ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

বাঁশবাগানে মিলল যুবকের লাশ

প্রতিবেদক, হিজলগাড়ী:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৪৫ বার পড়া হয়েছে

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুরের পশ্চিমপাড়ায় কবরস্থান সংগল্প বাঁশবাগান থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, গতকাল বুধকার সকাল সাতটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও দর্শনা থানাধীন নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের নেহালপুর পশ্চিমপাড়ার জনৈক এক বৃদ্ধ নারী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে যান। এসময় তিনি রাস্তার ওপরে একজনকে শুয়ে থাকতে দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। এসময় স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে দেখেন তাদেরই প্রতিবেশী মানসিক ভারসাম্যহীন রাজুর (২৬) মরদেহ পড়ে আছে। রাজু একই গ্রামের দাউদ ফকির ছেলে।

পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় হিজলগাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তাপস সরকার ও টুআইসি সবেদ আলী। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মুন্না বিশ্বাস ও দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর। এসময় পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করার সময় মরদেহের প্যান্টের পকেটে দানাদার কীটনাশক পায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

রাজুর পিতা দাউদ ফকির বলেন, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে রাজু মেজো। তিনি কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। সাত বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু তিনি মাঝে মাঝে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ার কারণে প্রথম স্ত্রী তাঁকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে চিকিৎসা করার পর সুস্থ হলে চার বছর পূর্বে দামুড়হুদা ইব্রাহিমপুর গ্রামে আবারো তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান আছে। তিন মাস পূর্বে তিনি আবারও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। গত মঙ্গলবার আসর নামাজের আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি তিনি।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লূৎফুল করীব বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আমার ফোর্স পাঠায় ও আমি নিজেও ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহের পকেটে দানাদার কীটনাশক পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, সে আত্মহত্যা করেছে। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এদিকে, গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে তিনটায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত রাজু আহমেদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। দুই সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে রাজু আহমেদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাপসাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আহসানুল হককে সভাপতি করে মেডিকেল বোর্ডে সদস্য ছিলেন সদর হাসপাতালের জুনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময়। বিকেলেই ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।

নিতহ রাজুর লাশের ময়নাতদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আহসানুল হক বলেন, ‘দুই সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্তটি সম্পন্ন করা হয়েছে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানানো হবে।’ এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গ্রামের কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয় বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।

 

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

বাঁশবাগানে মিলল যুবকের লাশ

আপলোড টাইম : ০৮:৪৭:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২১

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুরের পশ্চিমপাড়ায় কবরস্থান সংগল্প বাঁশবাগান থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, গতকাল বুধকার সকাল সাতটার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ও দর্শনা থানাধীন নবগঠিত নেহালপুর ইউনিয়নের নেহালপুর পশ্চিমপাড়ার জনৈক এক বৃদ্ধ নারী প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে যান। এসময় তিনি রাস্তার ওপরে একজনকে শুয়ে থাকতে দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। এসময় স্থানীয়রা সেখানে গিয়ে দেখেন তাদেরই প্রতিবেশী মানসিক ভারসাম্যহীন রাজুর (২৬) মরদেহ পড়ে আছে। রাজু একই গ্রামের দাউদ ফকির ছেলে।

পরবর্তীতে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় হিজলগাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই তাপস সরকার ও টুআইসি সবেদ আলী। এরপর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) মুন্না বিশ্বাস ও দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর। এসময় পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট করার সময় মরদেহের প্যান্টের পকেটে দানাদার কীটনাশক পায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

রাজুর পিতা দাউদ ফকির বলেন, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে রাজু মেজো। তিনি কাঠমিস্ত্রির কাজ করতেন। সাত বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। কিন্তু তিনি মাঝে মাঝে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ার কারণে প্রথম স্ত্রী তাঁকে ডিভোর্স দিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে চিকিৎসা করার পর সুস্থ হলে চার বছর পূর্বে দামুড়হুদা ইব্রাহিমপুর গ্রামে আবারো তাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান আছে। তিন মাস পূর্বে তিনি আবারও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। গত মঙ্গলবার আসর নামাজের আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ঘরে ফেরেননি তিনি।

এ বিষয়ে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এএইচএম লূৎফুল করীব বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আমার ফোর্স পাঠায় ও আমি নিজেও ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহের পকেটে দানাদার কীটনাশক পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, সে আত্মহত্যা করেছে। তবে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে লাশ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

এদিকে, গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে তিনটায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে নিহত রাজু আহমেদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। দুই সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে রাজু আহমেদের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাপসাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আহসানুল হককে সভাপতি করে মেডিকেল বোর্ডে সদস্য ছিলেন সদর হাসপাতালের জুনিয়র সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময়। বিকেলেই ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।

নিতহ রাজুর লাশের ময়নাতদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আহসানুল হক বলেন, ‘দুই সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ময়নাতদন্তটি সম্পন্ন করা হয়েছে। বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানানো হবে।’ এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গ্রামের কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয় বলে গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে।