ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

মহেশপুরে জমি দখল করে ইটভাটা নির্মাণ!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:১৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২
  • / ৫৫ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নস্তি গ্রামে হতদরিদ্র এক কৃষকের ১৬ শতক জমি দখল করে ইটভাটা তৈরি করছেন কামাল হোসেন নামে এক প্রভাবশালী। তিনি কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা করেন না। মানেন না জেলা প্রশাসনের কোনো বিধি-নিষেধ। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামুনুল করিম ভাটা নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিলেও নিয়ম ভঙ্গ করে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন নির্মাণকাজ। ফলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নস্তি গ্রামের অসহায় কৃষক আলী আকবার অভিযোগ করেন, তাঁর শেষ সম্বল বলতে ওই ১৬ শতক জমি। সেটি ইটের ভাটা করে দখল করে নিতে চান কামাল হোসেন। ইতঃমধ্যে সেই জমিতে মাটি ফেলে শুরু করে দিয়েছেন কাজ। ধানের জমি ভাটায় দিতে না চাইলেও জোর করে দখল করছেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন জমিটা তার প্রয়োজন, জোর করে হলেও নিতে হবে। ঘটনাটি ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার নস্তি এলাকার। আলী আকবার নস্তি গ্রামের নবি সর্দ্দারের  ছেলে। শুধু তার একার নয়, ভাটার পাশের আরও চাষযোগ্য ২০ একর জমির মালিকরা জমি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

আলী আকবার জানান, তাঁদের গ্রামের কামাল হোসেন নস্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ শ গজের মধ্যে কয়েকজনের জমি বর্গা নিয়ে ‘শাকিল ভাটা’ নামে একটি ভাটা নির্মাণ করেন। গত তিন বছর এই ভাটা চালিয়েছেন। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। পাশাপাশি স্কুলের পাশে হওয়ায় অনেকের আপত্তিও ছিল। এ বছর জমির মালিকরা তাঁদের জমি ছেড়ে দিতে বললে কামাল হোসেন পূর্বের স্থান থেকে সামান্য পশ্চিমে সরে নতুন করে ভাটা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। পাশেই রয়েছে আলী আকবরের ১৬ শতক জমি। এই জমি থেকেই তাঁর পরিবারের মানুষগুলোর মুখে খাবার জোটে। তিনি এই জমি দিতে না চাইলেও তাঁকে মারধর করতে উদ্যোত হয়।

নস্তি গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর জানান, কামাল হোসেন ওই স্থানে ৮ বিঘা জমি কিনেছেন। সেখানে পুকুর ও মাটি রাখা হয়েছে ৪ বিঘা জমির ওপর। আর ইট তৈরির স্থান করেছেন ৪ বিঘা জমিতে। সাধারণত একটা ভাটা করতে গেলে ছোট হলেও কমপক্ষে ২৫ বিঘা জমির প্রয়োজন হয়। এখন ওই পরিমাণ জমি জোগাড় করতে কামাল অন্যদের জমি জোর করে দখল নিতে চাইছেন। ভাটা চালু হলে আশপাশের অন্তত ২০ বিঘা জমি অনাবাদী হয়ে পড়বে। কামাল হোসেন একটি হত্যা মামলায় কারাগারে থাকলেও থামেনি তাঁর ভাটা নির্মাণের কাজ।

ভাটা ব্যবস্থাপক বজলুর রহমান জানান, ভাটা করার আগেই জমির মালিক আলী আকবারসহ অন্যদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁরা জমি দিতে চেয়ে এখন দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, যে স্থানে ভাটার চিমনি করা হয়েছে, তাতে আলী আকবারের জমি কখনও ভালো থাকবে না। এই জন্য জমিটা দিতে বলেছেন।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামুনুল করিম জানান, তিনি এলাকার লোকজনের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে ভাটা নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরও কাজ চললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মহেশপুরে জমি দখল করে ইটভাটা নির্মাণ!

