ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

দর্শনায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

দর্শনা অফিস:
  • আপলোড টাইম : ০৯:২৭:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ৩২ বার পড়া হয়েছে

দর্শনা-জীবননগর সড়কে বাস ও দুটি মোটরসাইকেল সংঘর্ষে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কামরুল ইসলাম (৪০) নামের এক মোটরসাইকেল চালকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এসময় অপর মোটরসাইকেল চালককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত মোটরসাইকেল চালক কামরুল ইসলাম যশোর শহরের নাজির শঙ্করপুর এলাকার ছাদেক দারোগার মোড়ের নওসের আলীর ছেলে ও আহত মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়া দামুড়হুদা উপজেলার মদনা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার আফতাব আলীর ছেলে। এসময় বাসের চালক ও হেল্পার পালিয়ে গেলেও পুলিশ বাসটিকে থানা হেফাজতে নিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দর্শনা-জীবননগর সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে দর্শনা অভিমুখে যশোর থেকে আসছিলেন সিটি গোল্ডের অলঙ্কার ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম। ওই মোটরসাইকেলের পিছনে জীবননগর থেকে আসছিলেন দামুড়হুদা উপজেলার মদনা গ্রামের নেণ্টু মিয়া। মোটরসাইকেল দুটি দর্শনা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মান্দার ডাক্তারখানার নিকট পৌঁছালে একই দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে জীবননগর থেকে ছেড়ে আসা চুয়াডাঙ্গাগামী শাপলা পরিবহনের ‘এমকে দোয়েল (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-১৯৫০)’ একটি বাস প্রথমে মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়ার মোটরসাইকেলে সজরে ধাক্কা দেয়। নেণ্টু মিয়া মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনের মোটরসাইকেল কামরুল ইসলামের মোটরসাইকেলে সজরে ধাক্কা মারে। এসময় নেণ্টু মিয়া সড়কের পাশে ছিটকে পড়লেও সামনের মোটরসাইকেল চালক কামরুল ইসলাম সড়কের ওপর মুখ থুবড়ে পড়েন। এসময় ঘাতক বাস চালক বাস গতিরোধ না করে সড়কের ওপর পড়ে থাকা কামরুলের মাথার ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে বাস চালিয়ে নিয়ে যান। ফলে ঘটনাস্থলেই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কামরুলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় অপর মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়াকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দর্শনা লোকনাথপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ও দর্শনা থানা পুলিশ। এসময় ঘাতক বাসচালক বাসটিকে নিয়ে দর্শনা হঠাৎ পাড়া নামক স্থানে রেখে চালক ও হেল্পার পালিয়ে যান। পরে দর্শনা থানা পুলিশ নিহত কামরুলের লাশ, দুর্ঘটনাকবলিত দুটি মোটরসাইকেল ও বাসটিকে থানা হেফাজতে নেয়।

এবিষয়ে নিহত কামরুলের প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম জানান, কামরুল ইসলাম একজন সিটি গোল্ড অলঙ্কার ব্যবসায়ী। যশোর সোনাপট্টিতে তাঁর দোকান রয়েছে। তিনি মোটরসাইকেলযোগে জীবননগর, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায় দোকানে দোকানে সিটি গোল্ডের অলঙ্কার দিয়ে আসেন। তাঁর পরিবারে দুটি পুত্রসন্তান, একটি কন্যাসন্তান, স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা রয়েছেন।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসেন বলেন, আহত নেণ্টু মিয়ার অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তাঁর শরীরে সামান্য জখমের চিহ্ন আছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এইচ এম লুৎফুল কবীর বলেন, দুই মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চালক কামরুল ইসলাম পড়ে যান। এসময় যাত্রীবাহী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থালেই তাঁর মৃত্যু হয়। আহত হন অপর মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়া। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল দুটি হেফাজতে নিয়েছে। এছাড়া বাসের চালক ও সহকারী পলাতক থাকলেও বাসটি আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

