ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

‘শীতের হটস্পট’ চুয়াডাঙ্গায় যে কারণে বেশি শীত

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:১৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ১৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন:
শীত যেন কমছেই না সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল শুক্রবারও ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। গত বৃহস্পতিবার ছিল দেশের এবং এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ভৌগোলিক অবস্থানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গা আর যশোরে এবার শীত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে। এছাড়া তেঁতুলিয়া ও দেশের উত্তর-পূর্বের এলাকা শ্রীমঙ্গলেও একই অবস্থা। তবে এবার শীত মৌসুমে বাংলাদেশের ‘শীতের হটস্পট’ মূলত চুয়াডাঙ্গা। এবারসহ প্রায় ২০ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গায় এই তীব্র শীত পড়ছে। এছাড়া এই শীত মৌসুমে গত ডিসেম্বরে তাপমাত্রা ১০ এর নিচে নামে বেশ কয়েকদিন। আর একটানা তিনদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গত ডিসেম্বরে রেকর্ড হয়। এছাড়া চলতি মাসে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা যশোরে রেকর্ড করা হয়। সেটাও ছিল দেশের ও এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে গত বৃহস্পতিবার সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা এই শীত মৌসুম ও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল পর্যন্ত।
যদি এ জেলার ২০ বছরের তাপমাত্রার চিত্র তুলে ধরা হয়, সেখানে দেখা গেছে এর আগে এ জেলায় তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রির নিচেও নেমেছে। যেমন ২০০২ সালের ২ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৩ সালের ২২ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৪ সালের ১০ জানুয়ারি ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৫ সালের ২১ জানুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৬ সালের ১১ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে ২০০৩ সালের ২২ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ জেলার ২০ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর এবার অর্থাৎ ২০২৩ সালে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছু ওপরে উঠানামা করেছে। অর্থাৎ শীতের তীব্রতা এ জেলায় নতুন নয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৫ বছর বয়সী রেনু বেগম এই শীতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, ২০-২৫ বছর আগে এতো শীত তাঁর লাগেনি। তবে মাঝের বছরগুলোতে বেশ শীত অনুভূত হলেও এবার যেন শীতের তীব্রতা বেশি। এতেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ৫০ বছর বয়সী চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশাচালক শুকুর মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গত ১০-১৫ বছর প্রতি বছরই শীত লাগে খুব। তবে এবারের শীত খুব তীব্র, কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গায় কেন এত শীত, এ নিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও আবহাওয়াবিদদের সঙ্গেও কথা বলেছেন এ প্রতিবেদক।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান বলেন, ভূ-প্রাকৃতিক কিছু কারণেই এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিশ্বজুড়ে যে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এর সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন গ্রীষ্মকালে বেশি গরম পড়বে, শীতকালে বেশি শীত। আর এসব ঘটনা ঘটছে প্রাকৃতিকভাবেই। এখানে কারও কোনো হাত নেই। এছাড়া গাছপালা কমে যাওয়া, জলাশয় অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার কারণে এখানে শীতের আধিক্য বেশি। তিনি আরও বলেন, আগে পুরো শীত মৌসুমে তিন থেকে চারটি শৈত্যপ্রবাহ হতো। কিন্তু এখন তা বেড়ে দিগুণ। আবার যশোরে কম জলাশয় থাকার কারণে সেখানেও প্রায় চুয়াডাঙ্গার মতোই শীত পড়তে দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রকৃতির নানা ধারা নিয়ন্ত্রণে হিমালয় পর্বতের ভূমিকা আছে বলে মনেও করেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, ভৌগোলিক কারণে হিমালয় থেকে আসা বায়ুর একটি অংশ শীতের সময় বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ চুয়াডাঙ্গা দিয়ে বয়ে যায়। যার কারণে এই হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা জানান দেয়। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার খুব কাছে কর্কটক্রান্তি রেখা, যার কারণে শীতের সময় শীত বেশি, আর গরমের সময় গরম। হঠাৎ শীত বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, এ সময় উপমহাদেশে উচ্চ বলয় প্রবাহ ও ঊর্ধ্বাকাশে জেড উইং প্রবাহ নিচে নেমে আসে। এ কারণে শীতের প্রকোপ অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। আর চলমান শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা।

 

