল মালিক কে বা কারা, তা অদৃশ্যই থেকে যায়। প্রকৃত মালিকরা আড়ালে থাকলে চোরাচালান কখনো বন্ধ হবে না বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই দর্শনা ও দামুড়হুদা সীমান্তবর্তী এলাকাটি যেন স্বর্র্ণসহ অন্যান্য চোরাচালানীদের একটি অন্যতম রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। সম্প্রতি বেনাপোল শুল্ক ও গোয়েন্দা সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে রাজস্ব কর্মকর্তা আ. রহিমের নেতৃত্বে একটি টিম দর্শনা চেকপোস্ট থেকে আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের সদস্য ভারতের কলকাতা শহরের অনুপ কুমার গুপ্ত (৪৫) ও রাজেশ কুমারকে (৪২) ৪৫ লাখ টাকার ১১টি স্বর্ণের বার জুতার ভেতর থেকে উদ্ধার করে। একই দিনে যশোর বিজিবি-৪৯ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ মিনহাজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে একটি টহল দল দামুড়হুদার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে থেকে এক কোটি টাকার স্বর্ণ মোটরসাইকেলসহ চুয়াডাঙ্গা বেলগাছি গ্রামের আরিফ বিল্লালের ছেলে মারফ বিল্লাহকে (২৮) আটক করেন। তারা দিন হাজিরায় ও বহনকারী লেবার হিসেবে কাজ করেন বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনগণের সামনেই বলেন।

দর্শনা ও দামুড়হুদা থানা পুলিশ গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, ২০২০ সালে দর্শনা থানা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এ পর্যন্ত ৮টি স্বর্ণের মামলায় ৮ জনকে আটক দেখানো হয়েছে। এবং চলতি বছরে দামুড়হুদা থানায় একটি স্বর্ণের মামলায় একজনকে বহনকারী হিসেবে আটক দেখানো হয়েছে। তারা সবাই বহনকারী। মালামালের মূল মালিক কি আইনের আওতায় আসে না বা নাম প্রকাশ পায় না, এমন প্রশ্ন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেককে করা হলে তিনি জানান, অধিকাংশ স্বর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিজিবির হাতে ধরা পড়ে। সে হিসেবে বিজিবি যেভাবে এজাহার দেয়, সেভাবে তদন্ত করা হয়। তার বাইরে যাওয়া যায় না। তাছাড়া যারা মালামালসহ আটক হয়, তারা খুবই চতুর, কিছুই বলতে চায় না।

চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ মো. ইশতিয়াক পিএসসি জানান, ‘আমি চলতি বছরের ২২ মার্চ যোগদান করার পর চুয়াডাঙ্গার দর্শনা ও দামুড়হুদা সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ কেজি ১৯১.৪৮ গ্রাম স্বর্র্ণ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৮ কোটি ২০ লাখ ২৭ হাজার ১৫০ টাকা। তবে সীমান্তে কড়া নজরদারি রয়েছে। চোরাকারবারিরা যত কৌশল অবলম্বন করুক না কেন, ধরা তাদের পড়তেই হবে।’