দর্শনায় বাস চাপায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

আপলোড টাইম : ০৯:২৭:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১

দর্শনা-জীবননগর সড়কে বাস ও দুটি মোটরসাইকেল সংঘর্ষে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কামরুল ইসলাম (৪০) নামের এক মোটরসাইকেল চালকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এসময় অপর মোটরসাইকেল চালককে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহত মোটরসাইকেল চালক কামরুল ইসলাম যশোর শহরের নাজির শঙ্করপুর এলাকার ছাদেক দারোগার মোড়ের নওসের আলীর ছেলে ও আহত মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়া দামুড়হুদা উপজেলার মদনা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার আফতাব আলীর ছেলে। এসময় বাসের চালক ও হেল্পার পালিয়ে গেলেও পুলিশ বাসটিকে থানা হেফাজতে নিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে দর্শনা-জীবননগর সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে দর্শনা অভিমুখে যশোর থেকে আসছিলেন সিটি গোল্ডের অলঙ্কার ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম। ওই মোটরসাইকেলের পিছনে জীবননগর থেকে আসছিলেন দামুড়হুদা উপজেলার মদনা গ্রামের নেণ্টু মিয়া। মোটরসাইকেল দুটি দর্শনা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মান্দার ডাক্তারখানার নিকট পৌঁছালে একই দিক থেকে বেপরোয়া গতিতে জীবননগর থেকে ছেড়ে আসা চুয়াডাঙ্গাগামী শাপলা পরিবহনের ‘এমকে দোয়েল (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-১৯৫০)’ একটি বাস প্রথমে মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়ার মোটরসাইকেলে সজরে ধাক্কা দেয়। নেণ্টু মিয়া মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনের মোটরসাইকেল কামরুল ইসলামের মোটরসাইকেলে সজরে ধাক্কা মারে। এসময় নেণ্টু মিয়া সড়কের পাশে ছিটকে পড়লেও সামনের মোটরসাইকেল চালক কামরুল ইসলাম সড়কের ওপর মুখ থুবড়ে পড়েন। এসময় ঘাতক বাস চালক বাস গতিরোধ না করে সড়কের ওপর পড়ে থাকা কামরুলের মাথার ওপর দিয়ে দ্রুতগতিতে বাস চালিয়ে নিয়ে যান। ফলে ঘটনাস্থলেই বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে কামরুলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় অপর মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়াকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দর্শনা লোকনাথপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ও দর্শনা থানা পুলিশ। এসময় ঘাতক বাসচালক বাসটিকে নিয়ে দর্শনা হঠাৎ পাড়া নামক স্থানে রেখে চালক ও হেল্পার পালিয়ে যান। পরে দর্শনা থানা পুলিশ নিহত কামরুলের লাশ, দুর্ঘটনাকবলিত দুটি মোটরসাইকেল ও বাসটিকে থানা হেফাজতে নেয়।

এবিষয়ে নিহত কামরুলের প্রতিবেশী সিরাজুল ইসলাম জানান, কামরুল ইসলাম একজন সিটি গোল্ড অলঙ্কার ব্যবসায়ী। যশোর সোনাপট্টিতে তাঁর দোকান রয়েছে। তিনি মোটরসাইকেলযোগে জীবননগর, দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায় দোকানে দোকানে সিটি গোল্ডের অলঙ্কার দিয়ে আসেন। তাঁর পরিবারে দুটি পুত্রসন্তান, একটি কন্যাসন্তান, স্ত্রী ও বৃদ্ধ মা রয়েছেন।

এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোহরাব হোসেন বলেন, আহত নেণ্টু মিয়ার অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তাঁর শরীরে সামান্য জখমের চিহ্ন আছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ এইচ এম লুৎফুল কবীর বলেন, দুই মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চালক কামরুল ইসলাম পড়ে যান। এসময় যাত্রীবাহী বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থালেই তাঁর মৃত্যু হয়। আহত হন অপর মোটরসাইকেল চালক নেণ্টু মিয়া। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল দুটি হেফাজতে নিয়েছে। এছাড়া বাসের চালক ও সহকারী পলাতক থাকলেও বাসটি আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।