ইপেপার । আজ সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা, চুয়াডাঙ্গার খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২
  • / ২৫ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ প্রতিবেদন: চলছে হেমন্তকাল। কিন্তু রাতের ঝিরিঝির ঠান্ডা বাতাস ও সকালের কুয়াশা জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা। আর শীতের আবহে সবকিছুই যেন বদলাতে শুরু করেছে। এখন থেকেই ব্যস্ততা বেড়েছে চুয়াডাঙ্গার খেজুর গাছিদের। গাছ তোলা ও পরিচর্যা শুরু করেছেন তাঁরা। সকাল হলেই গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচা-ছোলা ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে, এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬০টি খেজুর গাছ থেকে ২ হাজার ৫ শ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সকাল হতে রাস্তার ধারে ধারে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। অনেক কৃষক মজুরি দিয়ে খেজুর গাছ পরিচর্যায় করিয়ে নিচ্ছেন। খেজুর গাছ পরিচর্যাকারী এক কৃষক বলেন, এই খেজুর গাছ পরিচর্যায় সময় গাছের সাথে ঝুলে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে পায়ে ব্যাথা হয় ও মাজায় দড়ি বাধার কারণে মাজায়ও ব্যাথা হয়। সদর উপজেলায় দীননাথপুরের গাছি আ. সালাম বলেন, শীত আসার আগে এই সময় থেকে গাছ পরিচর্যা ও কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করি। এরপর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজ শুরু হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় গাড়াবাড়িয়ার কৃষক আল-আমিন বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা ১৫-১৬টি গাছ প্রস্তুত করি। একটি গাছ প্রস্তুত করতে অনেক সময় লেগে যায়। একটি গাছ থেকে এক ভাড় রসে এক কেজি গুড় তৈরি হয়। ১০-১২ ভাড় রস পেলেই ১০ কেজি গুড় উৎপাদন করা যায়। এতে হাজার খানেক টাকা আয় হয়।’
আরেক কৃষক বিল্লাল আলী বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস ও গুড় আজ বিলুপ্তির পথে। আগের মতো খেজুর গাছ আর নেই। প্রতিদিন ইটভাটায় জ্বালানির কাজে নিধন হচ্ছে এলাকার শত শত খেজুর গাছ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬০টি খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৯৩ হাজার ৪৫০টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ৮৩ হাজার ৭শ টি, জীবননগর উপজেলায় ৩৬ হাজার ৫শ টি এবং আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩৫ হাজার ৩১০টি খেজুর গাছ রয়েছে। এই গাছগুলো থেকে চলতি বছর ২ হাজার ৫শ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা, চুয়াডাঙ্গার খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

আপলোড টাইম : ০৯:২৭:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ অক্টোবর ২০২২

সমীকরণ প্রতিবেদন: চলছে হেমন্তকাল। কিন্তু রাতের ঝিরিঝির ঠান্ডা বাতাস ও সকালের কুয়াশা জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা। আর শীতের আবহে সবকিছুই যেন বদলাতে শুরু করেছে। এখন থেকেই ব্যস্ততা বেড়েছে চুয়াডাঙ্গার খেজুর গাছিদের। গাছ তোলা ও পরিচর্যা শুরু করেছেন তাঁরা। সকাল হলেই গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচা-ছোলা ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এদিকে, এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬০টি খেজুর গাছ থেকে ২ হাজার ৫ শ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, সকাল হতে রাস্তার ধারে ধারে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। অনেক কৃষক মজুরি দিয়ে খেজুর গাছ পরিচর্যায় করিয়ে নিচ্ছেন। খেজুর গাছ পরিচর্যাকারী এক কৃষক বলেন, এই খেজুর গাছ পরিচর্যায় সময় গাছের সাথে ঝুলে থাকা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে পায়ে ব্যাথা হয় ও মাজায় দড়ি বাধার কারণে মাজায়ও ব্যাথা হয়। সদর উপজেলায় দীননাথপুরের গাছি আ. সালাম বলেন, শীত আসার আগে এই সময় থেকে গাছ পরিচর্যা ও কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করি। এরপর গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজ শুরু হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় গাড়াবাড়িয়ার কৃষক আল-আমিন বলেন, ‘প্রতিদিন আমরা ১৫-১৬টি গাছ প্রস্তুত করি। একটি গাছ প্রস্তুত করতে অনেক সময় লেগে যায়। একটি গাছ থেকে এক ভাড় রসে এক কেজি গুড় তৈরি হয়। ১০-১২ ভাড় রস পেলেই ১০ কেজি গুড় উৎপাদন করা যায়। এতে হাজার খানেক টাকা আয় হয়।’
আরেক কৃষক বিল্লাল আলী বলেন, গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুর রস ও গুড় আজ বিলুপ্তির পথে। আগের মতো খেজুর গাছ আর নেই। প্রতিদিন ইটভাটায় জ্বালানির কাজে নিধন হচ্ছে এলাকার শত শত খেজুর গাছ।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা জানান, চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৬০টি খেজুর গাছ রয়েছে। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৯৩ হাজার ৪৫০টি, দামুড়হুদা উপজেলায় ৮৩ হাজার ৭শ টি, জীবননগর উপজেলায় ৩৬ হাজার ৫শ টি এবং আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৩৫ হাজার ৩১০টি খেজুর গাছ রয়েছে। এই গাছগুলো থেকে চলতি বছর ২ হাজার ৫শ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।