ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

জীবননগরে মেয়ের কণ্ঠ নকল করে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩২:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
  • / ২২ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:

জীবননগরের কয়া গ্রামের প্রবাসী আ.সালামের ২২ লাখ টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের মো. রাসেলের বিরুদ্ধে। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন সৌদি প্রবাসী আ.সালাম। টাকা ও মালামাল ফেরত পেতে ধর্ণা দিচ্ছেন থানা-পুলিশসহ বিভিন্ন নেতার দুয়ারে। এদিকে টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে ও পরিবারের লোকজনকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন আ.সালাম।

সূত্র জানায়, আ.সালাম সৌদি আরব থেকে ছুটিতে দেশে এসে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিয়ে করবেন বলে জানান রাসেলকে। এর সুযোগ নেয় রাসেল। তাকে বিয়ে করতে সহযোগিতা করবে বলে জীবননগর শহরের একটি মেয়ের ছবি কাটিং করে দেখান। আ.সালাম মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে রাসেল নিজের ফোনের ভয়েজ পরিবর্তন করে মেয়ের ভয়েজে তার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে রাসেল মেয়ের পরিবারের কথা বলে আ.সালামের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ, মোবাইল ও ল্যাপটপসহ অনেক মালামাল হাতিয়ে নেন। পরে ওই প্রবাসী জানতে পারেন মেয়েটির অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। রাসেল তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তবে রাসেল বিষয়টি অস্বীকার করেন। আ.সালাম টাকা ফেরত চাইলে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রাসেল। সেই মামলায় তিনি সাড়ে তিন মাস জেলে ছিলেন। জেল থেকে বাড়ি ফিরলে রাসেল স্থানীয় কিছু ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সহযোগিতায় আ.সালামের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় আরও একটি মামলা করেন।

কয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা তেতুল, মশিয়ার, আনার ও রিক্তাউল বলেন, ‘রাসেল প্রবাসী আ.সালামের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এটা আমরা জানি। এ ঘটনায় এলাকায় কয়েকবার বিচারও হয়েছে।’ আ.সালাম বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১৪ বছর প্রাবাসে আছি। ২০১৫ সালে রাসেলের সাথে পরিচয় হয়। আমি তার সাথে দেশে এসে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু এবং বিয়ের পরিকল্পনার কথা বলি। সে পরিকল্পনার কথা শুনে আমার স্বপ্নপূরণ করে দিবে বলে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নগদ ২২ লাখ টাকা, একটি আইফোন, ল্যাপটপ, ডায়মন্ডের নাকের ফুল হাতিয়ে নেয়। পরে আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। আমি টাকা ফেরত চাইলে সে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করেছেন। আমি এর ন্যায় বিচার প্রার্থণা করছি।’

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাসেল এলাকায় প্রতারক হিসেবে পরিচিত। তিনি ভারতের চোরাই ফোন পাচারের মূলহোতা। রাসেল কয়া গ্রামের দুটি মেয়ের সঙ্গে ভালোবাসার অভিনয় করে বিয়ে করেন। পরে তাদের গোপন ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় এক মেয়ের বাবা রাসেলের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় ধষর্ণের মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাসেল বলেন, ‘আ.সালাম আমার কাছে কোনো টাকা পাবে না। সে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। সে আমার নামে অভিযোগ দিয়েছিল, সে কারণে আমি তার বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছিলাম। কোর্ট তাকে শাস্তি দিয়েছে।’

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসাবুল ইসলাম মিলটন বলেন, ‘কয়া গ্রামের প্রবাসী আ.সালামের সঙ্গে ওই গ্রামের রাসেলের আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হয়েছে, এটা আমি জানি। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি।’ এ ব্যাপারে জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার বলেন, প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণার বিষয় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগরে মেয়ের কণ্ঠ নকল করে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা

আপলোড টাইম : ০৫:৩২:২২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩

জীবননগর অফিস:

