ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

হিজলগাড়ীতে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ইউনিট ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারে বিরুদ্ধে গ্রাহককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:৫০:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩
  • / ৫৩ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
ওয়েভ ফাউন্ডেশন হিজলগাড়ী ইউনিটের ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে জিন্নাতারা নামের এক নারী গ্রাহককে গালিগালাজ ও শারীরিীভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী সদস্য ও এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হিজলগাড়ী বাজারপাড়ার জাহিরুল ইসলামের স্ত্রী জিন্নাতারা ওয়েভ ফাউন্ডেশন হিজলগাড়ী ইউনিটে ৭৫ হাজার টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত রোববার জিন্নাতারাকে হিজলগাড়ী ইউনিট অফিসে ডেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ক্যাশিয়ার ফাতেমা খাতুন ৭৫ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করেন। ঋণের টাকা নিয়ে জিন্নাতারা নিজ বাড়িতে চলে যাওয়ার পর ক্যাশিয়ার ফাতেমা গ্রাহক জিন্নাতারাকে মোবাইলের মাধ্যমে জানান, ৭৫ হাজার টাকার স্থলে তার কাছে ১০ হাজার টাকা বেশি অর্থাৎ ৮৫ হাজার টাকা চলে গেছে। ১০ হাজার টাকা দ্রুত অফিসে যেন ফেরত দিয়ে যায়। এসময় জিন্নাতারা তাদেরকে বলেন, ‘আপনি তো একাধিকবার টাকা গুনে আমার হাতে দিলেন এবং আমিও আপনার সামনে গুনে টাকা নিলাম, আমার কাছে তো কোনো টাকা বেশি আসেনি। যা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যাশিয়ার ফাতেমা মোবাইল ফোনে জিন্নাতারাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ইউনিট ম্যানেজার শাহ আলম ও ক্যাশিয়ার ফাতেমাসহ আরও চারজন জিন্নাতারার বাড়িতে গিয়ে প্রদানকৃত ঋণের টাকা দেখতে চায়, জিন্নাতারা ড্রয়ার থেকে ৭৫ হাজার টাকার বান্ডিল নিয়ে এসে তাদেরক দেখায়।

এসময় ম্যানেজার শাহ আলম ও ক্যাশিয়ার ফাতেমা গ্রাহক জিন্নাতারাকে চোর ও প্রতারক আখ্যা দিয়ে বাকি ১০ হাজার টাকা কোথায় আছে তা জানতে চাইলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এসময় জিন্নাতার নিকট থেকে ম্যানেজার জোরপূর্বক ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক ঋণের টাকা নিয়ে আসার ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

গতকাল সোমবার বেলা দুইটার দিকে ভুক্তভোগী জিন্নাতারা বিষয়টি হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবে জানান। এসময় প্রেসক্লাবের কয়েকজন সদস্য জিন্নাতারাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের হিজলগাড়ী ইউনিট অফিসে যান। এবং ম্যানেজার শাহ আলমের নিকট বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জিন্নাতারা ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ শুরু করেন ক্যাশিয়ার ফাতেমা। নিজ চেয়ার থেকে উঠে কার অনুমতিতে অফিসে এসেছে জানতে চেয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজও শুরু করেন তিনি। এছাড়াও সংবাদকর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকিও প্রদান করেন তিনি। তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন ম্যানেজার।

পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা ম্যানেজার শাহ আলমের নিকট তাদের আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের কারণ জানতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, ‘আমি কারো মুখের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারি না। এটা আপনাদের নিজস্ব ব্যাপার। আপনারা যা করবেন, তাই করতে পারেন।’ গ্রাহক জিন্নাতারাকে যখন টাকা দেওয়া হয়, তখন গুনে দিয়েছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ গুনে দিয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের সন্দেহ হওয়ায় তার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসা হয়েছে।’ গ্রাহককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কিছু করার এবং বলার থাকলে উপর মহলে বলতে পারেন।’

হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ হাসান বলেন, ‘জিন্নাতারার কাছ থেকে অভিযোগ শুনে আমিসহ স্থানীয় কয়েকজন হিজলগাড়ী ওয়েভ ফাউন্ডেশন অফিসে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে যায়। ম্যানেজারের সাথে কথা বলার সময় হঠাৎ করেই ক্যাশিয়ার ফাতেমা আমাদের ওপর মারমুখী আচরণ করেন এবং অশালীন ব্যবহার করেন। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মতো একটি স্বমানধন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী কর্তৃক এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

এ বিষয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের এরিয়া ম্যানেজারকে জানালে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেন জানান। এদিকে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মতো একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী কর্তৃক গ্রাহক এবং সংবাদিকদের সঙ্গে অপেশাদার আচরণের ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী অভিযুক্ত ওই শাখা ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনে দাবি জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

হিজলগাড়ীতে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ইউনিট ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারে বিরুদ্ধে গ্রাহককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১০:৫০:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ জুন ২০২৩

