ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

পরীক্ষার হলে মোবাইল নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন শিক্ষক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
  • / ৬৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমানকে পিটিয়ে আহত করেছেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) হামিদুল হক।

গতকাল বুধবার পরীক্ষার হলে মোবাইল নেওয়ার অভিযোগে পরীক্ষা শেষে প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে ওই ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেন তিনি। পরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য মোস্তাফিজুরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। সে উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের কুলপালা কবরস্থানপাড়ার আনারুল ইসলামের ছেলে।

আহত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পরীক্ষার কক্ষ থেকে বাইরে যায়। এসময় শিক্ষক হামিদুল হক আমার কাছে থাকা একটি মোবাইল কেড়ে নেন। পরীক্ষা শেষে স্যারের নিকট মোবাইলটি ফেরত চাইতে গেলে তিনি বলেন, অবিভাবক ছাড়া মোবাইল দেওয়া যাবে না। কিছুক্ষণ পর আমি নিজেই স্যারকে গিয়ে বলি, আর কোন দিন মোবাইল নিয়ে আসব না, ফোনটি দিয়ে দেন।

এসময় তিনি আমাকে চোখের সামনে থেকে সরে যেতেন বলেন। পরে গ্রামের ইউপি সদস্যের ছেলের আমাকে সঙ্গে নিয়ে আবার স্যারের নিকট যায়। তখন আমি হামিদুল স্যারের কাছে মোবাইলটি চাওয়ার জন্য ‘শোনেন’ বলামাত্রয় তিনি একটি প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে চেয়ারটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।’

ওই শিক্ষার্থীর পিতা আনারুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে কঠিন কোনো অন্যায় করেনি, যে নির্মমভাবে তাকে মারধর করবে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া হচ্ছে সে নাকি পরীক্ষার হলরুমের মধ্যেই ধুমপান করেছে। এটা মিথ্যা বানোয়াট। আমি ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি করছি। আমি গরীব হতে পারি। তবে আমার ছেলের বিচারের জন্য প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীর নিকট যাব।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রবিউল ইসলাম ঝন্টু বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। শুনেছি ওই শিক্ষার্থী মোবাইলের ইন্টারনেটের মাধ্যমে উত্তরপত্র ডাউনলোড করছিল আর পরীক্ষা হলের মধ্যেই ধুমপান করছিল। তবে এভাবে ছাত্রকে মারধর করাটা অন্যায় বলে মনে হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়নি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরীক্ষা শেষে এক শিক্ষার্থী তার মোবাইল নিতে এসেছিল। যেহেতু মোবাইলটি কার এটা আমি জানি না। তাই যেই শিক্ষক মোবাইল জব্দ করেছে তার নিকট থেকেই বুঝে নেয়ার জন্য বলি। এরপর আমি স্কুল থেকে বাড়ি চলে আসি। বিকেলে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বোন আমাকে মারধারের ঘটনাটি জানান। ঘটনাটি নিয়ে আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

পরীক্ষার হলে মোবাইল নেওয়ার অভিযোগে ছাত্রকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠালেন শিক্ষক

আপলোড টাইম : ০৮:০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার গোকুলখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমানকে পিটিয়ে আহত করেছেন ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক (শারীরিক শিক্ষা) হামিদুল হক।

গতকাল বুধবার পরীক্ষার হলে মোবাইল নেওয়ার অভিযোগে পরীক্ষা শেষে প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে ওই ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করেন তিনি। পরে পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসার জন্য মোস্তাফিজুরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। সে উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের কুলপালা কবরস্থানপাড়ার আনারুল ইসলামের ছেলে।

আহত মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে আমি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে পরীক্ষার কক্ষ থেকে বাইরে যায়। এসময় শিক্ষক হামিদুল হক আমার কাছে থাকা একটি মোবাইল কেড়ে নেন। পরীক্ষা শেষে স্যারের নিকট মোবাইলটি ফেরত চাইতে গেলে তিনি বলেন, অবিভাবক ছাড়া মোবাইল দেওয়া যাবে না। কিছুক্ষণ পর আমি নিজেই স্যারকে গিয়ে বলি, আর কোন দিন মোবাইল নিয়ে আসব না, ফোনটি দিয়ে দেন।

এসময় তিনি আমাকে চোখের সামনে থেকে সরে যেতেন বলেন। পরে গ্রামের ইউপি সদস্যের ছেলের আমাকে সঙ্গে নিয়ে আবার স্যারের নিকট যায়। তখন আমি হামিদুল স্যারের কাছে মোবাইলটি চাওয়ার জন্য ‘শোনেন’ বলামাত্রয় তিনি একটি প্লাস্টিকের চেয়ার দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারতে শুরু করেন। একপর্যায়ে চেয়ারটি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়।’

ওই শিক্ষার্থীর পিতা আনারুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে কঠিন কোনো অন্যায় করেনি, যে নির্মমভাবে তাকে মারধর করবে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে অপবাদ দেয়া হচ্ছে সে নাকি পরীক্ষার হলরুমের মধ্যেই ধুমপান করেছে। এটা মিথ্যা বানোয়াট। আমি ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবি করছি। আমি গরীব হতে পারি। তবে আমার ছেলের বিচারের জন্য প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীর নিকট যাব।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রবিউল ইসলাম ঝন্টু বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি। শুনেছি ওই শিক্ষার্থী মোবাইলের ইন্টারনেটের মাধ্যমে উত্তরপত্র ডাউনলোড করছিল আর পরীক্ষা হলের মধ্যেই ধুমপান করছিল। তবে এভাবে ছাত্রকে মারধর করাটা অন্যায় বলে মনে হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়নি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, পরীক্ষা শেষে এক শিক্ষার্থী তার মোবাইল নিতে এসেছিল। যেহেতু মোবাইলটি কার এটা আমি জানি না। তাই যেই শিক্ষক মোবাইল জব্দ করেছে তার নিকট থেকেই বুঝে নেয়ার জন্য বলি। এরপর আমি স্কুল থেকে বাড়ি চলে আসি। বিকেলে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বোন আমাকে মারধারের ঘটনাটি জানান। ঘটনাটি নিয়ে আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) আমরা সবাইকে নিয়ে বসবো।