ইপেপার । আজ শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

নিউজ করতে গিয়ে বিপাকে সাংবাদিক!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২
  • / ৩৯ বার পড়া হয়েছে

আজ আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবে জরুরি মিটিংয়ে বনতে পারে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ

 

সমীকরণ প্রতিবেদক: আলমডাঙ্গায় চোরাই মালামাল কেনাকে কেন্দ্র করে দুই দোকানদারের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বন্ডবিল রেলগেট বাজারে দুটি ভাঙড়ি ব্যবসায়ীর দোকানে চোরাই মালামাল কেনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। চোরাই মাল নিয়ে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নিউজের তথ্য সংগ্রহ করতে ছুটে যান সাংবাদিক নাহিদ হাসান।

জানা যায়, ভাংড়ি ব্যবসায়ী সামাদের দোকানে চুরি হওয়া ৩৪ পিস প্লেন শিটের মধ্যে রয়েছে ৭ পিস, আর বাকি ২৭ পিস চোরের কাছ থেকে ক্রয় করেছে গোবিন্দপুর গ্রামের শাহাবুল হক। নিউজ পরিপূর্ণ করার জন্য সাংবাদিক যখন সাহাবুল হকের দোকানে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান, তখন শাহাবুল হক উত্তেজিত হন এবং সাংবাদিকের সাথে কোনো প্রকার কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় শাহাবুল হক বিষয়টি বন্ডবিল গ্রামের অপর এক কম্পিউটার দোকানদার শাওন আলীকে জানালে শাওন আলী সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে এবং তার দোকানের সামনে আসতে বলে। পরে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক নাহিদ হাসান বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে জানান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতেই কম্পিউটার দোকানের সামনে উপস্থিত হন। তখন দোকান থেকে শাওন আলী ছুটে আসে এবং সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। গালিগালাজের একপর্যায়ে সাংবাদিক প্রতিবাদ করলে দোকানদার শাওন সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে ধাক্কা দিতে শুরু করে। এসময় দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। পরে বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক নাহিদ হাসানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, দোকানদার শাওন ও তাঁর বাবাকে নিয়ে বসে সমাধান করেন। ওই দিন সাংবাদিক নাহিদ হাসান নিউজের কাজ সম্পন্ন না করেই ওই স্থান থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে একইদিন বিকেলে সাংবাদিক নাহিদ হাসান খবর পান আলমডাঙ্গা পৌরসভার সভাকক্ষে চুরি যাওয়া প্লেন শিটের মালিক ও চুরি যাওয়া প্লেনশিটের সাতটি স্প্রেডশিট পাওয়া দোকানদার সামাদ হোসেনকে নিয়ে মিটিং চলছে। পরবর্তীতে সাংবাদিক নাহিদ হাসান মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবু হোসেন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের সম্মতিতে পৌরসভার সভাকক্ষে চলমান সালিশে উপস্থিত হন। মিটিং চলার একপর্যায়ে হঠাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় চুরি যাওয়া ৩৪ পিস প্লেন শিটের মধ্যে ২৭ পিশ প্লেন শিট ক্রয় করা দোকানদার শাহাবুল হক। উপস্থিত হয়ে অপর দোকানদার সামাদ হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে ও বেধড়ক মারধর করতে থাকে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সালিশে উপস্থিত বিচারক দুই কাউন্সিলর দুইপক্ষকেই থামিয়ে সভাকক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়।

পরবর্তীতে ২ দোকানদার শাহাবুল হক ও সামাদ হোসেন নিজ নিজ দোকানের সামনে উপস্থিত হয়ে আবারো বাগবিতণ্ডা ও মারপিটের ঘটনা ঘটায়। এ খবর সাংবাদিক নাহিদ হাসান ও বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকা দুই কাউন্সিলর পৌরসভার সভাকক্ষে বসেই শুনতে পান। পরবর্তীতে নিউজের জন্য ঘটনাস্থলে না গিয়েই সাংবাদিক হিসেবে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন সাংবাদিক নাহিদ হাসান। তথ্য সংগ্রহের একপর্যায়ে জানতে পারেন দুইপক্ষের মারামারি অভিযোগের বিষয়ে শাহাবুল হক সাংবাদিক নাহিদ হাসানসহ আরও বেশ কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করবেন।

এবিষয়ে সাংবাদিক নাহিদ হাসান সাহাবুলসহ তাঁর নিকটস্থ আত্মীয়দের কাছে জানতে চাইলে শাহাবুল হক বলেন, ‘আপনি সাংবাদিক তাতে কি হয়েছে, মামলা আপনাকেসহ দেব। পারলে আপনি কিছু কইরেন, আর যদি আপনার নামে মামলা দেওয়া থেকে, আপনি বাঁচতে চান, তাহলে আমার কাছে সামাদ যেখানেই থাক খুঁজে হাজির করে দেন। আমি আমার হিসাব মিলিয়ে নেব। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নাম কেটে দেব।’ কিন্তু এ বিষয়ে সাংবাদিক নাহিদ হাসান তার সম্পৃক্ততা জানতে চাইলে শাহাবুল হক বলেন, ‘আপনার কোনো সম্পৃক্ততা লাগবে না। আমি মামলা আপনার নামে দেবই, পারলে আপনি আমার নামে নিউজ করে কিছু কইরেন।’

এবিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবু হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই গোলযোগে সাংবাদিক নাহিদ হাসানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সে প্লেন শিট চুরির ব্যাপারে নিউজের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাকে বিভিন্নভাবে বাধা দেয় আর পৌরসভা থেকে সালিশ পণ্ড হওয়ার পর দুইপক্ষ যখন বন্ডবিল গেটে মারামারি করে, নাহিদ হাসান তখন আলমডাঙ্গা পৌরসভায় অবস্থান করছিল। আমি মনে করি, সাংবাদিক নাহিদ হাসানের নামে যে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।

এবিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বন্ডবিল গেটে সাহাবুল ও সামাদ নামে দুইজন দোকানদার ব্যবসা শুরু করার পর থেকে এই মোড়ে নানারকম ছোট বড় সমস্যার তৈরি হতে থাকে। সাংবাদিক নাহিদ হাসান প্লেনশিট চুরি যাওয়া ও এই দুইজনের ভাংড়ির দোকানে প্লেন শিট পাওয়ার বিষয়ে নিউজের তথ্য সংগ্রহ করতে এসে বিপাকে পড়ে নিউজের তথ্য সংগ্রহে বাধা দেয় বণ্ডবিল গেটের কম্পিউটার দোকানদার শাওন হোসেন। পরে বিষয়টি সাংবাদিক নাহিদ হাসান, আমি স্থানীয় কাউন্সিলর হওয়ায় আমাকে অবগত করে। পরে আমি সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে নিয়ে শাওনের দোকানের সামনে উপস্থিত হলে শাওন সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে উদ্দেশ্য করে নানা বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকে। কথাবার্তার একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হয় শাওন হোসেন। তখন আমি এবং দোকানদার শাওনের বাবা স্থানীয়ভাবে বসে সাথে সাথেই সমাধান করি। পরবর্তীতে বিকেলে চোরাই মাল পাওয়া দোকানদার সামাদ হোসেন ও মালের মালিককে নিয়ে আমরা দুই কাউন্সিলর পৌরসভার সভাকক্ষে সালিশে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। কিন্তু হঠাৎ এ অপর দোকানদার শাহাবুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সামাদ হোসেনকে মারধর করতে থাকে আমরা দুই কাউন্সিলর মিলে মারধর থামিয়ে দুই পক্ষকেই বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দুই পক্ষ বাড়ি না গিয়ে বন্ডবিল গেটে আবারো মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে এ খবর জানতে পারি সাংবাদিক নাহিদ হাসানসহ আমরা দুই কাউন্সিলর পৌরসভার সভাকক্ষে বসা অবস্থাতেই, তাই আমি জোর গলায় বলতে পারি এই গ্যাঞ্জামগুলোর সাথে সাংবাদিক নাহিদ হাসানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম অঅজম বলেন, ‘সাংবাদিক নাহিদের সাথে এমন আচরণ মেনে নেওয়া হবে না। আগামীকাল (আজ বুধবার) আমরা প্রেসক্লাব সদস্যদের নিয়ে জরুরি মিটিংয়ে বসবো। প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।’

এবিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একজন সাংবাদিক তার তথ্য সংগ্রহের কাজে যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবেন। এ ঘটনা আমি খতিয়ে দেখেছি এবং দেখছি। এ ঘটনায় সাংবাদিক নাহিদের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। বিষয়টি নিয়ে অধিক তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তশেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

নিউজ করতে গিয়ে বিপাকে সাংবাদিক!