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
ওয়েভ ফাউন্ডেশন হিজলগাড়ী ইউনিটের ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে জিন্নাতারা নামের এক নারী গ্রাহককে গালিগালাজ ও শারীরিীভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগী সদস্য ও এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হিজলগাড়ী বাজারপাড়ার জাহিরুল ইসলামের স্ত্রী জিন্নাতারা ওয়েভ ফাউন্ডেশন হিজলগাড়ী ইউনিটে ৭৫ হাজার টাকা ঋণের জন্য আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত রোববার জিন্নাতারাকে হিজলগাড়ী ইউনিট অফিসে ডেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ক্যাশিয়ার ফাতেমা খাতুন ৭৫ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করেন। ঋণের টাকা নিয়ে জিন্নাতারা নিজ বাড়িতে চলে যাওয়ার পর ক্যাশিয়ার ফাতেমা গ্রাহক জিন্নাতারাকে মোবাইলের মাধ্যমে জানান, ৭৫ হাজার টাকার স্থলে তার কাছে ১০ হাজার টাকা বেশি অর্থাৎ ৮৫ হাজার টাকা চলে গেছে। ১০ হাজার টাকা দ্রুত অফিসে যেন ফেরত দিয়ে যায়। এসময় জিন্নাতারা তাদেরকে বলেন, ‘আপনি তো একাধিকবার টাকা গুনে আমার হাতে দিলেন এবং আমিও আপনার সামনে গুনে টাকা নিলাম, আমার কাছে তো কোনো টাকা বেশি আসেনি। যা শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্যাশিয়ার ফাতেমা মোবাইল ফোনে জিন্নাতারাকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ইউনিট ম্যানেজার শাহ আলম ও ক্যাশিয়ার ফাতেমাসহ আরও চারজন জিন্নাতারার বাড়িতে গিয়ে প্রদানকৃত ঋণের টাকা দেখতে চায়, জিন্নাতারা ড্রয়ার থেকে ৭৫ হাজার টাকার বান্ডিল নিয়ে এসে তাদেরক দেখায়।

এসময় ম্যানেজার শাহ আলম ও ক্যাশিয়ার ফাতেমা গ্রাহক জিন্নাতারাকে চোর ও প্রতারক আখ্যা দিয়ে বাকি ১০ হাজার টাকা কোথায় আছে তা জানতে চাইলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এসময় জিন্নাতার নিকট থেকে ম্যানেজার জোরপূর্বক ৭৫ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায়। গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক ঋণের টাকা নিয়ে আসার ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

গতকাল সোমবার বেলা দুইটার দিকে ভুক্তভোগী জিন্নাতারা বিষয়টি হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবে জানান। এসময় প্রেসক্লাবের কয়েকজন সদস্য জিন্নাতারাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের হিজলগাড়ী ইউনিট অফিসে যান। এবং ম্যানেজার শাহ আলমের নিকট বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে জিন্নাতারা ও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ শুরু করেন ক্যাশিয়ার ফাতেমা। নিজ চেয়ার থেকে উঠে কার অনুমতিতে অফিসে এসেছে জানতে চেয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজও শুরু করেন তিনি। এছাড়াও সংবাদকর্মীদের দেখে নেওয়ার হুমকিও প্রদান করেন তিনি। তখন নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন ম্যানেজার।

পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা ম্যানেজার শাহ আলমের নিকট তাদের আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজের কারণ জানতে চাইলে ম্যানেজার বলেন, ‘আমি কারো মুখের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারি না। এটা আপনাদের নিজস্ব ব্যাপার। আপনারা যা করবেন, তাই করতে পারেন।’ গ্রাহক জিন্নাতারাকে যখন টাকা দেওয়া হয়, তখন গুনে দিয়েছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ গুনে দিয়েছিলাম, কিন্তু আমাদের সন্দেহ হওয়ায় তার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসা হয়েছে।’ গ্রাহককে লাঞ্ছিত করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘আপনাদের কিছু করার এবং বলার থাকলে উপর মহলে বলতে পারেন।’

হিজলগাড়ী প্রেসক্লাবের সভাপতি আরিফ হাসান বলেন, ‘জিন্নাতারার কাছ থেকে অভিযোগ শুনে আমিসহ স্থানীয় কয়েকজন হিজলগাড়ী ওয়েভ ফাউন্ডেশন অফিসে গিয়ে ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলতে যায়। ম্যানেজারের সাথে কথা বলার সময় হঠাৎ করেই ক্যাশিয়ার ফাতেমা আমাদের ওপর মারমুখী আচরণ করেন এবং অশালীন ব্যবহার করেন। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মতো একটি স্বমানধন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী কর্তৃক এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।’

এ বিষয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের এরিয়া ম্যানেজারকে জানালে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেন জানান। এদিকে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মতো একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের কর্মী কর্তৃক গ্রাহক এবং সংবাদিকদের সঙ্গে অপেশাদার আচরণের ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী অভিযুক্ত ওই শাখা ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনে দাবি জানান।