আপলোড টাইম : ০৭:১৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২২

ঝিনাইদহ অফিস:

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার নস্তি গ্রামে হতদরিদ্র এক কৃষকের ১৬ শতক জমি দখল করে ইটভাটা তৈরি করছেন কামাল হোসেন নামে এক প্রভাবশালী। তিনি কোনো আইন-কানুনের তোয়াক্কা করেন না। মানেন না জেলা প্রশাসনের কোনো বিধি-নিষেধ। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামুনুল করিম ভাটা নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিলেও নিয়ম ভঙ্গ করে তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন নির্মাণকাজ। ফলে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নস্তি গ্রামের অসহায় কৃষক আলী আকবার অভিযোগ করেন, তাঁর শেষ সম্বল বলতে ওই ১৬ শতক জমি। সেটি ইটের ভাটা করে দখল করে নিতে চান কামাল হোসেন। ইতঃমধ্যে সেই জমিতে মাটি ফেলে শুরু করে দিয়েছেন কাজ। ধানের জমি ভাটায় দিতে না চাইলেও জোর করে দখল করছেন তিনি। জানিয়ে দিয়েছেন জমিটা তার প্রয়োজন, জোর করে হলেও নিতে হবে। ঘটনাটি ঝিনাইদহ মহেশপুর উপজেলার নস্তি এলাকার। আলী আকবার নস্তি গ্রামের নবি সর্দ্দারের  ছেলে। শুধু তার একার নয়, ভাটার পাশের আরও চাষযোগ্য ২০ একর জমির মালিকরা জমি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।

আলী আকবার জানান, তাঁদের গ্রামের কামাল হোসেন নস্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ শ গজের মধ্যে কয়েকজনের জমি বর্গা নিয়ে ‘শাকিল ভাটা’ নামে একটি ভাটা নির্মাণ করেন। গত তিন বছর এই ভাটা চালিয়েছেন। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। পাশাপাশি স্কুলের পাশে হওয়ায় অনেকের আপত্তিও ছিল। এ বছর জমির মালিকরা তাঁদের জমি ছেড়ে দিতে বললে কামাল হোসেন পূর্বের স্থান থেকে সামান্য পশ্চিমে সরে নতুন করে ভাটা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। পাশেই রয়েছে আলী আকবরের ১৬ শতক জমি। এই জমি থেকেই তাঁর পরিবারের মানুষগুলোর মুখে খাবার জোটে। তিনি এই জমি দিতে না চাইলেও তাঁকে মারধর করতে উদ্যোত হয়।

নস্তি গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্কর জানান, কামাল হোসেন ওই স্থানে ৮ বিঘা জমি কিনেছেন। সেখানে পুকুর ও মাটি রাখা হয়েছে ৪ বিঘা জমির ওপর। আর ইট তৈরির স্থান করেছেন ৪ বিঘা জমিতে। সাধারণত একটা ভাটা করতে গেলে ছোট হলেও কমপক্ষে ২৫ বিঘা জমির প্রয়োজন হয়। এখন ওই পরিমাণ জমি জোগাড় করতে কামাল অন্যদের জমি জোর করে দখল নিতে চাইছেন। ভাটা চালু হলে আশপাশের অন্তত ২০ বিঘা জমি অনাবাদী হয়ে পড়বে। কামাল হোসেন একটি হত্যা মামলায় কারাগারে থাকলেও থামেনি তাঁর ভাটা নির্মাণের কাজ।

ভাটা ব্যবস্থাপক বজলুর রহমান জানান, ভাটা করার আগেই জমির মালিক আলী আকবারসহ অন্যদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তাঁরা জমি দিতে চেয়ে এখন দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, যে স্থানে ভাটার চিমনি করা হয়েছে, তাতে আলী আকবারের জমি কখনও ভালো থাকবে না। এই জন্য জমিটা দিতে বলেছেন।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামুনুল করিম জানান, তিনি এলাকার লোকজনের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়ে ভাটা নির্মাণের কাজ বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরও কাজ চললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।