ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

জীবননগরের বাঁকা ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামের কাণ্ড

সমীকরণ প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৫১:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১
  • / ১০৫ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর উপজেলার করতোয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ও তাঁর অনুসারীরা। করতোয়া নদীটি দীর্ঘদিন অবহেলায় বিলীন হয়ে যাওয়ার মতো পড়ে ছিল। পরে সরকারের পক্ষ থেকে করতোয়া নদী আবারও খনন করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু নদী খনন কাজ শেষ হতে না হতেই করতোয়া নদীর দিকে নজর পড়েছে দখলদারদের। এই নদীতে এলাকার মানুষ গোসল করা, মাছ ধরা থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করেন। সেই নদীতে হঠাৎ করে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের বেশ কিছু প্রভাবশালী বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন।
জানা যায়, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের পাথিলা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর এই নদীর সরকারি জায়গার কিছু অংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। আর কিছু অংশ রবিউল মেম্বার ও তাঁর অনুসারীরা ইজারা নেওয়ার দাবি করে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। সরকারিভাবে নতুন করে খনন করা করতোয়া নদী আবারও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করছেন। এ মাছ চাষ করার কারণে কাউকে সেখানে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
পাথিলা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, তাঁদের গ্রামের পাশ দিয়ে করতোয়া নদী বয়ে গেছে। নদীটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবার ভারতে চলে গেছে। গঙ্গাদাশপুর গ্রামের আমিনুর রহমানের বাড়ির নিচ থেকে পাথিলা গ্রামের ব্রিজ পর্যন্ত বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটি দিয়েছেন বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান পাথিলা গ্রামের রবিউল ইসলামসহ তাঁর অনুসারীরা। এক মাস হলো তারা হঠাৎ করে ওই করতোয়া নদীতে বাঁধ দেন। আনুমানিক ১২ একর জলাকার এই বাঁধ দিয়ে আটকে ফেলে জলাশয়ে তারা মাছ ছেড়েছেন। পাথিলা গ্রামের মানুষ এই নদী নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তাই দখলকারীকে বাঁধ না দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন।
গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, রবিউল ইসলাম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান যে কারণে রবিউল ইসলাম কারও কোনো কিছুই মানতে চান না। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় জনগণসহ সুধী মহল।

 

এবিষয়ে নদী দখলকারী বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান, এই নদীটা ইউএনও’র নিকট থেকে বদ্ধ জলাশয় হিসেবে ১৯৯০ সালে গণস্বাস্থ্য এনজিওর মাধ্যমে বরাদ্দ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমরা যুব সমবায়ের মাধ্যমে এ মাছ চাষ করে থাকি। এটা আমরা ইজারার মাধ্যমে মাছ চাষ করে থাকি। প্রতিবছর আমরা খাজনা দিয়ে আসছি, এবছরও খাজনা দেওয়া হয়েছে।’

বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, তিনি ঘটনাটি জানেন না এবং এ ধরনের কোনো নদী ইজারা দেওয়া হয়েছে কি না, সেটাও তিনি জানেন না। তবে রবিউল ইসলাম মেম্বার দীর্ঘদিন যাবৎ এ নদীতে মাছ চাষ করছেন বলে জানান।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরের বাঁকা ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামের কাণ্ড

আপলোড টাইম : ০৮:৫১:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১ নভেম্বর ২০২১

জীবননগর উপজেলার করতোয়া নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ও তাঁর অনুসারীরা। করতোয়া নদীটি দীর্ঘদিন অবহেলায় বিলীন হয়ে যাওয়ার মতো পড়ে ছিল। পরে সরকারের পক্ষ থেকে করতোয়া নদী আবারও খনন করে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু নদী খনন কাজ শেষ হতে না হতেই করতোয়া নদীর দিকে নজর পড়েছে দখলদারদের। এই নদীতে এলাকার মানুষ গোসল করা, মাছ ধরা থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করেন। সেই নদীতে হঠাৎ করে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের বেশ কিছু প্রভাবশালী বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন।
জানা যায়, জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের পাথিলা গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর এই নদীর সরকারি জায়গার কিছু অংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। আর কিছু অংশ রবিউল মেম্বার ও তাঁর অনুসারীরা ইজারা নেওয়ার দাবি করে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। সরকারিভাবে নতুন করে খনন করা করতোয়া নদী আবারও বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করছেন। এ মাছ চাষ করার কারণে কাউকে সেখানে নামতে দেওয়া হচ্ছে না।
পাথিলা গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, তাঁদের গ্রামের পাশ দিয়ে করতোয়া নদী বয়ে গেছে। নদীটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবার ভারতে চলে গেছে। গঙ্গাদাশপুর গ্রামের আমিনুর রহমানের বাড়ির নিচ থেকে পাথিলা গ্রামের ব্রিজ পর্যন্ত বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটি দিয়েছেন বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান পাথিলা গ্রামের রবিউল ইসলামসহ তাঁর অনুসারীরা। এক মাস হলো তারা হঠাৎ করে ওই করতোয়া নদীতে বাঁধ দেন। আনুমানিক ১২ একর জলাকার এই বাঁধ দিয়ে আটকে ফেলে জলাশয়ে তারা মাছ ছেড়েছেন। পাথিলা গ্রামের মানুষ এই নদী নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তাই দখলকারীকে বাঁধ না দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন।
গ্রামবাসী অভিযোগ করে বলেন, রবিউল ইসলাম স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান যে কারণে রবিউল ইসলাম কারও কোনো কিছুই মানতে চান না। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় জনগণসহ সুধী মহল।

 

এবিষয়ে নদী দখলকারী বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রবিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে, তিনি জানান, এই নদীটা ইউএনও’র নিকট থেকে বদ্ধ জলাশয় হিসেবে ১৯৯০ সালে গণস্বাস্থ্য এনজিওর মাধ্যমে বরাদ্দ নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আমরা যুব সমবায়ের মাধ্যমে এ মাছ চাষ করে থাকি। এটা আমরা ইজারার মাধ্যমে মাছ চাষ করে থাকি। প্রতিবছর আমরা খাজনা দিয়ে আসছি, এবছরও খাজনা দেওয়া হয়েছে।’

বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, তিনি ঘটনাটি জানেন না এবং এ ধরনের কোনো নদী ইজারা দেওয়া হয়েছে কি না, সেটাও তিনি জানেন না। তবে রবিউল ইসলাম মেম্বার দীর্ঘদিন যাবৎ এ নদীতে মাছ চাষ করছেন বলে জানান।

জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।