ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪

জীবননগর করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১১:৩৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৩
  • / ৭৪ বার পড়া হয়েছে

জীবননগর অফিস:

জীবননগর করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের অন্তর্গত হাবিবপুর ও বেনীপুর গ্রামের মাঝামাঝি অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের ফ্লোর মোজাইককরণের জন্য ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসে বিদ্যালয়ের ফ্লোরগুলোর অর্ধেক মোজাইক আর অর্ধেক রং করে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যাললের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুইতলা বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটির নিচ ও উপর মিলে চারটি রুম রয়েছে। এর মধ্যে নিচতলার দুটি রুমের ফ্লোর মোজাইক করা হয়েছে। উপর তলার বাকি দুটি রুম শুধুমাত্র রং করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন সংস্কারের জন্য চুয়াডাঙ্গার হুমায়ন কবির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের একজন ঠিকাদার এই কাজটি পেয়েছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক ছাত্র অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের স্কুলের পুরতান ভবনটি রং করেছে অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু স্কুলের ৪টি রুমের মধ্যে দুটি রুমের ফ্লোর মোজাইক করা আর দুইটা এমনিতে রং করেছে। এটা খুব খারাপ লাগছে। ৪টি রুমই সংস্কার হলে ভালো হত।’

করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি সংষ্কারের জন্য ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। আমরা ম্যানেজিং কমিটির সকলকে সঙ্গে নিয়ে এবং শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিকাদারের সাথে কথা বলে বিদ্যালয়টির নিচ তলার দুটি রুম মোজাইক করা হয়। উপরের তলার বাকি দুটি রুম রং করা হয়েছে। এখানে কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি।’

করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আব্দুল মালেক মোল্লা বলেন, ‘সরকার বরাদ্দ দিয়েছে বিদ্যালয়টির ফ্লোর মোজাইক করার জন্য। সেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাদের কাউকে না জানিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অর্ধেক কাজ করেছে আর অর্ধেক কাজ না করে শুধুমাত্র রং করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে আমাদেরকে কিছুই জানাইনি। প্রধান শিক্ষক তার মতো করে কাজ করেছে, কাজ শেষে আমাকে বলছে সব রুমগুলো মোজাইক করলে ভালো হত।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের ফ্লোর মোজাইক করার জন্য আমি কাজ পেয়েছি। আমি নিচতলার দুটি রুমের ফ্লোর ও বারান্দার ফ্লোরে কাজ শেষ করেছি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপর তলার অন্য দুটি রুম মোজাইক না করে শুধু রং করে দেওয়ার জন্য বলেন। যেহেতু আমার বরাদ্দ সবগুলো ফ্লোর মোজাইক করার, সেখানে তো আমি রংয়ের কাজ করতে পারব না। তাই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে লিখিত নিয়ে অন্য দুটি রুমে রংয়ের খরচ নিয়ে রং করে দিয়েছি।’

জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কী কাজ হয়েছে, আর কবে কাজ হয়েছে, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছুই জানায়নি।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

জীবননগর করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ

আপলোড টাইম : ১১:৩৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৩

জীবননগর অফিস:

জীবননগর করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের অন্তর্গত হাবিবপুর ও বেনীপুর গ্রামের মাঝামাঝি অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি স্থানীয় শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে অভিযোগ উঠেছে, বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের ফ্লোর মোজাইককরণের জন্য ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দিলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের যোগসাজসে বিদ্যালয়ের ফ্লোরগুলোর অর্ধেক মোজাইক আর অর্ধেক রং করে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যাললের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুইতলা বিশিষ্ট পুরাতন ভবনটির নিচ ও উপর মিলে চারটি রুম রয়েছে। এর মধ্যে নিচতলার দুটি রুমের ফ্লোর মোজাইক করা হয়েছে। উপর তলার বাকি দুটি রুম শুধুমাত্র রং করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবন সংস্কারের জন্য চুয়াডাঙ্গার হুমায়ন কবির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের একজন ঠিকাদার এই কাজটি পেয়েছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক ছাত্র অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের স্কুলের পুরতান ভবনটি রং করেছে অনেক ভালো লাগছে। কিন্তু স্কুলের ৪টি রুমের মধ্যে দুটি রুমের ফ্লোর মোজাইক করা আর দুইটা এমনিতে রং করেছে। এটা খুব খারাপ লাগছে। ৪টি রুমই সংস্কার হলে ভালো হত।’

করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি সংষ্কারের জন্য ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ আসে। আমরা ম্যানেজিং কমিটির সকলকে সঙ্গে নিয়ে এবং শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিকাদারের সাথে কথা বলে বিদ্যালয়টির নিচ তলার দুটি রুম মোজাইক করা হয়। উপরের তলার বাকি দুটি রুম রং করা হয়েছে। এখানে কাজে কোনো অনিয়ম হয়নি।’

করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের  ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হাজী আব্দুল মালেক মোল্লা বলেন, ‘সরকার বরাদ্দ দিয়েছে বিদ্যালয়টির ফ্লোর মোজাইক করার জন্য। সেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আমাদের কাউকে না জানিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অর্ধেক কাজ করেছে আর অর্ধেক কাজ না করে শুধুমাত্র রং করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে আমাদেরকে কিছুই জানাইনি। প্রধান শিক্ষক তার মতো করে কাজ করেছে, কাজ শেষে আমাকে বলছে সব রুমগুলো মোজাইক করলে ভালো হত।’

এ বিষয়ে ঠিকাদার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়টির পুরাতন ভবনের ফ্লোর মোজাইক করার জন্য আমি কাজ পেয়েছি। আমি নিচতলার দুটি রুমের ফ্লোর ও বারান্দার ফ্লোরে কাজ শেষ করেছি। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপর তলার অন্য দুটি রুম মোজাইক না করে শুধু রং করে দেওয়ার জন্য বলেন। যেহেতু আমার বরাদ্দ সবগুলো ফ্লোর মোজাইক করার, সেখানে তো আমি রংয়ের কাজ করতে পারব না। তাই ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নিকট থেকে লিখিত নিয়ে অন্য দুটি রুমে রংয়ের খরচ নিয়ে রং করে দিয়েছি।’

জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘করতোয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কী কাজ হয়েছে, আর কবে কাজ হয়েছে, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমাকে কেউ কিছুই জানায়নি।’