জীবননগরের কয়া গ্রামের প্রবাসী আ.সালামের ২২ লাখ টাকা, মোবাইল ও ল্যাপটপ প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের মো. রাসেলের বিরুদ্ধে। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন সৌদি প্রবাসী আ.সালাম। টাকা ও মালামাল ফেরত পেতে ধর্ণা দিচ্ছেন থানা-পুলিশসহ বিভিন্ন নেতার দুয়ারে। এদিকে টাকা ফেরত চাওয়ায় তাকে ও পরিবারের লোকজনকে একের পর এক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন আ.সালাম।

সূত্র জানায়, আ.সালাম সৌদি আরব থেকে ছুটিতে দেশে এসে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বিয়ে করবেন বলে জানান রাসেলকে। এর সুযোগ নেয় রাসেল। তাকে বিয়ে করতে সহযোগিতা করবে বলে জীবননগর শহরের একটি মেয়ের ছবি কাটিং করে দেখান। আ.সালাম মেয়েটির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে রাসেল নিজের ফোনের ভয়েজ পরিবর্তন করে মেয়ের ভয়েজে তার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে রাসেল মেয়ের পরিবারের কথা বলে আ.সালামের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ, মোবাইল ও ল্যাপটপসহ অনেক মালামাল হাতিয়ে নেন। পরে ওই প্রবাসী জানতে পারেন মেয়েটির অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে। রাসেল তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তবে রাসেল বিষয়টি অস্বীকার করেন। আ.সালাম টাকা ফেরত চাইলে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন রাসেল। সেই মামলায় তিনি সাড়ে তিন মাস জেলে ছিলেন। জেল থেকে বাড়ি ফিরলে রাসেল স্থানীয় কিছু ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সহযোগিতায় আ.সালামের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় আরও একটি মামলা করেন।

কয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা তেতুল, মশিয়ার, আনার ও রিক্তাউল বলেন, ‘রাসেল প্রবাসী আ.সালামের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে এটা আমরা জানি। এ ঘটনায় এলাকায় কয়েকবার বিচারও হয়েছে।’ আ.সালাম বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ১৪ বছর প্রাবাসে আছি। ২০১৫ সালে রাসেলের সাথে পরিচয় হয়। আমি তার সাথে দেশে এসে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান চালু এবং বিয়ের পরিকল্পনার কথা বলি। সে পরিকল্পনার কথা শুনে আমার স্বপ্নপূরণ করে দিবে বলে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নগদ ২২ লাখ টাকা, একটি আইফোন, ল্যাপটপ, ডায়মন্ডের নাকের ফুল হাতিয়ে নেয়। পরে আমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। আমি টাকা ফেরত চাইলে সে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করেছেন। আমি এর ন্যায় বিচার প্রার্থণা করছি।’

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাসেল এলাকায় প্রতারক হিসেবে পরিচিত। তিনি ভারতের চোরাই ফোন পাচারের মূলহোতা। রাসেল কয়া গ্রামের দুটি মেয়ের সঙ্গে ভালোবাসার অভিনয় করে বিয়ে করেন। পরে তাদের গোপন ভিডিও ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করার চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় এক মেয়ের বাবা রাসেলের বিরুদ্ধে জীবননগর থানায় ধষর্ণের মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রাসেল বলেন, ‘আ.সালাম আমার কাছে কোনো টাকা পাবে না। সে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। সে আমার নামে অভিযোগ দিয়েছিল, সে কারণে আমি তার বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছিলাম। কোর্ট তাকে শাস্তি দিয়েছে।’

সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইসাবুল ইসলাম মিলটন বলেন, ‘কয়া গ্রামের প্রবাসী আ.সালামের সঙ্গে ওই গ্রামের রাসেলের আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হয়েছে, এটা আমি জানি। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি।’ এ ব্যাপারে জীবননগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার বলেন, প্রবাসীর সঙ্গে প্রতারণার বিষয় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।