আপলোড টাইম : ০৯:০০:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২

আজ আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবে জরুরি মিটিংয়ে বনতে পারে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ

 

সমীকরণ প্রতিবেদক: আলমডাঙ্গায় চোরাই মালামাল কেনাকে কেন্দ্র করে দুই দোকানদারের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড বন্ডবিল রেলগেট বাজারে দুটি ভাঙড়ি ব্যবসায়ীর দোকানে চোরাই মালামাল কেনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। চোরাই মাল নিয়ে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নিউজের তথ্য সংগ্রহ করতে ছুটে যান সাংবাদিক নাহিদ হাসান।

জানা যায়, ভাংড়ি ব্যবসায়ী সামাদের দোকানে চুরি হওয়া ৩৪ পিস প্লেন শিটের মধ্যে রয়েছে ৭ পিস, আর বাকি ২৭ পিস চোরের কাছ থেকে ক্রয় করেছে গোবিন্দপুর গ্রামের শাহাবুল হক। নিউজ পরিপূর্ণ করার জন্য সাংবাদিক যখন সাহাবুল হকের দোকানে গিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান, তখন শাহাবুল হক উত্তেজিত হন এবং সাংবাদিকের সাথে কোনো প্রকার কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। এসময় শাহাবুল হক বিষয়টি বন্ডবিল গ্রামের অপর এক কম্পিউটার দোকানদার শাওন আলীকে জানালে শাওন আলী সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি প্রদর্শন করে এবং তার দোকানের সামনে আসতে বলে। পরে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক নাহিদ হাসান বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে জানান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের উপস্থিতিতেই কম্পিউটার দোকানের সামনে উপস্থিত হন। তখন দোকান থেকে শাওন আলী ছুটে আসে এবং সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। গালিগালাজের একপর্যায়ে সাংবাদিক প্রতিবাদ করলে দোকানদার শাওন সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে ধাক্কা দিতে শুরু করে। এসময় দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। পরে বিষয়টি স্থানীয় কাউন্সিলর সাইফুল ইসলাম, সাংবাদিক নাহিদ হাসানসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, দোকানদার শাওন ও তাঁর বাবাকে নিয়ে বসে সমাধান করেন। ওই দিন সাংবাদিক নাহিদ হাসান নিউজের কাজ সম্পন্ন না করেই ওই স্থান থেকে চলে আসতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে একইদিন বিকেলে সাংবাদিক নাহিদ হাসান খবর পান আলমডাঙ্গা পৌরসভার সভাকক্ষে চুরি যাওয়া প্লেন শিটের মালিক ও চুরি যাওয়া প্লেনশিটের সাতটি স্প্রেডশিট পাওয়া দোকানদার সামাদ হোসেনকে নিয়ে মিটিং চলছে। পরবর্তীতে সাংবাদিক নাহিদ হাসান মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবু হোসেন ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের সম্মতিতে পৌরসভার সভাকক্ষে চলমান সালিশে উপস্থিত হন। মিটিং চলার একপর্যায়ে হঠাৎ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় চুরি যাওয়া ৩৪ পিস প্লেন শিটের মধ্যে ২৭ পিশ প্লেন শিট ক্রয় করা দোকানদার শাহাবুল হক। উপস্থিত হয়ে অপর দোকানদার সামাদ হোসেনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে ও বেধড়ক মারধর করতে থাকে। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সালিশে উপস্থিত বিচারক দুই কাউন্সিলর দুইপক্ষকেই থামিয়ে সভাকক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়।

পরবর্তীতে ২ দোকানদার শাহাবুল হক ও সামাদ হোসেন নিজ নিজ দোকানের সামনে উপস্থিত হয়ে আবারো বাগবিতণ্ডা ও মারপিটের ঘটনা ঘটায়। এ খবর সাংবাদিক নাহিদ হাসান ও বিচারক হিসেবে উপস্থিত থাকা দুই কাউন্সিলর পৌরসভার সভাকক্ষে বসেই শুনতে পান। পরবর্তীতে নিউজের জন্য ঘটনাস্থলে না গিয়েই সাংবাদিক হিসেবে তথ্য সংগ্রহ করতে থাকেন সাংবাদিক নাহিদ হাসান। তথ্য সংগ্রহের একপর্যায়ে জানতে পারেন দুইপক্ষের মারামারি অভিযোগের বিষয়ে শাহাবুল হক সাংবাদিক নাহিদ হাসানসহ আরও বেশ কয়েকজনের নামে মামলা দায়ের করবেন।

