ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা, চারজনের নামে মামলা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গা অফিস:

আলমডাঙ্গা উপজেলার কামালপুরে শাকিল হোসেন নামের (৪৫) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীকে উত্ত্যাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যা করেছেন প্রবাসীর রূপবতী স্ত্রী সোনিয়া (২৫)। গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার কামালপুর গ্রামে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ওই শিক্ষকসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা থানায় আত্মহত্যা প্ররোচণার একটি মামলা দায়ের করেছেন সোনিয়া খাতুনের বাবা সকির উদ্দীন। অভিযুক্ত শাকিল হোসেন কামালপুর গ্রামের মঙ্গল আলীর ছেলে ও আঠারোখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

জানা যায়, উপজেলার কামালপুর গ্রামের নাজমুল ইসলাম প্রায় ৫ মাস পূর্বে সৌদি আরব গেছেন। পাঁচ বছরের শিশুকন্যা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকেন রূপবতী স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (২৫)। আগে থেকেই রূপবতী সোনিয়া খাতুনের ওপর নজর পড়েছিল একই গ্রামের শাকিল হোসেনের। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর থেকেই শাকিল হোসেন তাঁকে খুব বেশি উত্ত্যাক্ত করছিলেন।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশী শাকিল হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন সোনিয়া খাতুন। কিন্তু এক মাস পূর্বে সম্পর্ক ভেঙে দেন সোনিয়া এবং শাকিলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শাকিল। তাঁর সাথে সোনিয়ার পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে গ্রামে প্রচার শুরু করে তিনি। পরে শাকিলের সাথে একই গ্রামের মৃত খবিরের ছেলে বয়স্ক কলিম উদ্দীন, ফনির ছেলে দোকানি রনি, আবুল কাশেমের ছেলে উজ্জ্বলও সোনিয়া খাতুনকে উত্ত্যাক্ত করা শুরু করেন। এসব কথা সোনিয়া শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে জানালেও অজ্ঞাত কারণে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। শাকিল হোসেনের পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না সোনিয়ার শ্বশুরের পরিবারের। এরই একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার ভোরে ঘরের আড়াই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন সোনিয়া খাতুন। এ আত্মহত্যার পর অভিযুক্ত চার ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাকিল হোসেন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। ৭-৮ বছর পূর্বে শেফালী খাতুন নামের পাঁচলিয়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন তিনি। শেফালী খাতুনও শিক্ষক। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী আঠারখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। এদিকে, আত্মহত্যার ঘটনায় সোনিয়া খাতুনের বাবা সকির উদ্দীন বাদী হয়ে শিক্ষক শাকিল হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা থানায় একটি আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বামী বিদেশে থাকার কারণে একই গ্রামের শাকিলের সাথে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যেটা তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ভালো চোখে দেখেনি। তারা রাতদিন তাঁকে ভর্ৎসনা করত। অন্যদিকে, তাঁর স্বামীও তাঁকে নানাভাবে দোষারপ করছে। শাকিলও বিবাহিত, নানা কারণে কোনো উপায়ান্তর না দেখে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে মনে হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করব।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা, চারজনের নামে মামলা

আপলোড টাইম : ০৯:৩৮:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২

আলমডাঙ্গা অফিস:

আলমডাঙ্গা উপজেলার কামালপুরে শাকিল হোসেন নামের (৪৫) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীকে উত্ত্যাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যা করেছেন প্রবাসীর রূপবতী স্ত্রী সোনিয়া (২৫)। গতকাল শুক্রবার ভোরে উপজেলার কামালপুর গ্রামে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত ওই শিক্ষকসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা থানায় আত্মহত্যা প্ররোচণার একটি মামলা দায়ের করেছেন সোনিয়া খাতুনের বাবা সকির উদ্দীন। অভিযুক্ত শাকিল হোসেন কামালপুর গ্রামের মঙ্গল আলীর ছেলে ও আঠারোখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।

জানা যায়, উপজেলার কামালপুর গ্রামের নাজমুল ইসলাম প্রায় ৫ মাস পূর্বে সৌদি আরব গেছেন। পাঁচ বছরের শিশুকন্যা নিয়ে স্বামীর বাড়িতে থাকেন রূপবতী স্ত্রী সোনিয়া খাতুন (২৫)। আগে থেকেই রূপবতী সোনিয়া খাতুনের ওপর নজর পড়েছিল একই গ্রামের শাকিল হোসেনের। স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর থেকেই শাকিল হোসেন তাঁকে খুব বেশি উত্ত্যাক্ত করছিলেন।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর প্রতিবেশী শাকিল হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন সোনিয়া খাতুন। কিন্তু এক মাস পূর্বে সম্পর্ক ভেঙে দেন সোনিয়া এবং শাকিলের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শাকিল। তাঁর সাথে সোনিয়ার পরকীয়ার সম্পর্ক আছে বলে গ্রামে প্রচার শুরু করে তিনি। পরে শাকিলের সাথে একই গ্রামের মৃত খবিরের ছেলে বয়স্ক কলিম উদ্দীন, ফনির ছেলে দোকানি রনি, আবুল কাশেমের ছেলে উজ্জ্বলও সোনিয়া খাতুনকে উত্ত্যাক্ত করা শুরু করেন। এসব কথা সোনিয়া শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে জানালেও অজ্ঞাত কারণে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। শাকিল হোসেনের পরিবার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না সোনিয়ার শ্বশুরের পরিবারের। এরই একপর্যায়ে গতকাল শুক্রবার ভোরে ঘরের আড়াই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন সোনিয়া খাতুন। এ আত্মহত্যার পর অভিযুক্ত চার ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন।

এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাকিল হোসেন বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। ৭-৮ বছর পূর্বে শেফালী খাতুন নামের পাঁচলিয়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন তিনি। শেফালী খাতুনও শিক্ষক। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী আঠারখাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। এদিকে, আত্মহত্যার ঘটনায় সোনিয়া খাতুনের বাবা সকির উদ্দীন বাদী হয়ে শিক্ষক শাকিল হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আলমডাঙ্গা থানায় একটি আত্মহত্যায় প্ররোচণার মামলা দায়ের করেছেন।

এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, স্বামী বিদেশে থাকার কারণে একই গ্রামের শাকিলের সাথে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যেটা তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ভালো চোখে দেখেনি। তারা রাতদিন তাঁকে ভর্ৎসনা করত। অন্যদিকে, তাঁর স্বামীও তাঁকে নানাভাবে দোষারপ করছে। শাকিলও বিবাহিত, নানা কারণে কোনো উপায়ান্তর না দেখে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে বলে মনে হয়েছে। আমরা তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটন করব।