ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

জীবননগরে শ্বশুরের গুনে খুলল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ঝাড়ুদার রইচের কপাল

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫৫:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

অনিয়ম-দুর্নীতি করে হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা
সমীকরণ প্রতিবেদক:
শ্বশুরের দৌলতে জীবননগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঝাড়ুদার হিসেবে যোগদান করেন রইচ। এতেই বদলে নিয়েছেন নিজের ভাগ্য। নিম্ন পদে চাকরি করেও জ্যামিতিক হারে বাড়িয়েছেন নিজের সম্পদ। করেছেন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। ঝাড়ুদার চাকরিই যেন তার কাছে সোনার ডিম পাড়া হাঁস! জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রইচের খণ্ডকালীন ঝাড়ুদার থেকে লাখ লাখ টাকার মালিক হওয়ার রহস্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার অনিয়ম আর দুর্নীতির চিত্র।
জানা গেছে, জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের খন্ডকালীন ঝাড়ুদার পদে চাকরি করলেও দপ্তরের সব ফাইল নড়াচড়া করেন রইচ। বাম হাতের কাজ সম্পন্ন না হলে সেবাপ্রার্থীদের সাথে কথা বলেন না তিনি। টাকা না পেলে করেন খারাপ ব্যবহার। অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের প্রশ্রয়ে হয়ে উঠছেন আরও বেপরোয়া। সূত্র জানায়, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নাইট গার্ড আতিয়ার রহমানের মেয়ের সাথে বিবাহ করেন রইচ। এতেই খন্ডকালীন ঝাড়ুদার হিসেবে জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কাজের সুযোগ হয় তার। গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। আসেন কর্তাদের নজরে। এরপর দলিল লেখক সমিতির সাথে যুক্ত হয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশনে অতিরিক্ত টাকা আদায়, অনিয়মের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করাতে ভূমিকা রাখছেন রইচ সিন্ডিকেটে। তার দলে রয়েছে দলিল লেখক সমিতির কথিত নেতা, নকল নবিশ, নকলকারক। রয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কিছু সিনিয়র ব্যক্তি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কয়েকজন বলেন, অফিসের কর্তার কাছে রইচ সোনার ডিম পাড়া হাঁস। ফলে তার অপরাধগুলো ওপেন সিক্রেট। তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। তাঁরা জানিয়েছেন, রইচ জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঝাড়ুদারের চাকরি করেন। কিন্তু তাকে দেখে কেউ সেটা বলতে পারবে না। সে অফিস কোনো দিন পরিস্কার করে না। এখন রইচ এই অফিসের অফিসার বনে গেছেন। রইচকে ম্যানেজ করা না গেলে কাগজের ‘ক’ও মিলে না সেবা প্রার্থীদের। এমনকি প্রতিপক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সেবা প্রার্থীকে হয়রানি করেন। গ্রামের বাড়ি নতুনপাড়াতে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। ঝাড়ুদার পদে চাকরি করে লাখ লাখ টাকার সম্পত্তি দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে রইচ বলেন, ‘আমার গ্রামে যে বাড়ি আছে, সেটা আমার বাবা তৈরি করেছেন।’ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এ কারণে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরে শ্বশুরের গুনে খুলল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ঝাড়ুদার রইচের কপাল

আপলোড টাইম : ০৭:৫৫:০৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

অনিয়ম-দুর্নীতি করে হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা
সমীকরণ প্রতিবেদক:
শ্বশুরের দৌলতে জীবননগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঝাড়ুদার হিসেবে যোগদান করেন রইচ। এতেই বদলে নিয়েছেন নিজের ভাগ্য। নিম্ন পদে চাকরি করেও জ্যামিতিক হারে বাড়িয়েছেন নিজের সম্পদ। করেছেন স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। ঝাড়ুদার চাকরিই যেন তার কাছে সোনার ডিম পাড়া হাঁস! জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রইচের খণ্ডকালীন ঝাড়ুদার থেকে লাখ লাখ টাকার মালিক হওয়ার রহস্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে তার অনিয়ম আর দুর্নীতির চিত্র।
জানা গেছে, জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের খন্ডকালীন ঝাড়ুদার পদে চাকরি করলেও দপ্তরের সব ফাইল নড়াচড়া করেন রইচ। বাম হাতের কাজ সম্পন্ন না হলে সেবাপ্রার্থীদের সাথে কথা বলেন না তিনি। টাকা না পেলে করেন খারাপ ব্যবহার। অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের প্রশ্রয়ে হয়ে উঠছেন আরও বেপরোয়া। সূত্র জানায়, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নাইট গার্ড আতিয়ার রহমানের মেয়ের সাথে বিবাহ করেন রইচ। এতেই খন্ডকালীন ঝাড়ুদার হিসেবে জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কাজের সুযোগ হয় তার। গড়ে তোলেন সিন্ডিকেট। আসেন কর্তাদের নজরে। এরপর দলিল লেখক সমিতির সাথে যুক্ত হয়ে দলিল রেজিস্ট্রেশনে অতিরিক্ত টাকা আদায়, অনিয়মের মাধ্যমে জমি রেজিস্ট্রি করাতে ভূমিকা রাখছেন রইচ সিন্ডিকেটে। তার দলে রয়েছে দলিল লেখক সমিতির কথিত নেতা, নকল নবিশ, নকলকারক। রয়েছেন সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কিছু সিনিয়র ব্যক্তি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কয়েকজন বলেন, অফিসের কর্তার কাছে রইচ সোনার ডিম পাড়া হাঁস। ফলে তার অপরাধগুলো ওপেন সিক্রেট। তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। তাঁরা জানিয়েছেন, রইচ জীবননগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঝাড়ুদারের চাকরি করেন। কিন্তু তাকে দেখে কেউ সেটা বলতে পারবে না। সে অফিস কোনো দিন পরিস্কার করে না। এখন রইচ এই অফিসের অফিসার বনে গেছেন। রইচকে ম্যানেজ করা না গেলে কাগজের ‘ক’ও মিলে না সেবা প্রার্থীদের। এমনকি প্রতিপক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সেবা প্রার্থীকে হয়রানি করেন। গ্রামের বাড়ি নতুনপাড়াতে গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল বাড়ি। ঝাড়ুদার পদে চাকরি করে লাখ লাখ টাকার সম্পত্তি দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে রইচ বলেন, ‘আমার গ্রামে যে বাড়ি আছে, সেটা আমার বাবা তৈরি করেছেন।’ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। এ কারণে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।