এবিষয়ে সাংবাদিক নাহিদ হাসান সাহাবুলসহ তাঁর নিকটস্থ আত্মীয়দের কাছে জানতে চাইলে শাহাবুল হক বলেন, ‘আপনি সাংবাদিক তাতে কি হয়েছে, মামলা আপনাকেসহ দেব। পারলে আপনি কিছু কইরেন, আর যদি আপনার নামে মামলা দেওয়া থেকে, আপনি বাঁচতে চান, তাহলে আমার কাছে সামাদ যেখানেই থাক খুঁজে হাজির করে দেন। আমি আমার হিসাব মিলিয়ে নেব। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নাম কেটে দেব।’ কিন্তু এ বিষয়ে সাংবাদিক নাহিদ হাসান তার সম্পৃক্ততা জানতে চাইলে শাহাবুল হক বলেন, ‘আপনার কোনো সম্পৃক্ততা লাগবে না। আমি মামলা আপনার নামে দেবই, পারলে আপনি আমার নামে নিউজ করে কিছু কইরেন।’

এবিষয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবু হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই গোলযোগে সাংবাদিক নাহিদ হাসানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সে প্লেন শিট চুরির ব্যাপারে নিউজের জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাকে বিভিন্নভাবে বাধা দেয় আর পৌরসভা থেকে সালিশ পণ্ড হওয়ার পর দুইপক্ষ যখন বন্ডবিল গেটে মারামারি করে, নাহিদ হাসান তখন আলমডাঙ্গা পৌরসভায় অবস্থান করছিল। আমি মনে করি, সাংবাদিক নাহিদ হাসানের নামে যে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক।

এবিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইফুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই বন্ডবিল গেটে সাহাবুল ও সামাদ নামে দুইজন দোকানদার ব্যবসা শুরু করার পর থেকে এই মোড়ে নানারকম ছোট বড় সমস্যার তৈরি হতে থাকে। সাংবাদিক নাহিদ হাসান প্লেনশিট চুরি যাওয়া ও এই দুইজনের ভাংড়ির দোকানে প্লেন শিট পাওয়ার বিষয়ে নিউজের তথ্য সংগ্রহ করতে এসে বিপাকে পড়ে নিউজের তথ্য সংগ্রহে বাধা দেয় বণ্ডবিল গেটের কম্পিউটার দোকানদার শাওন হোসেন। পরে বিষয়টি সাংবাদিক নাহিদ হাসান, আমি স্থানীয় কাউন্সিলর হওয়ায় আমাকে অবগত করে। পরে আমি সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে নিয়ে শাওনের দোকানের সামনে উপস্থিত হলে শাওন সাংবাদিক নাহিদ হাসানকে উদ্দেশ্য করে নানা বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা বলতে থাকে। কথাবার্তার একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কিতে লিপ্ত হয় শাওন হোসেন। তখন আমি এবং দোকানদার শাওনের বাবা স্থানীয়ভাবে বসে সাথে সাথেই সমাধান করি। পরবর্তীতে বিকেলে চোরাই মাল পাওয়া দোকানদার সামাদ হোসেন ও মালের মালিককে নিয়ে আমরা দুই কাউন্সিলর পৌরসভার সভাকক্ষে সালিশে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে। কিন্তু হঠাৎ এ অপর দোকানদার শাহাবুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। সামাদ হোসেনকে মারধর করতে থাকে আমরা দুই কাউন্সিলর মিলে মারধর থামিয়ে দুই পক্ষকেই বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দুই পক্ষ বাড়ি না গিয়ে বন্ডবিল গেটে আবারো মারামারিতে লিপ্ত হয়েছে এ খবর জানতে পারি সাংবাদিক নাহিদ হাসানসহ আমরা দুই কাউন্সিলর পৌরসভার সভাকক্ষে বসা অবস্থাতেই, তাই আমি জোর গলায় বলতে পারি এই গ্যাঞ্জামগুলোর সাথে সাংবাদিক নাহিদ হাসানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

আলমডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি খন্দকার মন্টু ও সাধারণ সম্পাদক হামিদুল ইসলাম অঅজম বলেন, ‘সাংবাদিক নাহিদের সাথে এমন আচরণ মেনে নেওয়া হবে না। আগামীকাল (আজ বুধবার) আমরা প্রেসক্লাব সদস্যদের নিয়ে জরুরি মিটিংয়ে বসবো। প্রয়োজনে কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া হবে।’

এবিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘একজন সাংবাদিক তার তথ্য সংগ্রহের কাজে যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাবেন। এ ঘটনা আমি খতিয়ে দেখেছি এবং দেখছি। এ ঘটনায় সাংবাদিক নাহিদের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি। বিষয়টি নিয়ে অধিক তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তশেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’