ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

সড়কজুড়ে লালশাক, দুর্ভোগ চরমে!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:

জীবননগর উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোতে সবজি ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বীজ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ডাঁটাশাক শুকানো হচ্ছে। মৌসুমের শুরু থেকে যতই দিন যাচ্ছে ততই রাস্তাগুলো এলাকার কৃষকদের দখলে চলে যাচ্ছে। সড়কের ওপর ডাঁটাশাক শুকানোর ফলে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার একটি পৌরসভাসহ আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রামীণ সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই কৃষকরা বীজ উৎপাদনের জন্য লালশাকের ডাঁটা রাস্তায় ওপর শুকাচ্ছে। রাস্তাজুড়ে লালশাকের ডাঁটা শুকানোর কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, করিমন, নসিমন চলাচল করতে গিয়ে চালকদের পাশাপাশি যাত্রীসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার মিনাজপুর থেকে কুলতলাগামী প্রায় তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তা দিয়ে ওই গ্রামের সাধারণ লোকজনসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ যাতায়াত করে এবং মিনাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। সম্প্রতি এক মাস যাবৎ ওই এলাকার বেশ কিছু লাল শাক চাষি রাস্তার ওপর বীজ শুকানোর ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। এমনকি প্রায় সময় ওই সব সড়কগুলোতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে বিভিন্ন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহ আগে মনোহরপুর ইউনিয়নের কালা গ্রামের একজন যুবক মোটরসাইকেলযোগে কুলতলা গ্রামে যাওয়ার পথে লাল শাকের বীজে পিচলে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। রাস্তায় লাল শাকের বীজ থাকার ফলে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুম, রিপন ও হাবিবা জানান, ‘আগে রাস্তা দিয়ে আমরা সোজাসুজি স্কুলে চলে আসতাম। এখন রাস্তায় শাকের বীজ থাকার কারণে বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।’

পথচারী বাপ্পী জানান, ‘প্রতিদিন মিনাজপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। এখন হঠাৎ করে এক মাস ধরে এলাকার বেশ কিছু কৃষক রাস্তার ওপর লাল শাকের বীজ রাখার ফলে মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে আমাদের অনেক সমস্য হচ্ছে। বিশেষ করে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা পিচ্ছিল থাকে, আমরা কৃষকদের রাস্তায় শাকেরব বীজ দিতে নিষেধ করলে কোনো কথায় শুনতে চায় না। রাস্তায় বীজ দিলে এক দিনে যেমন পথচারীদের সমস্যা হচ্ছে, অন্য দিকে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাস্তা নষ্ট হচ্ছে।’

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ‘ব্যস্ততম গ্রামীণ সড়কগুলোতে শাকের ডাঁটা বিছিয়ে শুকানোর ফলে জনজীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

সড়কজুড়ে লালশাক, দুর্ভোগ চরমে!

আপলোড টাইম : ০৯:৫৬:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

জীবননগর অফিস:

জীবননগর উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোতে সবজি ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়ক-মহাসড়কে বীজ উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ডাঁটাশাক শুকানো হচ্ছে। মৌসুমের শুরু থেকে যতই দিন যাচ্ছে ততই রাস্তাগুলো এলাকার কৃষকদের দখলে চলে যাচ্ছে। সড়কের ওপর ডাঁটাশাক শুকানোর ফলে প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে এলাকাবাসী। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় পথচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার একটি পৌরসভাসহ আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রামীণ সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই কৃষকরা বীজ উৎপাদনের জন্য লালশাকের ডাঁটা রাস্তায় ওপর শুকাচ্ছে। রাস্তাজুড়ে লালশাকের ডাঁটা শুকানোর কারণে রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, করিমন, নসিমন চলাচল করতে গিয়ে চালকদের পাশাপাশি যাত্রীসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার মিনাজপুর থেকে কুলতলাগামী প্রায় তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তা দিয়ে ওই গ্রামের সাধারণ লোকজনসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ যাতায়াত করে এবং মিনাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। সম্প্রতি এক মাস যাবৎ ওই এলাকার বেশ কিছু লাল শাক চাষি রাস্তার ওপর বীজ শুকানোর ফলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। এমনকি প্রায় সময় ওই সব সড়কগুলোতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে বিভিন্ন পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গত দুই সপ্তাহ আগে মনোহরপুর ইউনিয়নের কালা গ্রামের একজন যুবক মোটরসাইকেলযোগে কুলতলা গ্রামে যাওয়ার পথে লাল শাকের বীজে পিচলে পড়ে গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়। রাস্তায় লাল শাকের বীজ থাকার ফলে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের চলাচল করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাসুম, রিপন ও হাবিবা জানান, ‘আগে রাস্তা দিয়ে আমরা সোজাসুজি স্কুলে চলে আসতাম। এখন রাস্তায় শাকের বীজ থাকার কারণে বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।’

পথচারী বাপ্পী জানান, ‘প্রতিদিন মিনাজপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। এখন হঠাৎ করে এক মাস ধরে এলাকার বেশ কিছু কৃষক রাস্তার ওপর লাল শাকের বীজ রাখার ফলে মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে আমাদের অনেক সমস্য হচ্ছে। বিশেষ করে একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তা পিচ্ছিল থাকে, আমরা কৃষকদের রাস্তায় শাকেরব বীজ দিতে নিষেধ করলে কোনো কথায় শুনতে চায় না। রাস্তায় বীজ দিলে এক দিনে যেমন পথচারীদের সমস্যা হচ্ছে, অন্য দিকে সরকারের লাখ লাখ টাকার রাস্তা নষ্ট হচ্ছে।’

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, ‘ব্যস্ততম গ্রামীণ সড়কগুলোতে শাকের ডাঁটা বিছিয়ে শুকানোর ফলে জনজীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’