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

‘শীতের হটস্পট’ চুয়াডাঙ্গায় যে কারণে বেশি শীত

আপলোড টাইম : ০৫:১৯:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৩

সমীকরণ প্রতিবেদন:
শীত যেন কমছেই না সীমান্তবর্তী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল শুক্রবারও ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে এ জেলায়। গত বৃহস্পতিবার ছিল দেশের এবং এই শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে গত সপ্তাহে চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। ভৌগোলিক অবস্থানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা চুয়াডাঙ্গা আর যশোরে এবার শীত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি শীত পড়ছে। এছাড়া তেঁতুলিয়া ও দেশের উত্তর-পূর্বের এলাকা শ্রীমঙ্গলেও একই অবস্থা। তবে এবার শীত মৌসুমে বাংলাদেশের ‘শীতের হটস্পট’ মূলত চুয়াডাঙ্গা। এবারসহ প্রায় ২০ বছর ধরে চুয়াডাঙ্গায় এই তীব্র শীত পড়ছে। এছাড়া এই শীত মৌসুমে গত ডিসেম্বরে তাপমাত্রা ১০ এর নিচে নামে বেশ কয়েকদিন। আর একটানা তিনদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও গত ডিসেম্বরে রেকর্ড হয়। এছাড়া চলতি মাসে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা যশোরে রেকর্ড করা হয়। সেটাও ছিল দেশের ও এই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে গত বৃহস্পতিবার সব রেকর্ড ভেঙে চুয়াডাঙ্গায় ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়, যা এই শীত মৌসুম ও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা গতকাল পর্যন্ত।
যদি এ জেলার ২০ বছরের তাপমাত্রার চিত্র তুলে ধরা হয়, সেখানে দেখা গেছে এর আগে এ জেলায় তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রির নিচেও নেমেছে। যেমন ২০০২ সালের ২ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৩ সালের ২২ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৪ সালের ১০ জানুয়ারি ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৫ সালের ২১ জানুয়ারি ও ৫ ফেব্রুয়ারি ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৬ সালের ১১ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১০ সালের ১৩ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৮ সালের ৯ জানুয়ারি ৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ২০২২ সালের ২৯ জানুয়ারি ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর মধ্যে ২০০৩ সালের ২২ জানুয়ারি ৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস এ জেলার ২০ বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। আর এবার অর্থাৎ ২০২৩ সালে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কিছু ওপরে উঠানামা করেছে। অর্থাৎ শীতের তীব্রতা এ জেলায় নতুন নয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭৫ বছর বয়সী রেনু বেগম এই শীতে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, ২০-২৫ বছর আগে এতো শীত তাঁর লাগেনি। তবে মাঝের বছরগুলোতে বেশ শীত অনুভূত হলেও এবার যেন শীতের তীব্রতা বেশি। এতেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ৫০ বছর বয়সী চুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশাচালক শুকুর মন্ডলের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গত ১০-১৫ বছর প্রতি বছরই শীত লাগে খুব। তবে এবারের শীত খুব তীব্র, কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গায় কেন এত শীত, এ নিয়ে পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক ও আবহাওয়াবিদদের সঙ্গেও কথা বলেছেন এ প্রতিবেদক।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. সাইবুর রহমান বলেন, ভূ-প্রাকৃতিক কিছু কারণেই এ ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিশ্বজুড়ে যে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে এর সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতির সম্পর্ক রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন গ্রীষ্মকালে বেশি গরম পড়বে, শীতকালে বেশি শীত। আর এসব ঘটনা ঘটছে প্রাকৃতিকভাবেই। এখানে কারও কোনো হাত নেই। এছাড়া গাছপালা কমে যাওয়া, জলাশয় অপেক্ষাকৃত কম হওয়ার কারণে এখানে শীতের আধিক্য বেশি। তিনি আরও বলেন, আগে পুরো শীত মৌসুমে তিন থেকে চারটি শৈত্যপ্রবাহ হতো। কিন্তু এখন তা বেড়ে দিগুণ। আবার যশোরে কম জলাশয় থাকার কারণে সেখানেও প্রায় চুয়াডাঙ্গার মতোই শীত পড়তে দেখা যায়। বাংলাদেশে প্রকৃতির নানা ধারা নিয়ন্ত্রণে হিমালয় পর্বতের ভূমিকা আছে বলে মনেও করেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, ভৌগোলিক কারণে হিমালয় থেকে আসা বায়ুর একটি অংশ শীতের সময় বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম অংশ চুয়াডাঙ্গা দিয়ে বয়ে যায়। যার কারণে এই হিমেল বাতাসে শীতের তীব্রতা জানান দেয়। এছাড়া চুয়াডাঙ্গার খুব কাছে কর্কটক্রান্তি রেখা, যার কারণে শীতের সময় শীত বেশি, আর গরমের সময় গরম। হঠাৎ শীত বাড়ার কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, এ সময় উপমহাদেশে উচ্চ বলয় প্রবাহ ও ঊর্ধ্বাকাশে জেড উইং প্রবাহ নিচে নেমে আসে। এ কারণে শীতের প্রকোপ অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি। আর চলমান শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঘন কুয়াশা।