ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

জীবিত সন্দেহে মৃত নারীকে নিয়ে টানাটানি!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / ৩০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আলমডাঙ্গায় চিকিৎসকের মৃত ঘোষণা করার পরেও নড়ে ওঠাই মুক্তা খাতুন (২৫) নামের এক নারীর লাশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে উপস্থিত হন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে মৃত্যুর পরেও নড়ে ওঠায় এ ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গ্রামের চারপাশ থেকে উৎসুক মানুষ ছুটে যান ওই নারীর বাড়িতে। এদিকে পরিবারের সদস্যরা মুক্তা খাতুনের লাশ নড়ে উঠার ঘটনায় দ্রুত লাশ নিয়ে সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন। এসময় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মুক্তা খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ রুয়াকুলি গ্রামের পূর্বপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও নয়মাস বয়সী মেঘলা নামের এক শিশুকন্যার জননী।

নিহত মুক্তা খাতুনের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে সামান্য অসুস্থ্য ছিলেন মুক্তা খাতুন। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মুক্ত খাতুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল পাঁচটার দিকে ফাতেমা ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুক্তা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। এ ঘটনায় পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিহত মুক্তা খাতুনের লাশের জানাজার জন্য গোসলের প্রস্তুতি নিতে গেলে তাঁর বোন রত্না খাতুনের মনে হয় মুক্তা জীবিত আছে। তাঁর আঙুল নড়ে উঠেছে। এসময় পরিবারের সদস্যরা মুক্তা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মুক্তা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মুক্তা খাতুনের বোন রত্না খাতুন বলেন, ‘আমার বোনের শরীরে উষ্ণতা ছিল। আমি তার হাত নড়তে দেখেছি। এসময় আমরা তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহাবুবে খোদা বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটার দিকে পরিবারের সদস্যরা মুক্তা খাতুন নামের এক নারীকে অচেতন অবস্থায় জরুরি বিভাগে নেয়। পরিবারের সদস্যরা জানান আলমডাঙ্গার একজন চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন, কিন্তু লাশ বাড়িতে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পড়ে মুক্তা খাতুনকে জীবিত মনে হলে তারা তাকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। তবে জরুরি বিভাগে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।’

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এস এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘ঘটনাটি সর্ম্পকে আমি জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের নিকট থেকে জানতে পেরেছি। মৃত্যুর পর লাশের শরীর সঙ্কুচিত হতে থাকে। এতে মৃত ব্যক্তির হাত বা পা নড়ে উঠতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে এই রোগীর ক্ষেত্রেও এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকবে। ওই নারীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, আলমডাঙ্গা থানাধীন রুয়াকুলী গ্রামে মুক্তা খাতুন নামের এক নারীর মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু। রাতেই সদর হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবিত সন্দেহে মৃত নারীকে নিয়ে টানাটানি!

আপলোড টাইম : ০৯:৪৯:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আলমডাঙ্গায় চিকিৎসকের মৃত ঘোষণা করার পরেও নড়ে ওঠাই মুক্তা খাতুন (২৫) নামের এক নারীর লাশ নিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে উপস্থিত হন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে মৃত্যুর পরেও নড়ে ওঠায় এ ঘটনা লোকমুখে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গ্রামের চারপাশ থেকে উৎসুক মানুষ ছুটে যান ওই নারীর বাড়িতে। এদিকে পরিবারের সদস্যরা মুক্তা খাতুনের লাশ নড়ে উঠার ঘটনায় দ্রুত লাশ নিয়ে সদর হাসপাতালে ছুটে আসেন। এসময় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। মুক্তা খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সিগঞ্জ রুয়াকুলি গ্রামের পূর্বপাড়ার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও নয়মাস বয়সী মেঘলা নামের এক শিশুকন্যার জননী।

নিহত মুক্তা খাতুনের পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে সামান্য অসুস্থ্য ছিলেন মুক্তা খাতুন। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে মুক্ত খাতুন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে আলমডাঙ্গার ফাতেমা ক্লিনিকে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেল পাঁচটার দিকে ফাতেমা ক্লিনিকের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুক্তা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। এ ঘটনায় পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে নিহত মুক্তা খাতুনের লাশের জানাজার জন্য গোসলের প্রস্তুতি নিতে গেলে তাঁর বোন রত্না খাতুনের মনে হয় মুক্তা জীবিত আছে। তাঁর আঙুল নড়ে উঠেছে। এসময় পরিবারের সদস্যরা মুক্তা খাতুনের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মুক্তা খাতুনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত মুক্তা খাতুনের বোন রত্না খাতুন বলেন, ‘আমার বোনের শরীরে উষ্ণতা ছিল। আমি তার হাত নড়তে দেখেছি। এসময় আমরা তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহাবুবে খোদা বলেন, ‘রাত সাড়ে আটটার দিকে পরিবারের সদস্যরা মুক্তা খাতুন নামের এক নারীকে অচেতন অবস্থায় জরুরি বিভাগে নেয়। পরিবারের সদস্যরা জানান আলমডাঙ্গার একজন চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন, কিন্তু লাশ বাড়িতে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পড়ে মুক্তা খাতুনকে জীবিত মনে হলে তারা তাকে সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়। তবে জরুরি বিভাগে আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি।’

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. এস এস এম ফাতেহ আকরাম বলেন, ‘ঘটনাটি সর্ম্পকে আমি জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকের নিকট থেকে জানতে পেরেছি। মৃত্যুর পর লাশের শরীর সঙ্কুচিত হতে থাকে। এতে মৃত ব্যক্তির হাত বা পা নড়ে উঠতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে এই রোগীর ক্ষেত্রেও এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকবে। ওই নারীকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, আলমডাঙ্গা থানাধীন রুয়াকুলী গ্রামে মুক্তা খাতুন নামের এক নারীর মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু। রাতেই সদর হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ পরিবারের সদস্যদের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।